ফেলে দেওয়া খাবারে পাঁচ হাজার লোকের ভোজ

লোনা গ্রন্ডোনা লন্ডনের একটি স্কুলে সেবিকা হিসেবে কাজ করেন। আয় খুব বেশি না। তাঁর মতো নিম্ন আয়ের এরকম পাঁচ হাজার মানুষ গত শুক্রবার লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে জড়ো হয়েছিল। উদ্দেশ্য 'ফিডিং দ্য ফাইভ থাউজেন্ড' কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজ সারা। লন্ডনের বেশ কয়েকটি দাতব্য সংগঠন মিলে এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো এ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল।


বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ফেলে দেওয়া সবজি রান্না করে এক দিন পাঁচ হাজার মানুষকে মধ্যাহ্ন ভোজ করানো হয় বলে এ কর্মসূচির নাম 'ফিডিং দ্য ফাইভ থাউজেন্ড'। মূলত খাবার নষ্ট না করার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতেই এ কর্মসূচির আয়োজন। লন্ডনভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ফেয়ারশেয়ার, ফুডসাইকেল, লাভ ফুড হেইট ওয়েইস্ট ও ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ এ কর্মসূচি পরিচালনা করে। তারা বিভিন্ন সুপারমার্কেটের বাতিল সবজি সংগ্রহ করে এ কর্মসূচি চালায়। এবারের কর্মসূচির সমন্বয়ক ছিলেন লেখিকা ট্রিসট্রাম স্টুয়ার্ট। গত শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলে।
এর আগে ২০০৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রথম 'ফিডিং দ্য ফাইভ থাউজেন্ড' কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল।
আয়োজকরা জানান, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে সুপারমার্কেটে সাধারণত টাটকা শাক-সবজি সাজিয়ে রাখা হয়। যেসব সবজি দেখতে ভালো নয় সেগুলো তারা ফেলে দেয়। ফেলে দেওয়া সেই গাজর-আলুসহ অন্য সবজি সংগ্রহ করে সেগুলো রান্না করে প্রায় পাঁচ হাজার লোকের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বাতিল সবজিও যে খাওয়া যায়, তা প্রমাণ করতেই এ কর্মসূচি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী ব্রিটেনে গড়ে প্রতিটি পরিবার বছরে ৬৮০ পাউন্ড মূল্যের খাবার নষ্ট করে। অন্যদিকে সেখানে প্রতিদিনই অনেক মানুষ অভুক্ত থাকে। তাই ব্যবসায়ী ও অন্যদের খাবার ও সবজি নষ্ট না করার আহ্বান জানিয়েছেন 'ফিডিং দ্য ফাইভ থাউজেন্ড' কর্মসূচির আয়োজকরা।
স্টুয়ার্ট বলেন, 'মানুষ যখন তার সামনে সুস্বাদু খাবার পাবে তখন স্বাভাবিকভাবে তাদের মনে প্রশ্ন আসবে, কেন তারা খাবার নষ্ট করে? আমরা এ কর্মসূচির মাধ্যমে এ বিষয়টিই প্রমাণ করেছি। যেকোনো সবজি ঠিকমতো রান্না করতে পারলে তা খাওয়া যায়। কাজেই কোনো সবজি বা খাবার নষ্ট করা ঠিক নয়। সূত্র : বিবিসি, গার্ডিয়ান।

No comments

Powered by Blogger.