ভোজ্য তেলে উল্টো রথ by রাজীব আহমেদ
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দরপতন ঘটেছে। টনপ্রতি প্রায় দেড় শ ডলার কমে গেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রেতারা এর সুফল থেকে বঞ্চিত। দাম তো কমেইনি, বরং বাড়ানো হয়েছে লিটারে দুই টাকা। বাড়তি দাম ধরে রাখতে আমদানিমূল্য বেশি দেখিয়ে ঋণপত্র খোলা হচ্ছে, বাজারে সরবরাহ কমিয়ে সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে।
মাস দুয়েক আগেও বিশ্ববাজারে যে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি ১৩০০ ডলারের বেশি ছিল, এখন তা ১১৫০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। রয়টার্সের হিসাবে, এপ্রিল মাসে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের টনপ্রতি গড় দাম ছিল ১২৯৪ ডলার (এফওবি)। মে মাসে তা কিছুটা কমে ১১৮৫ ডলারে নামে। চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে (১৫ জুন) অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল টনপ্রতি ১১২৭ ডলার। একইভাবে পাম তেলের দাম টনপ্রতি ১২০০ ডলারের (এফওবি) ওপর থেকে নেমে গত ১৫ জুন দাম দাঁড়ায় ৯৪২ ডলারে।
তবে পড়তি দামের প্রতিফলন নেই ভোজ্য তেল আমদানির তথ্যে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ৬ জুন ১৫ টন সয়াবিন তেল আমদানির জন্য চারটি ঋণপত্র খোলা হয়। ওই ঋণপত্রগুলোতে ভাড়া ও অন্যান্য খরচসহ (সিঅ্যান্ডএফ) অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের গড় দাম দেখানো হয় টনপ্রতি ১২৭১ ডলার। কিন্তু ওই দিন আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম (সিঅ্যান্ডএফ) ছিল এর চেয়ে ৯৬ ডলার কম। টাকায় পরিবর্তিত করলে দেখা যায়, ওই সব ঋণপত্রে দাম বেশি দেখানো হয়েছে প্রতি লিটারে প্রায় আট টাকা। অথচ একই সপ্তাহে পাঁচ হাজার টন তেল আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয়েছে প্রায় ১০০ ডলার কমে, ১১৭৫ ডলার দরে।
গত ১৩ মে তিন হাজার ৬৩৬ দশমিক ৩৬ টন সয়াবিন তেল আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলে এস আলম গ্রুপ। এতে দাম দেখানো হয় ১৩১৫ ডলার (সিঅ্যান্ডএফ)। অথচ আন্তর্জাতিকভাবে নির্ভরযোগ্য পণ্যের দাম সরবরাহকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্যে দেখা যায়, ওই দিন সয়াবিন তেলের সিঅ্যান্ডএফ দাম ছিল ১১৭৯ দশমিক ৯৪ ডলার। অর্থাৎ, প্রতি টনে তারা ১৩৫ ডলার বেশি দেখিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রতি লিটারে বেশি দাম দেখানো হয়েছে প্রায় ১১ টাকা।
একইভাবে এস আলম গ্রুপ ৭ মে চার হাজার ৫৪৫ টন সয়াবিন তেল আমদানির জন্য প্রতিটন ১৩৩৩ ডলার (সিঅ্যান্ডএফ) দরে ঋণপত্র খোলে। রয়টার্সের তথ্যানুযায়ী, ওই দিন দাম ছিল ১২৩৩.০৭ ডলার। ৮ মে তারা পাঁচ হাজার টন পাম তেল আমদানির ঋণপত্র খোলে, প্রতিটন ১২১২ ডলার দরে। ওই দিন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ছিল ১১৫৭ দশমিক ৭৯ ডলার।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারিভাবে তেলের দাম নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলার জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি দামে ঋণপত্র খোলার কৌশল নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক বাজার দরের চেয়ে ১২০-১৫০ ডলার বেশি দেখিয়ে ঋণপত্র খোলা হচ্ছে। এই ঋণপত্রগুলো কারা খুলছে তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হলেও তারা কিছুই বলছে না।
বেশি দাম দেখিয়ে এস আলমের বেশ কিছু ঋণপত্র খোলার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির বাজারজাতকরণ বিভাগের জিএম মীর মইনউদ্দিন বলেন, 'যখন যে দাম থাকে আমরা সেই দামে আমদানি করি। দাম কমার পর এখন কম দামে ঋণপত্র খোলা হচ্ছে।'
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমছে গত মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। এরপর এক মাস পেরিয়ে গেলেও বোতলজাত তেলের দাম কমার কোনো নাম নেই। উল্টো গত সপ্তাহে লিটারে দুই টাকা বেড়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম। পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১১১ টাকা। মিলগেটে ১১০ টাকারও কম। নিয়মানুযায়ী, মিলগেটের দামের সঙ্গে ১৫ টাকা যোগ হয়ে এক লিটারের বোতলের দাম হবে। সে অনুযায়ী এক লিটারের বোতলের দাম দাঁড়ায় ১২৫ টাকা। কিন্তু বাজারে দাম ১৩৫ টাকা। ১১০ টাকা দরে পাঁচ লিটারের দাম ৫৫০ টাকা। এর সঙ্গে ৪৫ টাকা যোগ হয়ে পাঁচ লিটারের দাম হবে ৫৯৫ টাকা। কিন্তু বাজারে ৬৭০ টাকা। বেশি নেওয়া হচ্ছে লিটারে ১৫ টাকা।
বিশ্ববাজারে দাম কমায় খোলাবাজারে পাম ও সয়াবিন তেলের দাম কমেছিল। পাইকারি বাজারে পাঁচ হাজার টাকা থেকে মণপ্রতি দাম চার হাজার ৪৫০ টাকায় নেমেছিল। কিন্তু এখন সেটা আবার কিছুটা বেড়েছে সরবরাহ কম থাকায়।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আলী ভুট্টো কালের কণ্ঠকে বলেন, পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রায় সব কম্পানি তেলের সরবরাহ দিতে বিলম্ব করছে। তিনি জানান, তেল নিতে গিয়ে ট্রাক কয়েকদিন অপেক্ষা করছে। এতে প্রতি দিনের জন্য এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে তেলের দামে।
তবে পড়তি দামের প্রতিফলন নেই ভোজ্য তেল আমদানির তথ্যে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ৬ জুন ১৫ টন সয়াবিন তেল আমদানির জন্য চারটি ঋণপত্র খোলা হয়। ওই ঋণপত্রগুলোতে ভাড়া ও অন্যান্য খরচসহ (সিঅ্যান্ডএফ) অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের গড় দাম দেখানো হয় টনপ্রতি ১২৭১ ডলার। কিন্তু ওই দিন আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম (সিঅ্যান্ডএফ) ছিল এর চেয়ে ৯৬ ডলার কম। টাকায় পরিবর্তিত করলে দেখা যায়, ওই সব ঋণপত্রে দাম বেশি দেখানো হয়েছে প্রতি লিটারে প্রায় আট টাকা। অথচ একই সপ্তাহে পাঁচ হাজার টন তেল আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয়েছে প্রায় ১০০ ডলার কমে, ১১৭৫ ডলার দরে।
গত ১৩ মে তিন হাজার ৬৩৬ দশমিক ৩৬ টন সয়াবিন তেল আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলে এস আলম গ্রুপ। এতে দাম দেখানো হয় ১৩১৫ ডলার (সিঅ্যান্ডএফ)। অথচ আন্তর্জাতিকভাবে নির্ভরযোগ্য পণ্যের দাম সরবরাহকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্যে দেখা যায়, ওই দিন সয়াবিন তেলের সিঅ্যান্ডএফ দাম ছিল ১১৭৯ দশমিক ৯৪ ডলার। অর্থাৎ, প্রতি টনে তারা ১৩৫ ডলার বেশি দেখিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রতি লিটারে বেশি দাম দেখানো হয়েছে প্রায় ১১ টাকা।
একইভাবে এস আলম গ্রুপ ৭ মে চার হাজার ৫৪৫ টন সয়াবিন তেল আমদানির জন্য প্রতিটন ১৩৩৩ ডলার (সিঅ্যান্ডএফ) দরে ঋণপত্র খোলে। রয়টার্সের তথ্যানুযায়ী, ওই দিন দাম ছিল ১২৩৩.০৭ ডলার। ৮ মে তারা পাঁচ হাজার টন পাম তেল আমদানির ঋণপত্র খোলে, প্রতিটন ১২১২ ডলার দরে। ওই দিন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ছিল ১১৫৭ দশমিক ৭৯ ডলার।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারিভাবে তেলের দাম নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলার জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি দামে ঋণপত্র খোলার কৌশল নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক বাজার দরের চেয়ে ১২০-১৫০ ডলার বেশি দেখিয়ে ঋণপত্র খোলা হচ্ছে। এই ঋণপত্রগুলো কারা খুলছে তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হলেও তারা কিছুই বলছে না।
বেশি দাম দেখিয়ে এস আলমের বেশ কিছু ঋণপত্র খোলার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির বাজারজাতকরণ বিভাগের জিএম মীর মইনউদ্দিন বলেন, 'যখন যে দাম থাকে আমরা সেই দামে আমদানি করি। দাম কমার পর এখন কম দামে ঋণপত্র খোলা হচ্ছে।'
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমছে গত মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। এরপর এক মাস পেরিয়ে গেলেও বোতলজাত তেলের দাম কমার কোনো নাম নেই। উল্টো গত সপ্তাহে লিটারে দুই টাকা বেড়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম। পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১১১ টাকা। মিলগেটে ১১০ টাকারও কম। নিয়মানুযায়ী, মিলগেটের দামের সঙ্গে ১৫ টাকা যোগ হয়ে এক লিটারের বোতলের দাম হবে। সে অনুযায়ী এক লিটারের বোতলের দাম দাঁড়ায় ১২৫ টাকা। কিন্তু বাজারে দাম ১৩৫ টাকা। ১১০ টাকা দরে পাঁচ লিটারের দাম ৫৫০ টাকা। এর সঙ্গে ৪৫ টাকা যোগ হয়ে পাঁচ লিটারের দাম হবে ৫৯৫ টাকা। কিন্তু বাজারে ৬৭০ টাকা। বেশি নেওয়া হচ্ছে লিটারে ১৫ টাকা।
বিশ্ববাজারে দাম কমায় খোলাবাজারে পাম ও সয়াবিন তেলের দাম কমেছিল। পাইকারি বাজারে পাঁচ হাজার টাকা থেকে মণপ্রতি দাম চার হাজার ৪৫০ টাকায় নেমেছিল। কিন্তু এখন সেটা আবার কিছুটা বেড়েছে সরবরাহ কম থাকায়।
বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্য তেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আলী ভুট্টো কালের কণ্ঠকে বলেন, পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রায় সব কম্পানি তেলের সরবরাহ দিতে বিলম্ব করছে। তিনি জানান, তেল নিতে গিয়ে ট্রাক কয়েকদিন অপেক্ষা করছে। এতে প্রতি দিনের জন্য এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে তেলের দামে।
No comments