পবিত্র কোরআনের আলো-অত্যাচারী মিসর সম্রাটের বিরুদ্ধে মুসা (আ.)-এর বিরোধ ও সংগ্রামের কাহিনী
১০১. তিলকাল ক্বুরা নাক্বুস্সু আ'লাইকা মিন আম্বা-য়িহা; ওয়ালাক্বাদ জা-আতহুম রুছুলুহুম্ বিলবায়্যিনাতি; ফামা কা-নূ লিইউ'মিনূ বিমা কায্যাবূ মিন ক্বাবলু; কাযা-লিকা ইয়াত্ববাউ'ল্লা-হু আ'লা ক্বুলূবিল কা-ফিরীন।১০২. ওয়া মা ওয়াজাদ্না লিআকছারিহিম্ মিন্ আ'হদিন ওয়া ইন ওয়াজাদ্না আক্ছারাহুম লাফা-ছিক্বীন।১০৩. ছুম্মা বাআ'ছনা মিম্ বা'দিহিম্ মূছা বিআয়া-তিনা ইলা ফিরআ'ওনা ওয়া মালা-য়িহী ফাযালামূ বিহা; ফানযুর্ কাইফা কা-না আ'-কি্ববাতুল মুফছিদীন।
১০৪. ওয়া ক্বা-লা মূছা ইয়া-ফিরআ'ওনু ইন্নী রাসূলুম্ মির্ রাবি্বল আ'-লামীন।[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১০১-১০৪]
অনুবাদ : ১০১. এ হচ্ছে সেই সব জনপদ, যার ঘটনাবলি আপনাকে শোনাচ্ছি। বস্তুত তাদের কাছে তাদের বংশোদ্ভূত রাসুলরা স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু তারা ইমান আনতে প্রস্তুত হয়নি; বরং তাদের পূর্ববর্তীরা যেমন প্রত্যাখ্যান করে আসছিল, তেমনই করল। যারা অবাধ্যতায় লিপ্ত থাকে, তাদের অন্তরে আল্লাহ তায়ালা এভাবেই মোহর মেরে দেন।
১০২. আমি তাদের অধিকাংশের ভেতরেই অঙ্গীকার রক্ষার মানসিকতা দেখতে পাইনি। বরং আমি এদের অনেককেই উচ্ছৃঙ্খলতা সৃষ্টিকারী হিসেবে পেয়েছি।
১০৩. অতঃপর আমি এদের পর মুসাকে আমার নির্দেশাবলিসহ ফেরাউন ও তার পরিষদবর্গের কাছে পাঠালাম। এরাও সেই নির্দেশাবলির প্রতি অবিচারই করল। অতএব দেখ, উচ্ছৃঙ্খলতা সৃষ্টিকারীদের পরিণতি কী হয়েছে।
১০৪. মুসা বলেছিলেন, হে ফেরাউন, নিশ্চয়ই আমি রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে নবী হয়ে এসেছি।
ব্যাখ্যা : ১০১-১০২ নম্বর আয়াতে আগের প্রসঙ্গের ধারাবাহিকতায় প্রাগৈতিহাসিক যুগের নবীদের এবং তাদের সম্প্রদায়ের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। সে যুগের অহংকারী গোত্রপতিদের অধিকাংশই আল্লাহ ও তাঁর নবীদের পথ অনুসরণ করার চেয়ে অবাধ্যই হয়েছে বেশি।
১০৩ থেকে ১৬২ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মুসা (আ.)-এর জীবনের ঘটনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। এতে ফেরাউনের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন, রাজশক্তির সঙ্গে বিরোধ মোকাবিলা, ফেরাউনের নিমজ্জন ও মুসা (আ.)-এর প্রতি তাওরাত নাজিলের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। মুসা (আ.) ছিলেন ইয়াকুব (আ.)-এর চতুর্থ অধস্তন পুরুষ। সুরা ইউসুফের বর্ণনায় আছে, ইউসুফ (আ.) যখন মিসরের অর্থমন্ত্রী নিযুক্ত হন, তখন তিনি তাঁর মা-বাবা ও ভাইদের ফিলিস্তিন থেকে মিসরে নিয়ে এসেছিলেন। এভাবেই ইয়াকুব (আ.)-এর বংশধররা, যারা বনিইসরাইল নামে পরিচিত, তারা মিসরের বাসিন্দা হয়ে যায়। মিসরের সম্রাট তাদের জন্য নগরের উপকণ্ঠে একটি নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করে দিয়েছিলেন। হজরত ইউসুফ (আ.)-এর মৃত্যুর পর মিসরের সম্রাটদের কাছে বনিইসরাইল মর্যাদা হারাতে থাকে। মিসরের সম্রাটদের উপাধি ছিল 'ফারাও' বা ফেরাউন। একপর্যায়ে ফারাওরা ইসরায়েলিদের তাদের দাস বানিয়ে ফেলে। এদের মধ্যকার এক ফারাও, যার নাম ছিল 'মিনিফতাহ', অত্যন্ত অত্যাচারী, উদ্ধত ও খোদাদ্রোহী হয়ে ওঠে সে। এহেন পরিস্থিতিতে আল্লাহ তায়ালা হজরত মুসা (আ.)-কে মিসরে নবী করে পাঠান।
এই আয়াতগুলোতে নবী মুসা (আ.)-এর জন্ম, আল্লাহর গায়েবি মদদে বেঁচে যাওয়া, ফেরাউনের সঙ্গে বিরোধ, মাদায়েন অভিমুখে হিজরত, অতঃপর নবুয়ত লাভ ইত্যাদি ঘটনার কিছু বিবরণ এসেছে এবং সুরা তোয়াহা ও সুরা কাসাসে আরো কিছু বিবরণ আসবে। এ ছাড়া আরো ৩৫টি সুরায় এসব ঘটনার বিভিন্ন দিক বর্ণিত হয়েছে। এই সুরায় বিশেষ করে ফেরাউনের সঙ্গে তাঁর যেসব ঘটনা ঘটেছিল, সেগুলোই বর্ণিত হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১০১. এ হচ্ছে সেই সব জনপদ, যার ঘটনাবলি আপনাকে শোনাচ্ছি। বস্তুত তাদের কাছে তাদের বংশোদ্ভূত রাসুলরা স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু তারা ইমান আনতে প্রস্তুত হয়নি; বরং তাদের পূর্ববর্তীরা যেমন প্রত্যাখ্যান করে আসছিল, তেমনই করল। যারা অবাধ্যতায় লিপ্ত থাকে, তাদের অন্তরে আল্লাহ তায়ালা এভাবেই মোহর মেরে দেন।
১০২. আমি তাদের অধিকাংশের ভেতরেই অঙ্গীকার রক্ষার মানসিকতা দেখতে পাইনি। বরং আমি এদের অনেককেই উচ্ছৃঙ্খলতা সৃষ্টিকারী হিসেবে পেয়েছি।
১০৩. অতঃপর আমি এদের পর মুসাকে আমার নির্দেশাবলিসহ ফেরাউন ও তার পরিষদবর্গের কাছে পাঠালাম। এরাও সেই নির্দেশাবলির প্রতি অবিচারই করল। অতএব দেখ, উচ্ছৃঙ্খলতা সৃষ্টিকারীদের পরিণতি কী হয়েছে।
১০৪. মুসা বলেছিলেন, হে ফেরাউন, নিশ্চয়ই আমি রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে নবী হয়ে এসেছি।
ব্যাখ্যা : ১০১-১০২ নম্বর আয়াতে আগের প্রসঙ্গের ধারাবাহিকতায় প্রাগৈতিহাসিক যুগের নবীদের এবং তাদের সম্প্রদায়ের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। সে যুগের অহংকারী গোত্রপতিদের অধিকাংশই আল্লাহ ও তাঁর নবীদের পথ অনুসরণ করার চেয়ে অবাধ্যই হয়েছে বেশি।
১০৩ থেকে ১৬২ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মুসা (আ.)-এর জীবনের ঘটনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। এতে ফেরাউনের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন, রাজশক্তির সঙ্গে বিরোধ মোকাবিলা, ফেরাউনের নিমজ্জন ও মুসা (আ.)-এর প্রতি তাওরাত নাজিলের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। মুসা (আ.) ছিলেন ইয়াকুব (আ.)-এর চতুর্থ অধস্তন পুরুষ। সুরা ইউসুফের বর্ণনায় আছে, ইউসুফ (আ.) যখন মিসরের অর্থমন্ত্রী নিযুক্ত হন, তখন তিনি তাঁর মা-বাবা ও ভাইদের ফিলিস্তিন থেকে মিসরে নিয়ে এসেছিলেন। এভাবেই ইয়াকুব (আ.)-এর বংশধররা, যারা বনিইসরাইল নামে পরিচিত, তারা মিসরের বাসিন্দা হয়ে যায়। মিসরের সম্রাট তাদের জন্য নগরের উপকণ্ঠে একটি নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করে দিয়েছিলেন। হজরত ইউসুফ (আ.)-এর মৃত্যুর পর মিসরের সম্রাটদের কাছে বনিইসরাইল মর্যাদা হারাতে থাকে। মিসরের সম্রাটদের উপাধি ছিল 'ফারাও' বা ফেরাউন। একপর্যায়ে ফারাওরা ইসরায়েলিদের তাদের দাস বানিয়ে ফেলে। এদের মধ্যকার এক ফারাও, যার নাম ছিল 'মিনিফতাহ', অত্যন্ত অত্যাচারী, উদ্ধত ও খোদাদ্রোহী হয়ে ওঠে সে। এহেন পরিস্থিতিতে আল্লাহ তায়ালা হজরত মুসা (আ.)-কে মিসরে নবী করে পাঠান।
এই আয়াতগুলোতে নবী মুসা (আ.)-এর জন্ম, আল্লাহর গায়েবি মদদে বেঁচে যাওয়া, ফেরাউনের সঙ্গে বিরোধ, মাদায়েন অভিমুখে হিজরত, অতঃপর নবুয়ত লাভ ইত্যাদি ঘটনার কিছু বিবরণ এসেছে এবং সুরা তোয়াহা ও সুরা কাসাসে আরো কিছু বিবরণ আসবে। এ ছাড়া আরো ৩৫টি সুরায় এসব ঘটনার বিভিন্ন দিক বর্ণিত হয়েছে। এই সুরায় বিশেষ করে ফেরাউনের সঙ্গে তাঁর যেসব ঘটনা ঘটেছিল, সেগুলোই বর্ণিত হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments