মানুষের চেয়েও ভাল রং চিনতে পারে মুরগি by তাহেরা নয়ন
মুরগি যদি মানুষের চেয়েও ভাল রং চিনতে পারে তাহলে তো অবাকই হতে হয়। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির সেন্ট লুইস স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা এ ধরনেরই তথ্য পেয়েছেন।
মুরগির চোখের গভীরে গবেষকরা বিস্ময়কর এক জৈবিক নকশা দেখতে পেয়েছেন। মুরগির চোখের মধ্যে পাঁচ ধরনের লাইট রিসেপ্টর বা আলো গ্রাহক চিহ্নিত করেছেন। তাঁরা আবিষ্কার করেন যে, আলো গ্রাহক মুরগির রেটিনার মধ্যে বহু রং দেখার ৰমতা বাড়িয়ে দেয়। মুরগির চোখের পেছনে থাকে আলো উপলব্ধি করার ৰমতা।প্যাথলজি, ইমিউনোলজি এবং জেনেটিকের সহকারী অধ্যাপক, বিশিষ্ট লেখক জোসেফ সি কোরবো, এমডি, পিএইচডি এ সম্পর্কে বলেন, এই বিশেস্নষণের ওপর ভিত্তি করে পাখিরা বিভিন্ন রংয়ের দিক থেকে আমাদের স্পষ্টভাবে দেখতে পায়। মুরগির রেটিনায় থাকা কালার রিসেপ্টর অর্গানাইজেশন বা রং গ্রাহক উপাদান অন্যান্য অধিকাংশ প্রাণীর রেটিনা এবং নিশ্চিতভাবে অধিকাংশ সত্মন্যপায়ীর রেটিনা থেকে বেশি। মুরগির চোখের এই উপাদান নিয়ে কোরবো আরও গবেষণা করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের পর্যবেৰণ বিভিন্ন রকমের অন্ধত্বের জন্য দায়ী প্রায় ২০০ জেনেটিক বৈকল্য চিকিৎসায় বিজ্ঞানীদের স্টেমসেল এবং অন্যান্য নতুন কৌশল প্রয়োগে সহায়তা করবে। বিজ্ঞানীরা তাদের এই গবেষণার ফল 'পস্নাস ওয়ান' সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
কোরবো মনে করেন, পাখিদের ভালভাবে রং দেখার ৰমতার কারণ হচ্ছে বিবর্তনের দীর্ঘ ইতিহাসে তারা কখনও অন্ধকারে কাটায়নি। পাখি, সরীসৃপ এবং সত্মন্যপায়ী প্রাণীর উদ্ভব হয়েছে একটি অভিন্ন পূর্বপুরম্নষ থেকে। কিন্তু ডাইনোসরদের যুগে অধিকাংশ সত্মন্যপায়ী প্রাণী লাখ লাখ বছর ধরে ছিল নিশাচর।
দৃষ্টিশক্তি আসে রেটিনায় থাকা আলো সংবেদনশীল ফটোরিসেপ্টর সেল থেকে।
রাতে দেখার ৰমতা নির্ভর করে রড নামক রিসেপ্টরের ওপর যা ডাইনোসরদের যুগে সত্মন্যপায়ীদের চোখে বিকশিত হয়েছে। দিনের বেলা দেখার ৰমতা নির্ভর করে 'কোন' নামে পরিচিত বিভিন্ন রিসেপ্টরের ওপর। রাতে একটি অর্গানিজম সক্রিয় থাকলে 'কোন' কম সুবিধাজনক হয়। কোরবো ব্যাখ্যা করে বলেন, মানুষের রেটিনায় থাকা 'কোন' লাল, নীল ও সবুজ তরঙ্গদৈঘ্যর্ের প্রতি সংবেদনশীল। পাখিদের রেটিনায়ও 'কোন' আছে যা বেগুনী তরঙ্গদীর্ঘ সেই সঙ্গে অতিবেগুনী তরঙ্গদীর্ঘ শনাক্ত করতে পারে এবং 'ডবল কোন' নামে অভিহিত একটি বিশেষায়িত রিসেপ্টর তাদেরকে গতি শনাক্ত করতে সহায়তা করে বলে আমাদের ধারণা। এছাড়া অধিকাংশ পাখির কোন-এ একটি বিশেষায়িত কমেমো আছে কোরবো যাকে 'সেলুলার সানগস্নাস' নামে অভিহিত করেছেন।
কোরবো বলেন, মানুষের মধ্যে অন্ধত্ব সৃষ্টিকারী উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া বহু অবস্থা 'কোন' ও 'রড'কে ৰতিগ্রসত্ম করে। মুরগির রেটিনার কমেমো থেকে আমাদের পাওয়া জ্ঞান মানুষের চোখের এ ধরনের সমস্যা বুঝতে ও নিরাময় করতে সহায়ক হবে। দেখা যাক, বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা মানুষের চোখের সমস্যা নিরসনে কতটা কার্যকর প্রমাণিত হয়।
No comments