ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক ॥ দখল করে আছেন নিজের ব্যবসার স্বার্থে ॥ by মুহিত
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংসের সব
ব্যবস্থা করে গিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে
সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ কথা বলেছেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূস গ্রামীণ
ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এখন নিজের হাতেই সেটি ধ্বংস করতে চাইছেন। ড.
ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক দখল করে আছেন বলেও মত দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ড.
ইউনূস নিজেকে ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকে চলতে দিতে চান না। তার ভাবনা তিনি ছাড়া
এটি চলবে না।অর্থমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূস বলছেন সরকার গ্রামীণ ব্যাংক অধিগ্রহণ করেছে। সরকার নয়, তিনিই এটা দখল করে বসে আছেন নিজের ব্যবসার প্রয়োজনে। গ্রামীণ ব্যাংককে তিনি কোন কাজ করতে দেবেন না।
তিনি আরও বলেন, ইউনূস সাহেব ব্যাংকটাকে ধ্বংস করার সব ব্যবস্থা করে গিয়েছেন। এর চেয়ে আরও বড় ধ্বংসাত্মক কোন পদক্ষেপ কোন ব্যক্তি নিতে পারবে না। তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনিই এটাকে ধ্বংস করার ব্যবস্থা করেছেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, মামলা করে সার্চ কমিটির কার্যক্রম ইউনূস সাহেব আটকে রেখেছেন, তিনি কাউকে এমডি হতে দেবেন না, তিনিই এমডি নিয়োগ দেবেন যাকে তিনি পছন্দ করেন।
প্রসঙ্গক্রমে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে গ্রামীণ ব্যংকের ১৩ হাজার কোটি টাকার যে সেভিংস আছে, তা এখন গ্রামে নেই, সেটা বিভিন্ন ব্যাংকে রেখে উচ্চহারে সুদ নেয়া হচ্ছে।
এর আগে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠক শেষে মোজাম্মেল হক গ্রামীণ টেলিকমের ২০ হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে গ্রামীণ ট্রাস্ট নিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের আইন সংশোধন করে এমডি পদ থেকে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অপসারণ করা হয়। গত ১১ অক্টোবর এমডি পদে নতুন কাউকে নিয়োগ দেয়ার জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি সিলেকশন কমিটি গঠন করে সরকার। গত ১৩ নবেম্বর একটি ইংরেজী দৈনিকে এমডি নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞাপনটি গ্রামীণ ব্যাংকের আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় উল্লেখ করে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ব্যাংকের পরিচালক তাহসীনা খাতুন গত ২৬ নবেম্বর রিট আবেদন করেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি নিয়োগে জারি করা বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম দুই মাসের জন্য স্থগিত করে হাইকোর্ট বিভাগ। এক আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রুল জারির পাশাপাশি এ আদেশ দেয়। গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক তাহসীনা খাতুন রিট আবেদনটি দায়ের করেন। এ আদেশের ফলে ব্যাংকটির এমডি নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের সংশোধিত আইনের ১৪ ধারায় বলা আছে, সিলেকশন কমিটি বোর্ডের কাছে তিনজনের প্যানেলের নাম সুপারিশ করবে। পরিচালনা পর্ষদ তাদের থেকে একজনকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেবে। কিন্তু বিজ্ঞাপনে বলা আছে, সিলেকশন কমিটি পরামর্শকের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোনয়ন-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। পরামর্শকের সিদ্ধান্ত হবে চূড়ান্ত। এটি সংশ্লিষ্ট ধারার পরিপন্থী।
No comments