২০০০ গোলের চূড়ায় ইংল্যান্ড
গোলটা কার? ইংল্যান্ডের ফরোয়ার্ড গ্যারেথ ব্যারি নাকি সুইডেনের দানিয়েল মায়েস্তোরোভিচের? ব্যারির শট জালে ঢোকার আগে লেগেছিল মায়েস্তোরোভিচের গায়ে। তাই গত সপ্তাহে দুই দলের প্রীতি ম্যাচে গোলটিকে মায়েস্তোরোভিচের অর্থাৎ আত্মঘাতী হিসেবেই দিয়েছিলেন রেফারি। ২২ মিনিটের এই গোলে ইংল্যান্ড ১৯৬৮ সালের পর প্রথমবারের মতো সুইডেনকে হারালেও মন খারাপ ছিল ব্যারির।
কারণ, সেটাই যে ইংল্যান্ডের ২০০০তম আন্তর্জাতিক গোল! ঐতিহাসিক গোলটা তাঁর শটে হলেও এর কৃতিত্ব পাবেন না_এটা কারই বা ভালো লাগে? শেষ পর্যন্ত অবশ্য ভালো লাগার উপলক্ষ পেয়েছেন ব্যারি, কেননা বলের গতিপথ বিশ্লেষণ করে রেফারি পরে গোলটি দিয়েছেন তাঁকেই। তাই ২০০০তম গোলের বিরল রেকর্ডে খোদাই থাকবে এখন ম্যানসিটির এই মিডফিল্ডারের নাম।
প্রথম দল হিসেবে ১৮৭২ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড। ১৩৯ বছর পর ৯০২তম ম্যাচে প্রথম দল হিসেবে ২০০০তম আন্তর্জাতিক গোলও করল তারা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯২০টি গোল ব্রাজিলের। সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ৮৮৫ ম্যাচে করেছে গোলগুলো। সে তুলনায় মাত্র ১৭ ম্যাচ বেশি খেলে ইংল্যান্ডের ২০০০ গোল অবশ্যই কৃতিত্বের। তারা অনেক এগিয়ে আর্জেন্টিনার চেয়েও। সর্বোচ্চ ৯০৩ ম্যাচে আর্জেন্টিনার গোল ১৭০২টি। আর এক ম্যাচ পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ড এরই মধ্যে তাদের চেয়ে প্রায় ৩০০ গোল বেশি করেছে। এর পরও রক্ষণাত্মক আর একঘেয়ে হিট অ্যান্ড রান ফুটবলের সমালোচনা সইতে হয় ইংলিশদের। বঞ্চিত করেছে ভাগ্যদেবীও! নইলে কেন কেবল ১৯৬৬ সালের একটা বিশ্বকাপই থাকবে তাদের শোকেসে?
প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচটা গোলশূন্য ড্র করেছিল ইংল্যান্ড। ১৮৭৩ সালের ৮ মার্চ সেই স্কটল্যান্ডের সঙ্গেই পরের ম্যাচটা তারা জেতে ৪-২ গোলে। ৪ গোলের প্রথমটি এসেছিল উইলিয়াম কেনিয়ন স্ল্যানির পা থেকে। ইতিহাস গড়ে কোথায় নিজেকে অনন্য উচ্চতায় তুলে নিয়ে যাবেন তা নয়, ওই এক ম্যাচ খেলেই আন্তর্জাতিক ফুটবলের পাট চুকিয়ে ফেলেন উইলিয়াম। কারণ, তখন তিনি ব্যস্ত ক্রিকেট নিয়ে!
কেন্টের হয়ে ক্রিকেট খেলতেন উইলিয়াম কোবোল্ডও। তবে ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের হয়েও খেলেছেন ৯ ম্যাচ। গোল করেছেন ৬টি। সবচেয়ে স্মরণীয় অবশ্যই ১৮৮৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকে প্রথম লক্ষ্যভেদ করাটা। সেটা ছিল ইংল্যান্ডের ৫০তম গোল। ৭-০ গোলে জেতা ম্যাচটিতে কোবোল্ড লক্ষ্যভেদ করেছিলেন দুইবার।
শততম গোলটি আসে ১৮৮৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ওয়েলসের বিপক্ষে, অর্থাৎ প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার ১৬ বছর পর। নিজের অভিষেকে ঐতিহাসিক সেই গোলটি করেছিলেন জর্জ উডহল। ওয়েলসের বিপক্ষে ৫-১ ব্যবধানে জেতা ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডের শততম গোলটি উডহল করেছিলেন ৭১ মিনিটে।
১৯৩১ সালে ওয়েস্ট ব্রোমউইচের হয়ে এফএ কাপ জেতা জো কার্টার জাতীয় দলে খেলেছেন মাত্র চার ম্যাচ। সংক্ষিপ্ত এই ক্যারিয়ারে করা ৩ গোলের একটি ছিল আবার ইংল্যান্ডের ৫০০তম। ১৯২৯ সালের ১১ মে ব্রাসেলসে বেলজিয়ামের বিপক্ষে কার্টারের লক্ষ্যভেদেই ৫০০ গোলের মাইলফলকে নাম লেখায় ইংল্যান্ড। ম্যাচটি তারা স্মরণীয়ও করে রাখে ৫-১ গোলের জয়ে।
১ থেকে ৫০০ গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৫৭ বছর। পরের ৫০০ গোলের জন্য প্রতীক্ষার প্রহরটা এত দীর্ঘ ছিল না। ৩১ বছরেই ইংলিশ ফুটবলে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ১৯৬০ সালের ২৩ নভেম্বর ওয়েলসের বিপক্ষে ম্যাচটিতে খেলেছিলেন ববি চার্লটন, ববি স্মিথ, জনি হেইন্সের মতো খেলোয়াড়রা। ৬৫ হাজার দর্শকের সামনে ৫-১ গোলে জেতা ম্যাচটির সবটুকু আলোই কেড়ে নেন অবশ্য জিমি গ্রিভস। ইংল্যান্ডের ১০০০তম গোলটা আসে তাঁর পা থেকে। ওই ১ গোল করেই অবশ্য হারিয়ে যাননি গ্রিভস। অবসর নিয়েছিলেন ৫৭ ম্যাচে ৪৪ গোল করে, যা ইংলিশ ফুটবল ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলের কীর্তি। ইংলিশ ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছয়টি হ্যাটট্রিকও তাঁরই।
গোল করায় গ্রিভসের সামনে কেবল ববি চার্লটন (৪৯) ও গ্যারি লিনেকার (৪৮)। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে চোট পেয়ে ছিটকে না পড়লে অবশ্য চার্লটনকে ছাড়িয়েও যেতে পারতেন গ্রিভস। সেই আসরে ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচে চোট পাওয়ার পর গ্রিভসের বদলে নেওয়া হয় জিওফ হার্স্টকে। সেই হার্স্টের একমাত্র গোলে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারানোর পর ইংল্যান্ড ফাইনালেও পশ্চিম জার্মানিকে ৪-২ ব্যবধানে হারায় তাঁর হ্যাটট্রিকে! এরই নাম ভাগ্য। ফাইনালে হার্স্টের ১ গোল আবার বিতর্কিত হয়ে আছে ফুটবল ইতিহাসেই। ২-২-এ সমতার পর অতিরিক্ত সময়ে হার্স্টের শট ফিরে এসেছিল খুব সম্ভবত গোল লাইনের ভেতরে পড়ে। রেফারি নিশ্চিত না হওয়ায় আলোচনা করেন সহকারী রেফারির সঙ্গে। এর পরও গোলটা দেওয়া হয় ইংল্যান্ডের পক্ষে। ইংলিশদের ২০০০ গোলের মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত এটিই।
১৯৮৬ সালে ১৫০০তম গোলটা আসে ট্রেভর স্টিভেনের পা থেকে। কায়রোয় মিসরের বিপক্ষে ৪-০ গোলে জেতা ম্যাচটিতে এভারটনের এ উইঙ্গারের প্রথম গোলটি ছিল ইংল্যান্ডের ১৫০০তম। ১০০০ থেকে ১৫০০-তে পেঁৗছতে সময় লাগে ২৬ বছর। আর ১৫০০ থেকে ২০০০-এ ইংল্যান্ড পেঁৗছাল ২৫ বছরে। বুঝতেই পারছেন সেই ১০০ থেকে ২০০০ গোলের প্রতিটি পর্যায়ে কত দ্রুত ছিল তারা। কেবল হিট অ্যান্ড রান ফুটবলে কি এটা সম্ভব?
মাইলফলকগুলো
যাদের বিপক্ষে বেশি গোল
প্রথম দল হিসেবে ১৮৭২ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড। ১৩৯ বছর পর ৯০২তম ম্যাচে প্রথম দল হিসেবে ২০০০তম আন্তর্জাতিক গোলও করল তারা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯২০টি গোল ব্রাজিলের। সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ৮৮৫ ম্যাচে করেছে গোলগুলো। সে তুলনায় মাত্র ১৭ ম্যাচ বেশি খেলে ইংল্যান্ডের ২০০০ গোল অবশ্যই কৃতিত্বের। তারা অনেক এগিয়ে আর্জেন্টিনার চেয়েও। সর্বোচ্চ ৯০৩ ম্যাচে আর্জেন্টিনার গোল ১৭০২টি। আর এক ম্যাচ পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ড এরই মধ্যে তাদের চেয়ে প্রায় ৩০০ গোল বেশি করেছে। এর পরও রক্ষণাত্মক আর একঘেয়ে হিট অ্যান্ড রান ফুটবলের সমালোচনা সইতে হয় ইংলিশদের। বঞ্চিত করেছে ভাগ্যদেবীও! নইলে কেন কেবল ১৯৬৬ সালের একটা বিশ্বকাপই থাকবে তাদের শোকেসে?
প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচটা গোলশূন্য ড্র করেছিল ইংল্যান্ড। ১৮৭৩ সালের ৮ মার্চ সেই স্কটল্যান্ডের সঙ্গেই পরের ম্যাচটা তারা জেতে ৪-২ গোলে। ৪ গোলের প্রথমটি এসেছিল উইলিয়াম কেনিয়ন স্ল্যানির পা থেকে। ইতিহাস গড়ে কোথায় নিজেকে অনন্য উচ্চতায় তুলে নিয়ে যাবেন তা নয়, ওই এক ম্যাচ খেলেই আন্তর্জাতিক ফুটবলের পাট চুকিয়ে ফেলেন উইলিয়াম। কারণ, তখন তিনি ব্যস্ত ক্রিকেট নিয়ে!
কেন্টের হয়ে ক্রিকেট খেলতেন উইলিয়াম কোবোল্ডও। তবে ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের হয়েও খেলেছেন ৯ ম্যাচ। গোল করেছেন ৬টি। সবচেয়ে স্মরণীয় অবশ্যই ১৮৮৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকে প্রথম লক্ষ্যভেদ করাটা। সেটা ছিল ইংল্যান্ডের ৫০তম গোল। ৭-০ গোলে জেতা ম্যাচটিতে কোবোল্ড লক্ষ্যভেদ করেছিলেন দুইবার।
শততম গোলটি আসে ১৮৮৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ওয়েলসের বিপক্ষে, অর্থাৎ প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার ১৬ বছর পর। নিজের অভিষেকে ঐতিহাসিক সেই গোলটি করেছিলেন জর্জ উডহল। ওয়েলসের বিপক্ষে ৫-১ ব্যবধানে জেতা ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডের শততম গোলটি উডহল করেছিলেন ৭১ মিনিটে।
১৯৩১ সালে ওয়েস্ট ব্রোমউইচের হয়ে এফএ কাপ জেতা জো কার্টার জাতীয় দলে খেলেছেন মাত্র চার ম্যাচ। সংক্ষিপ্ত এই ক্যারিয়ারে করা ৩ গোলের একটি ছিল আবার ইংল্যান্ডের ৫০০তম। ১৯২৯ সালের ১১ মে ব্রাসেলসে বেলজিয়ামের বিপক্ষে কার্টারের লক্ষ্যভেদেই ৫০০ গোলের মাইলফলকে নাম লেখায় ইংল্যান্ড। ম্যাচটি তারা স্মরণীয়ও করে রাখে ৫-১ গোলের জয়ে।
১ থেকে ৫০০ গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৫৭ বছর। পরের ৫০০ গোলের জন্য প্রতীক্ষার প্রহরটা এত দীর্ঘ ছিল না। ৩১ বছরেই ইংলিশ ফুটবলে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ১৯৬০ সালের ২৩ নভেম্বর ওয়েলসের বিপক্ষে ম্যাচটিতে খেলেছিলেন ববি চার্লটন, ববি স্মিথ, জনি হেইন্সের মতো খেলোয়াড়রা। ৬৫ হাজার দর্শকের সামনে ৫-১ গোলে জেতা ম্যাচটির সবটুকু আলোই কেড়ে নেন অবশ্য জিমি গ্রিভস। ইংল্যান্ডের ১০০০তম গোলটা আসে তাঁর পা থেকে। ওই ১ গোল করেই অবশ্য হারিয়ে যাননি গ্রিভস। অবসর নিয়েছিলেন ৫৭ ম্যাচে ৪৪ গোল করে, যা ইংলিশ ফুটবল ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলের কীর্তি। ইংলিশ ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছয়টি হ্যাটট্রিকও তাঁরই।
গোল করায় গ্রিভসের সামনে কেবল ববি চার্লটন (৪৯) ও গ্যারি লিনেকার (৪৮)। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে চোট পেয়ে ছিটকে না পড়লে অবশ্য চার্লটনকে ছাড়িয়েও যেতে পারতেন গ্রিভস। সেই আসরে ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচে চোট পাওয়ার পর গ্রিভসের বদলে নেওয়া হয় জিওফ হার্স্টকে। সেই হার্স্টের একমাত্র গোলে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারানোর পর ইংল্যান্ড ফাইনালেও পশ্চিম জার্মানিকে ৪-২ ব্যবধানে হারায় তাঁর হ্যাটট্রিকে! এরই নাম ভাগ্য। ফাইনালে হার্স্টের ১ গোল আবার বিতর্কিত হয়ে আছে ফুটবল ইতিহাসেই। ২-২-এ সমতার পর অতিরিক্ত সময়ে হার্স্টের শট ফিরে এসেছিল খুব সম্ভবত গোল লাইনের ভেতরে পড়ে। রেফারি নিশ্চিত না হওয়ায় আলোচনা করেন সহকারী রেফারির সঙ্গে। এর পরও গোলটা দেওয়া হয় ইংল্যান্ডের পক্ষে। ইংলিশদের ২০০০ গোলের মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত এটিই।
১৯৮৬ সালে ১৫০০তম গোলটা আসে ট্রেভর স্টিভেনের পা থেকে। কায়রোয় মিসরের বিপক্ষে ৪-০ গোলে জেতা ম্যাচটিতে এভারটনের এ উইঙ্গারের প্রথম গোলটি ছিল ইংল্যান্ডের ১৫০০তম। ১০০০ থেকে ১৫০০-তে পেঁৗছতে সময় লাগে ২৬ বছর। আর ১৫০০ থেকে ২০০০-এ ইংল্যান্ড পেঁৗছাল ২৫ বছরে। বুঝতেই পারছেন সেই ১০০ থেকে ২০০০ গোলের প্রতিটি পর্যায়ে কত দ্রুত ছিল তারা। কেবল হিট অ্যান্ড রান ফুটবলে কি এটা সম্ভব?
মাইলফলকগুলো
যাদের বিপক্ষে বেশি গোল
No comments