সংস্কারের অগ্রগতি দেখতে মিয়ানমার যাচ্ছেন হিলারি-অবরোধ প্রত্যাহার হচ্ছে না

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন আগামী মাসে মিয়ানমার সফরে যাচ্ছেন। গত ৫০ বছরের মধ্যে এটিই হবে মিয়ানমারে কোনো মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গত শুক্রবার হিলারির সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে সফর করলেও মিয়ানমারের ওপর থেকে আপাতত অবরোধ প্রত্যাহারের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন হিলারি।


ইন্দোনেশিয়ায় আসিয়ান সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেছেন, আগামী মাসে হিলারিকে মিয়ানমার সফরে পাঠাবেন তিনি। মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সংস্কারকে উৎসাহিত করতেই তাঁকে পাঠানো হবে। মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং তাঁর দলের নিবন্ধনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর হিলারির সফরের ঘোষণা দেওয়া হলো।
ওবামা বলেন, 'বহু বছর অন্ধকারে থাকার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে (মিয়ানমারে) আমরা বেশ বড় ধরনের অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি।' সম্প্রতি বহু রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেয় মিয়ানমার। এ ছাড়াও নির্বাচনী আইনের ব্যাপক সংস্কার এবং একটি বিতর্কিত বাঁধের নির্মাণকাজও বন্ধ করে দেয় তারা। ওবামা বলেন, দেশটিকে গণতন্ত্রের পথে উত্তোরণে যুক্তরাষ্ট্র ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবে কি না হিলারির সফর থেকে তা অনুধাবনের চেষ্টা চালানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্কের ব্যাপারে সু চির সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলে জানান ওবামা।
আগামী ১-২ ডিসেম্বর মিয়ানমার সফর করবেন হিলারি। এ প্রসঙ্গে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ফঙ্ নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিলারি বলেন, 'সফর করলেও আমরা এখনই অবরোধ তুলে নিচ্ছি না। আকস্মিক কোনো পরিবর্তন আনব না আমরা। আরো কিছু তথ্য পেতে চাই আমরা। আমার সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য এটি।' মিয়ানমারের গণতন্ত্রের পথে উত্তোরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁদের সব রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। জাতিগত সহিংসতা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে আরো সহজ ও স্বচ্ছ করার প্রতিও জোর দেন তিনি। সফরকালে সু চি, প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি, সুশীল সমাজ, বিরোধীদলীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন হিলারি।
হিলারির সফরকে স্বাগত জানিয়েছে মিয়ানমারের সরকার ও সু চির সমর্থকরা। প্রেসিডেন্ট সেইনের প্রধান রাজনৈতিক উপদেষ্টা কো কোন হেইং বলেন, 'এটা খুবই ভালো লক্ষণ। একে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ানমার নীতিতে ইতিবাচক মোড় হিসেবেই দেখছি আমরা।'
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এক ধাপ এগিয়েছে মিয়ানমার। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট_আসিয়ানের ২০১৪ সালের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছে তারা।
জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনও শিগগিরই মিয়ানমার সফরের ঘোষণা দিয়েছেন। ইন্দোনেশিয়ায় প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। বান কি মুন বলেন, 'তিনি আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমি তা গ্রহণ করেছি।' তিনি সেইনকে দ্রুত রাজনৈতিক সংস্কার আনার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। সূত্র : এএফপি, গার্ডিয়ান, পিটিআই।

No comments

Powered by Blogger.