উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের দু'দিনব্যাপী বৈঠক সমাপ্ত হলো গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। এবারের বৈঠকে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ ৩২টি দাতা দেশ ও সংস্থার স্থানীয় প্রতিনিধিরা যোগদান করে।
সুশাসন ও মানব সম্পদ উন্নয়ন, জ্বালানি খাত, বৈশ্বিক জলবায়ু, খাদ্য ও কৃষি খাতের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সরকার দাতাদের কাছে রূপকল্প ২০২১ এবং দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে। এতে উন্নয়ন সহযোগীরা তাদের সুপারিশ প্রদান করে। তবে এবার দাতারা আগের মতো সমালোচনায় না গিয়ে সরকারের ইতিবাচক পদৰেপগুলোর ওপর আলোচনা করেন। সমালোচনা একেবারেই হয়নি, এমন নয়। হয়েছে কিছুটা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে, গণতান্ত্রিক অবস্থানকে স্থবির করা নিয়ে। এসব শুধরে নেয়া অবশ্যই আমাদের জাতীয় দায়িত্ব।উলেস্নখ্য বিদু্যত ও জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়টি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারেই ছিল। ৰমতা গ্রহণের পর পরই সরকার এ ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব পরিকল্পনা দাতাদের কাছে তুলে ধরা হলে তারা সনত্মোষ প্রকাশ করে। এমনকি সরকারকে স্বাগত জানায়। তবে তারা জ্বালানি সাশ্রয়, দৰতা বৃদ্ধি এবং জ্বালানি ও বিদু্যতের মূল্য সমন্বয়ের পরামর্শ দিয়েছে। এ খাতে বিদ্যমান সমস্যাগুলোকে মোকাবেলার ৰেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। দাতাদের মনত্মব্য, সরকারের নীতি ও লৰ্যের মধ্যে যে ধরনের যৌক্তিকতা থাকা প্রয়োজন সরকার তা নিশ্চিত করেছে। এছাড়া জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়েও ব্যাপক আলোচনা হয়। চলিস্নশ শতাংশ দরিদ্র মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বৃদ্ধি করার চিত্র বৈঠকে তুলে ধরা হয়। এ ব্যাপারে দাতা সংস্থাগুলোর কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তবে তারা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছে। এটা সত্য যে, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সম্ভব নয়। কৃষি খাতে শর্তহীন সহায়তার কথা উলেস্নখ করেছে বাংলাদেশ। উন্নয়ন সহযোগীরা কুষিতে বিশেষ সহায়তার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব নিরসনে বাংলাদেশ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কোপেনহেগেনে তহবিল গঠনে যে অঙ্গীকার করা হয়েছে তার দ্রম্নত ছাড় প্রয়োজন। সবচেয়ে সংবেদশীল, স্বল্পোন্নত এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী নিচু ও ৰুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর জন্য এটা খুবই জরম্নরি।
উন্নয়ন সহযোগীরা সরকারের আহ্বানের প্রতি সাড়া দিয়েছে। তারা সরকারকে চারটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দৃঢ়তা প্রদর্শনের কথা বলেছে। যেমন_ দুনর্ীতি দমন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির দ্রম্নত বাসত্মবায়ন। সরকারের গৃহীত পদৰেপগুলো প্রমাণ করে, এসব চ্যালেঞ্জে সরকার অবশ্যই সাফল্য অর্জন করবে। সরকার সাধ্য মোতাবেক আনত্মরিকতার সঙ্গেই বিভিন্ন সঙ্কট থেকে উত্তরণের অধ্যায়ে পেঁৗছাতে সচেষ্ট। এখন দরকার আর্থ-সামজিক ও অর্থনৈতিক সমন্বয়, অনত্মত বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য। বর্তমান সরকার যেহেতু গণতন্ত্র ও সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সুতরাং পারবে মর্যাদাসম্পন্ন পথে চলতে। দাতাগোষ্ঠীর অধিক উপদেশ খুব বেশি দিন যেন শুনতে না হয়, এটা জাতির প্রত্যাশা।
No comments