বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী
চলছে বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে নানা সংস্থার ভবিষ্যদ্বাণী। বিশ্বের উন্নত, উন্নয়নশীল এবং সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সার্বিক অর্থনীতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে আগামী দিনে অর্থনীতি কোন পর্যায়ে যেতে পারে তার সম্ভাবনা প্রকাশ করা হচ্ছে নানা আঙ্গিকে।
সম্প্রতি বহুজাতিক পেশাজীবী সংস্থা প্রাইসওয়াটারহাউসকুপার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের তিনটি সর্ববৃহৎ অর্থনীতির একটিতে পরিণত হবে ভারত। এছাড়া চার দশকের মধ্যে উদীয়মান দেশগুলো উন্নত দেশের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাবে।‘ওয়ার্ল্ড ইন ২০৫০ দি ব্রিকস অ্যান্ড বিয়ন্ড : প্রসপেক্টাস, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপরচুনিটিস’ নামের এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দেশগুলোর অবস্থানেরও পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে ২০৫০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে চীন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে। এ সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক দিক থেকে চীন প্রথম, যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় ও ভারত তৃতীয় অবস্থানে থাকবে। জাপানকে টপকে চতুর্থ অবস্থানে চলে যাবে ব্রাজিল। এ সময় তুরস্ক ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে জায়গা করে নিতে সক্ষম হবে। এই দেশটি অর্থনৈতিক দিক থেকে ইতালিকে ছাড়িয়ে যাবে। ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, ভিয়েতনামের অর্থনীতিও অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে। ক্রয়ক্ষমতার দিক থেকে ২০২০ সালের আগেই জি৭ ভুক্ত দেশগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে ই৭ (উদীয়মান সাত দেশের গ্রুপ)।এর কারন ই৭ ভুক্ত দেশের তুলনায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব বেশি পড়েছে জি৭ ভুক্ত দেশগুলোয়। এছাড়া ২০৫০ সালের মধ্যে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত বিশ্বের বৃহত্তম তিনটি অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। একই সময়ের মধ্যে জার্মানি বা ব্রিটেনের চেয়েও বড় অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে রাশিয়া, মেক্সিকো ও ইন্দোনেশিয়া। এই সংস্থাটি যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছে তা ঘটবে যদি না উন্নত দেশগুলো তাদের বর্তমান নিম্নগতির অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে পারে। আবার উদীয়মান দেশগুলোয় যে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা রয়েছে তা যদি তারা ধরে রাখতে না পারে তবে হিসেব-নিকেশ পাল্টে যাবে। তবে বিশ্বের অর্থনীতিতে পরিবর্তনটা পরিষ্কার। উদীয়মান দেশগুলোয় ভাল প্রবৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদি করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
সামষ্টিক অর্থনীতি ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মতো সমস্যাগুলো উদীয়মান দেশের উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। ভারত ও ব্রাজিলে রয়েছে অতিরিক্ত আর্থিক ঘাটতির মতো সমস্যা। অন্যদিকে রাশিয়া ও নাইজেরিয়া তেল ও গ্যাসের মতো সম্পদের ওপর অতিনিভর্রশীল যা এই দেশগুলো নিয়ে অর্থনৈতিক ভবিষ্যদ্বাণীকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে এটা বলা যায় যে, বর্তমানের উদীয়মান দেশগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো যদি মিটিয়ে ফেলতে পারে আর অবকাঠামো উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে পারে তবে প্রাইসওয়াটারহাউসকুপার্সের ভবিষ্যত বাণী ফলেও যেতে পারে।
আনোয়ার হোসেন
No comments