সিবোটে অতিরিক্ত ভাড়া ॥ মাওয়ায় অভিযানকালে ইউএনওর গাড়িতে হামলা, চালক আহত

মাওয়ায় স্পিডবোটে বেশি ভাড়া আদায় নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় ইজারাদারের লোকজন হামলা চালায়। এতে ইউএনও’র গাড়ি ভাংচুর এবং চালক গুরুতর আহত হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ ৮ জনকে আটক করে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দায়ে মোঃ সজল (২৫) নামের এক জনকে তিন মাসের কারাদ- দেয়া হয় এবং হামলায়


ঘটনায় ৬ জনকে দ্রুত বিচার আইনে গ্রেফতার করা হয়। বাকি একজনকে ছেড়ে দেয়া হয়ছে। মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুটে নির্ধারিত ভাড়া ১২০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আদায় করা হচ্ছিল।
গুরুতর আহত লৌহজংয়ের ইউএনও’র গাড়িচালক আতাউর রহমানকে (২৮) স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও লৌহজংয়ের ইউএনও মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমরা কঠোরভাবে দেখছি। ঈদে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘœ যাতায়াতের জন্য সবরকম প্রচেষ্টা চলছে। হামলা করে এই প্রক্রিয়ায় কোন বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় আটকত দু’জনকে তাদের সহযোগীরা পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়, পরে তাদের একজনকে (সজল) পুলিশ আটক করে। সামনে ছিল পুলিশের গাড়ি, পেছনে ইউএনও’র গাড়ি। এ সময় সংঘবদ্ধ ইজারাদারের লোকজন লাঠি নিয়ে ইউএনও’র গাড়িতে হামলা চালিয়ে গাড়ির গ্লাস ভাংচুরসহ ব্যাপক ক্ষতি করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ- মাওয়া পুলিশ ফাঁড়িকে মাসোয়ারা দিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে আসছিল ইজারাদাররা। এই ফাঁড়ির মাধ্যমে লৌহজং থানার একজন ওসি, মাওয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খন্দকার খালিদ এবং ডিএসবির কনস্টেবল আমির ঘাট থেকে নিয়মিত চাঁদা নিয়ে থাকেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাওয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খন্দকার খালেদ। পুলিশ সুপার বলেছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হামলার ঘটনায় ইজারাদার হামিদুলের ভাই টিটুসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ দেড় থেকে দুই শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে ইউএনও’র ড্রাইভার আতাউর রহমান লৌহজং থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছেন। ঘটনার পরপর বিশেষ অভিযানে আটককৃত খলিল বেপারী (২৮), শামীম খান (২৮), মোঃ কামাল সর্দার (১৮), শহিদুল ভূইয়া (২৫), মোঃ মিঠু মাদবর (২০), সুমন বেপারীকে (১৯) এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
দ-প্রাপ্ত সজল মেদিনীম-লের বারেক ব্যাপারীর পুত্র। সে ইজারাদার হামিদুলের ভাগ্নে।
ঘটনার পর পর অতিরিক্ত র‌্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের আটক করে । তবে ঘাটের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। যাত্রীরা নির্বিঘেœই পারাপার হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান।
ইউএনও জানান, মাওয়ায় কোস্টগার্ড তলব করা হয়েছে। ঈদের আগ পর্যন্ত কোস্টগার্ড মাওয়াতে অবস্থান করবে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের এই সিবোট ইজারাদার স্থানীয় মেদিনীম-ল ইউপি যুবলীগের সভাপতি হামিদুল ইসলাম। তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। অভিযোগ রয়েছে- স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক প্রভাবশালী এবং জেলা পরিষদের আস্কারায় এই ইজারাদার ঘাটের দায়িত্ব গ্রহণের পরই নানা অরাজকতা চালাচ্ছে। এতে ঈদে ঘরমুখো মানুষের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়সহ পড়তে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনায়।

No comments

Powered by Blogger.