ক্যাম্প জীবনের অবসান নেপালের মাওবাদী গেরিলাদের
নতুন জীবন শুরু হচ্ছে নেপালের সাবেক মাওবাদী বিদ্রোহীদের। গতকাল শনিবার নিয়মিত সেনাবাহিনীতে যোগদান বা পুনর্বাসন শিবির ছেড়ে ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন প্রায় ১৯ হাজার মাওবাদী যোদ্ধা। ২০০৬ সালে মাওবাদী বিদ্রোহের অবসানের পর থেকে তারা এসব শিবিরে বসবাস করে আসছিলেন।মাওবাদী দল ও অপর তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১ নভেম্বর স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তির পর এসব সাবেক মাওবাদী যোদ্ধাকে স্বাভাবিক জীবনে
ফিরিয়ে আনার ঐতিহাসিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার প্রধান পর্যবেক্ষক ও সাবেক গেরিলা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল বালানন্দ শর্মা বলেন, গেরিলাদের জীবনে এটা খুবই জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ সময়। এটা চ্যালেঞ্জেরও বটে। তিনি ১৯ হাজার সাবেক বিদ্রোহীর অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছেন। কাঠমান্ডুর ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের চিতওয়ান এলাকায় একটি পাহাড়ে অবস্থিত শক্তিখের সেনানিবাসের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা যোদ্ধাদের পুনর্বাসন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন শর্মা। নীল জ্যাকেট পরিহিত সেনা পর্যবেক্ষকরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে বলেও তিনি আত্মবিশ্বাসী।
চুক্তির অধীনে সাড়ে ৬ হাজার যোদ্ধাকে নেপাল সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ ছাড়া বাকিদের অবসর ভাতা হিসেবে ৫ থেকে ৮ লাখ রুপি দেওয়া হবে এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণসহ পুনর্বাসন প্যাকেজের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
শর্মা জানান, সাবেক বিদ্রোহীদের মধ্যে যারা নগদ অর্থ নিতে চান, তাদের দুই বছরে দুই কিস্তিতে তা পরিশোধ করা হবে।
আর যারা প্রশিক্ষণ প্যাকেজ নিতে চান, তাদের ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে পাঠানো হবে। তিনি বলেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রস্তাব দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, পুনরেকত্রীকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ১০ দিনের বেশি লাগতে পারে এবং মাওবাদীদের মধ্যে কাদের অবসরভাতা ও কাদের পুনর্বাসন প্যাকেজের আওতায় নেওয়া হবে সে ব্যাপারে মাওবাদী নেতৃবৃন্দ সমাধান খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত যোদ্ধাদের ক্যাম্পে থাকতে হবে।
এ ছাড়া বাকি কয়েক হাজার যোদ্ধা কয়েক দিনের মধ্যে পুনর্বাসন ক্যাম্প ছেড়ে যাবেন। নেপালের সাতটি সেনানিবাসে এখনও ১৯ সহস্রাধিক সাবেক মাওবাদী যোদ্ধা রয়েছেন। মাওবাদীদের প্রায় এক দশক ধরে যুদ্ধে কমপক্ষে ১৩ হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটে।
No comments