কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ- সন্ত্রাসীদের দায় শিক্ষার্থীরা বইবে কেন?
ছাত্রলীগের বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় এক শিশু নিহত হওয়ার পর থেকে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। কবে খুলবে তা খোদ প্রশাসনও জানে না। বুধবার সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যাচ্ছে।
তার মানে, সেখানকার শিক্ষা কার্যক্রমের অনিশ্চয়তা খুব শিগগির কাটছে না। আমরা মনে করি, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া উচিত। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্বিধার কোনো কারণ দেখি না। শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা চলতে থাকলে এর দায় কিন্তু কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। হতে পারে, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিলে দুই গ্রুপের মধ্যে আবারও সংঘর্ষে রক্ত ঝরতে পারে; কিন্তু সেটা নেহাতই আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপার। শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে এর সম্পর্ক থাকার কথা নয়। একই সঙ্গে সন্ত্রাসের সঙ্গে দায়ীরা যাতে উপযুক্ত শাস্তি পায়, সে জন্য সহযোগিতা করতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনকেও মনে রাখতে হবে, এর আগের হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচার না হওয়ার কারণেই সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের ঝনঝনানি প্রদর্শনের সাহস পেয়েছে। এবারের হত্যাকারীরা পার পেয়ে গেলে ভবিষ্যতে আবারও কোনো না কোনো মায়ের বুক খালি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা মানে প্রকারান্তরে সন্ত্রাসীদেরই সহায়তা করা। সন্ত্রাসীদের অপকর্মের দায়ে এভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা মেনে নেওয়া যায় না। যে কোনো মূল্যে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখাই হবে কর্তৃপক্ষের দিক থেকে এখনকার কর্তব্য। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে যে বিবাদ, তার মীমাংসা ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা করুক। হারানো ঐতিহ্য ফেরানোর পথ খুঁজুক। ইতিমধ্যে ওই কমিটি বিলুপ্তও করা হয়েছে, আমরা জানি। গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম এখন কীভাবে চলবে, সেটা তাদের মাথাব্যথা। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের বেপরোয়া চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস কীভাবে মোকাবেলা করা হবে, সেটাও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চিন্তা-ভাবনা করুক। বাকৃবিতে যে শিশু নিহত হয়েছে, সেই হত্যার বিচার আইন আদালতের বিষয়। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে কেন? কতিপয় 'ছাত্রনেতা'র গোষ্ঠী ও ব্যক্তিগত বিবাদের দায় গোটা বিশ্ববিদ্যালয় নেবে কেন?
No comments