এক হাজার ২১১ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে কর্মসংস্থান ব্যাংক by ওবায়দুল্লাহ রনি

প্রতিষ্ঠা থেকে এযাবৎ এক হাজার ২১১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে কর্মসংস্থান ব্যাংক। ২ লাখ ২২ হাজার ৬৭০ জন শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত বেকারকে দেওয়া হয়েছে এ টাকা। জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য মতে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিতরণ করা ঋণের মাধ্যমে ৮ লাখ চার হাজার বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে। বিতরণকৃত এসব ঋণের মধ্যে বিভাগ ভিত্তিতে সবচেয়ে কম ঋণ বিতরণ করা হয়েছে বরিশাল বিভাগে। আর বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিভাগে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।


সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিতরণকৃত এসব ঋণের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৬৫ হাজার ৪০৮ জন বেকারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে ৩৬২ কোটি ৪২ লাখ টাকা, খুলনা বিভাগে ৩৪ হাজার ৮৪৪ জনের মাঝে ১৮৩ কোটি ২১ লাখ টাকা, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৪ হাজার ৬১২ জনকে দেওয়া হয়েছে ১৮৯ কোটি ৯ লাখ টাকা, রংপুর বিভাগের ৩১ হাজার ৯৮৭ জন বেকারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে ১৬১ কোটি টাকার ঋণ, রাজশাহী বিভাগের ২৬ হাজার ২২৩ জনের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে ১৬২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, সিলেট বিভাগের ১৫ হাজার ১৫৭ জন বেকারকে দেওয়া হয়েছে ৭৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং বরিশাল বিভাগের ১৪ হাজার ৪৩৯ জন বেকারকে দেওয়া হয়েছে ৭৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকার ঋণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও কর্মসংস্থান ব্যাংকের পরিচালক এএইচএম কায়-খসরু গতকাল সমকালকে বলেন, কর্মসংস্থান ব্যাংক কাজের পরিধি বাড়াতে চলতি বছর বেশ কিছু শাখা খুলেছে। এতে করে নতুন শাখায় চাকরি ও নতুন নতুন এলাকায় ঋণ পাওয়ার মাধ্যমে দু'ভাবে মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। ব্যাংকটিতে বর্তমানে ১০ শতাংশের কম পরিমাণ খেলাপি ঋণ রয়েছে। নতুনভাবে খেলাপি হওয়ার হার অনেক কম বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, কর্মসংস্থান ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে বেকার সমস্যা দূর করার চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার বেকার যুবকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ব্যাংকের তথ্য মতে, ১৯৯৮ সালে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা হলেও ঋণ কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৯ সালের শেষের দিকে। ১৪৫টি উপজেলায় ব্যাংকটির বর্তমানে ২০৫টি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমান সরকারের মেয়াদে খোলা হয়েছে ৮৩টি শাখা। প্রতিটি শাখায় গড়ে ৫০০ জন ঋণ গ্রহীতা আছেন। সব সময়ই অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয় আরও ১০০ জনকে। বিতরণকৃত ঋণ আদায় করে ওই অপেক্ষমাণদের মাঝে তা আবার বিতরণ করা হয়। এছাড়া শাখা নেই এমন ১৭৪টি এলাকায় এসএমই বুথের মাধ্যমে অনেক বেকার যুবককে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ব্যাংকটির মাধ্যমে মূলত কৃষিভিত্তিক শিল্প, কম্পিউটার, নার্সারি, ফার্মেসি, হাঁস-মুরগি পালন, দুগ্ধ ও মৎস্য খামার, গরু-ছাগল পালন, হস্ত ও কুটির শিল্পসহ সরকার অনুমোদিত যে কোনো খাতের জন্য গ্রাহকরা ঋণ নিতে পারেন। এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের জামানতের প্রয়োজন হয় না। জামানত দিয়ে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ লাখ এবং গ্রুপ ভিত্তিতে ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ২ বছর নির্ধারণ করা থাকলেও প্রকল্পের প্রকৃতি, আকার, সম্ভাব্য মুনাফা ও ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা বিবেচনা করে ঋণের মেয়াদ ৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.