মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে কেন উদ্বেগে থাকেন বাংলাদেশের কর্মজীবী মায়েরা by সানজানা চৌধুরী
বাংলাদেশে
একজন মা যখন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকেন, তখন তার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে
দাঁড়ায়, এই ছুটি শেষ হওয়ার পর তার সন্তানের দেখভাল কিভাবে হবে।
যখন অফিস শুরু করবেন তখন তার সন্তানকে কার কাছে রেখে যাবেন-এমন আরও নানা বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্নতায় ভোগেন এই মায়েরা।
তেমনই একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইদা হক।
তার মাতৃত্বকালীন ছুটি শুরু হয়েছে সন্তান জন্ম দেয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই।
কিন্তু এখন থেকেই তিনি দুশ্চিন্তা করছেন যে এই ছুটি শেষ হওয়ার পর তার সন্তানের দেখভাল কিভাবে হবে।
মাতৃত্বকালীন ছুটি পর্যাপ্ত না থাকা সেইসঙ্গে সন্তানকে কার কাছে রেখে যাবেন সেটাই যেন এখন তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যখন অফিস শুরু করবেন তখন তার সন্তানকে কার কাছে রেখে যাবেন-এমন আরও নানা বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্নতায় ভোগেন এই মায়েরা।
তেমনই একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইদা হক।
তার মাতৃত্বকালীন ছুটি শুরু হয়েছে সন্তান জন্ম দেয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই।
কিন্তু এখন থেকেই তিনি দুশ্চিন্তা করছেন যে এই ছুটি শেষ হওয়ার পর তার সন্তানের দেখভাল কিভাবে হবে।
মাতৃত্বকালীন ছুটি পর্যাপ্ত না থাকা সেইসঙ্গে সন্তানকে কার কাছে রেখে যাবেন সেটাই যেন এখন তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
"প্রেগনেন্সি
লিভ শুরু হওয়ার আগেও আমি বেশ কয়েকবার অসুস্থ হয়েছিলাম, কিন্তু তারপরও
ছুটি নেইনি। চেয়েছি যে ছুটির পুরো সময়টা যেন বাচ্চাকে দিতে পারি। এখন
ভাবি ছুটি শেষ হওয়ার পর কি করবো?"
"সবাই ডে কেয়ার সেন্টারের কথা বলছে, কেউ বলছে গভর্নেস রাখতে। কিন্তু কোনটাতেই ভরসা পাচ্ছিনা। আবার চাকরিও ছাড়া সম্ভব না। কিন্তু কোন না কোনভাবে ম্যানেজ তো করতেই হবে।"
একই ধরণের দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা নাদিয়া নদীকে।
স্বামীর পরিবার বা কর্মস্থল থেকে প্রয়োজনীয় সাপোর্টের অভাব সেইসঙ্গে পর্যাপ্ত ডে কেয়ার সেন্টার না থাকা, এছাড়া যে কয়েকটি ডে কেয়ার সেন্টার রয়েছে, সেগুলোর সময়সূচী, কর্মস্থলের সময়সূচীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হতেই সন্তানের দেখাশোনা করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় তাকে।
এমন অবস্থায় দ্বিতীয় সন্তানের পরিকল্পনা থাকলেও সেটা নিয়ে এখন যেন তিনি ভাবতেই পারছেন না।
"ম্যাটারনাল লিভ শেষ হওয়ার পর কষ্টটা বাচ্চাটার যেমন, তেমনি মায়েরও। বাচ্চাকে আমার শ্বশুড় শাশুড়ির কাছে যে রেখে যাব, সেই সুযোগ আমার ছিল না।। আর আজকাল যা দেখছি, বিশ্বস্ত মানুষ পাওয়া ভীষণ কঠিন। "
"আবার চাইলেই আপনাকে অফিস ছুটি দেবে না। একজন ওয়ার্কিং মাদার কখনোই ওভাবে কো অপারেশন পায়না।"
বাংলাদেশে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস নির্ধারিত থাকলেও বাংলাদেশ শ্রম আইনানুযায়ী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাতৃত্বকালীন ছুটি কেবল ১৬ সপ্তাহ, অর্থাৎ চার মাসেরও কম সময়।
তবে এই সব প্রতিষ্ঠানের নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে কর্মক্ষেত্রে চিন্তাহীনভাবে যোগ দেয়া রীতিমত অসম্ভব হয়ে পড়ে।
"সবাই ডে কেয়ার সেন্টারের কথা বলছে, কেউ বলছে গভর্নেস রাখতে। কিন্তু কোনটাতেই ভরসা পাচ্ছিনা। আবার চাকরিও ছাড়া সম্ভব না। কিন্তু কোন না কোনভাবে ম্যানেজ তো করতেই হবে।"
একই ধরণের দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা নাদিয়া নদীকে।
স্বামীর পরিবার বা কর্মস্থল থেকে প্রয়োজনীয় সাপোর্টের অভাব সেইসঙ্গে পর্যাপ্ত ডে কেয়ার সেন্টার না থাকা, এছাড়া যে কয়েকটি ডে কেয়ার সেন্টার রয়েছে, সেগুলোর সময়সূচী, কর্মস্থলের সময়সূচীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হতেই সন্তানের দেখাশোনা করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় তাকে।
এমন অবস্থায় দ্বিতীয় সন্তানের পরিকল্পনা থাকলেও সেটা নিয়ে এখন যেন তিনি ভাবতেই পারছেন না।
"ম্যাটারনাল লিভ শেষ হওয়ার পর কষ্টটা বাচ্চাটার যেমন, তেমনি মায়েরও। বাচ্চাকে আমার শ্বশুড় শাশুড়ির কাছে যে রেখে যাব, সেই সুযোগ আমার ছিল না।। আর আজকাল যা দেখছি, বিশ্বস্ত মানুষ পাওয়া ভীষণ কঠিন। "
"আবার চাইলেই আপনাকে অফিস ছুটি দেবে না। একজন ওয়ার্কিং মাদার কখনোই ওভাবে কো অপারেশন পায়না।"
বাংলাদেশে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস নির্ধারিত থাকলেও বাংলাদেশ শ্রম আইনানুযায়ী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাতৃত্বকালীন ছুটি কেবল ১৬ সপ্তাহ, অর্থাৎ চার মাসেরও কম সময়।
তবে এই সব প্রতিষ্ঠানের নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে কর্মক্ষেত্রে চিন্তাহীনভাবে যোগ দেয়া রীতিমত অসম্ভব হয়ে পড়ে।
অনেক
নারী চাকরি ছাড়তেও বাধ্য হন। তবেএ বিষয়ে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা
যথেষ্ট বলে দাবি করছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা
মোহাম্মদ আবুল খায়ের।
তিনি বলেন, "ম্যাটারনিটি লিভ শেষ হওয়ার পরে মায়েরা যেন নিশ্চিন্তে কর্মস্থলে ফিরতে পারে সেজন্য সরকার দেশব্যাপী ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করছে সেইসঙ্গে কেউ যদি ব্যক্তিগত পর্যায়ে ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়, তাদের উৎসাহিত করতে সরকার শিগগিরই একটি আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে।"
সেই আইনে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে যে, কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে অথবা ব্যবসায়িক স্বার্থে ডে কেয়ার সেন্টার চালু করতে চান তাহলে সরকার তার সহজ অনুমোদন দেবে।
মিস্টার খায়ের বলেন, বাংলাদেশে প্রায় একশটি ডে কেয়ার সেন্টার রয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা শহরে রয়েছে ৬০টির মতো।
তিনি বলেন, "ম্যাটারনিটি লিভ শেষ হওয়ার পরে মায়েরা যেন নিশ্চিন্তে কর্মস্থলে ফিরতে পারে সেজন্য সরকার দেশব্যাপী ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করছে সেইসঙ্গে কেউ যদি ব্যক্তিগত পর্যায়ে ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়, তাদের উৎসাহিত করতে সরকার শিগগিরই একটি আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে।"
সেই আইনে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে যে, কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে অথবা ব্যবসায়িক স্বার্থে ডে কেয়ার সেন্টার চালু করতে চান তাহলে সরকার তার সহজ অনুমোদন দেবে।
মিস্টার খায়ের বলেন, বাংলাদেশে প্রায় একশটি ডে কেয়ার সেন্টার রয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা শহরে রয়েছে ৬০টির মতো।
মিসেস নাদিয়া নদীর মতে, "ওয়ার্কিং মাদার কখনোই ওভাবে কো অপারেশন পায়না।" |
এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনের ব্যাপারে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
তবে সব প্রতিকূলতা সামাল দিয়ে সদ্য মায়েদের ক্যারিয়ার নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নজিরও কম নেই।
তবে সেজন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় বলে জানান নাদিয়া নদী।
"আমি আমার বাচ্চাকে মা আর বোনের কাছে রেখে যেতাম। তারা আবার দুজনই চাকরি করতো। সময়টা এমনভাবে ঠিক করেছিলাম যেন বাই রোটেশনে কেউ না কেউ তার সাথে থাকে। তারপর একটা ডে কেয়ার সেন্টার খুঁজে বের করি। এজন্য খরচ অনেক বেড়ে গেলেও কিছু করার ছিলনা।"
মাতৃত্বকালীন ছুটির পর শিশুর দেখভালের বিষয়টিকে যদি অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও, সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হতো, তাহলে মায়েদের এমন মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যেতো বলে জানান মিসেস নদী।
তবে সব প্রতিকূলতা সামাল দিয়ে সদ্য মায়েদের ক্যারিয়ার নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নজিরও কম নেই।
তবে সেজন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় বলে জানান নাদিয়া নদী।
"আমি আমার বাচ্চাকে মা আর বোনের কাছে রেখে যেতাম। তারা আবার দুজনই চাকরি করতো। সময়টা এমনভাবে ঠিক করেছিলাম যেন বাই রোটেশনে কেউ না কেউ তার সাথে থাকে। তারপর একটা ডে কেয়ার সেন্টার খুঁজে বের করি। এজন্য খরচ অনেক বেড়ে গেলেও কিছু করার ছিলনা।"
মাতৃত্বকালীন ছুটির পর শিশুর দেখভালের বিষয়টিকে যদি অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও, সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হতো, তাহলে মায়েদের এমন মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যেতো বলে জানান মিসেস নদী।
No comments