এখনই আবাসিক এলাকায় নতুন গ্যাস সংযোগ নয়

গ্যাসের উৎপাদন বাড়লেও এখনই বাসাবাড়িতে নতুন সংযোগ দেওয়ার কথা ভাবছে না সরকার। গুরুত্ব অনুসারে আগে দেওয়া হবে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প-কারখানায়। গতকাল মঙ্গলবার এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।


রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেড আয়োজিত 'ন্যাশনাল ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ফর ইমপ্রুভমেন্ট অব দি এনার্জি এফিসিয়েন্সি অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল বয়লারস অ্যান্ড ফার্নেসেস' শীর্ষক কর্মশালা শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সনদ বিতরণকালে জ্বালানি উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, 'নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমার নেতৃত্বে গঠিত ছয় সদস্যের একটি কমিটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে নতুন কিছু সংযোগ দিচ্ছে।' আবাসিক এলাকায় আপাতত নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, 'এখনো দৈনিক গ্যাসের ঘাটতি পাঁচ মিলিয়ন ঘনফুট।
এ অবস্থায় বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্পে গ্যাস দেওয়ার ব্যাপারে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।'
২০০৯ সাল থেকে সরকার নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ রেখেছে। ওই সময় বলা হয়েছিল, গ্যাসের দৈনিক উৎপাদন দুই হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হলে নতুন সংযোগ দেওয়া হবে। সম্প্রতি পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, গ্যাসের দৈনিক উৎপাদন দুই হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট ছাড়িয়েছে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর জোর দিচ্ছে। এ কারণে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল রাখতে চায়। গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম তুলনায় কম। পাশাপাশি কলকারখানায় গ্যাসের প্রবাহ অবাধ রাখতে চায় সরকার। এ কারণে এই মুহূর্তে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাস সংযোগ দেবে না সরকার।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর এখনই আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাস সংযোগ দেওয়ার পক্ষে। তিনি সাংবাদিকদের জানান, 'বর্তমানে দৈনিক দুই হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুটের কিছু বেশি গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে। তাই আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দিতে পেট্রোবাংলা প্রস্তুত। এ জন্য প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হবে।'
ড. মনসুর বলেন, 'গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে নতুন নতুন কূপ খননের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে শ্রীকাইলে কূপ খনন চলছে, শিগগির সুনেত্রায় খনন শুরু হবে। এ জন্য আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দিতে এখন আর কোনো বাধা দেখছি না।'
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জানান, বর্তমানে দৈনিক দুই হাজার ৭০০ থেকে তিন হাজার ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। উৎপাদন করা হচ্ছে দুই হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুটের কিছু বেশি গ্যাস।
অনুষ্ঠানে আবাসিক গ্রাহকদের নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার ব্যাপারে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, 'অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সবাই পাবে।' তবে কবে থেকে নতুন সংযোগ দেওয়া হবে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
অনুষ্ঠানে তিতাস গ্যাস কম্পানির ২৫ জন প্রশিক্ষণার্থী প্রকৌশলীর মধ্যে সনদ বিতরণ করা হয়। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল আজিজ খান, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু তাহের এবং জার্মানির রাষ্ট্রায়ত্ত সাহায্য সংস্থা জিআইজেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

No comments

Powered by Blogger.