স্পিকারের রুলিং-বিচক্ষণ ও সুচিন্তিত অভিমত
রাষ্ট্রের প্রধান দুই স্তম্ভ জাতীয় সংসদ এবং বিচার বিভাগের মুখোমুখি হওয়াকে সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত আখ্যায়িত করে ৮ জুন 'স্পিকার সুচিন্তিত মতামত দিন' শিরোনামের সমকালের সম্পাদকীয়তে 'এ প্রতিষ্ঠান দুটি যাতে আরও শক্তিশালী হয়ে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সহনশীল হয়ে কাজ করতে পারে' সে বিষয়ে স্পিকারের অবস্থান থেকে সুচিন্তিত
মতামত প্রদানের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছিল। স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট সোমবার জাতীয় সংসদে যে রুলিং প্রদান করেন তার মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদ ও উচ্চ আদালতের মধ্যে চলে আসা বিবদমান পরিস্থিতির নিষ্পত্তি ঘটবে বলে আমরা মনে করি। তিনি সহনশীলতা, পরিমিতিবোধ, দূরদর্শিতা ও বিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন, তাতে সন্দেহ নেই। তার মতামত যথার্থ হয়েছে। সাংবিধানিক সংকটের যে শঙ্কা ব্যক্ত হচ্ছিল সেটাও দূর হয়েছে। এ ধরনের উচ্চ অবস্থানে থেকে বক্তব্য ও অভিমত প্রদানে যে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা প্রয়োজন পড়ে, সেটা তিনি দেখাতে পেরেছেন।
প্রসঙ্গত, সড়ক ও জনপথ বিভাগের দখলে থাকা সুপ্রিম কোর্টের সম্পত্তি উচ্চ আদালতের রায়ে পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকারের বক্তব্যকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং আদালত অবমাননাকর বলে অভিহিত করলে তার প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় সংসদে বিষয়টি উত্থাপিত হয়। সংসদের আলোচনায় অংশ নিয়ে কোনো কোনো সংসদ সদস্য ওই বিচারপতির অপসারণ দাবি করেছেন। তা না হলে সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের অভিসংশন ক্ষমতা পুনরায় সংসদেই ফিরিয়ে আনা হবে বলেও মত ব্যক্ত হয়েছিল। স্পিকার এ দাবি প্রত্যাহারের জন্য সংসদ সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানান এবং এ বিষয়টি প্রধান বিচারপতির এখতিয়ারে ছেড়ে দিয়ে তাকেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একজন বিচারকের অশোভন
আচরণ রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ককে ব্যাহত করতে পারে না। সার্বিক বিবেচনায় এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ তার বিবেচনায় সমীচীন হতো না। একই সঙ্গে তার আহ্বান_ প্রত্যেককে নিজ নিজ
অবস্থান থেকে সংবিধান সমুন্নত রাখতে হবে।
সংসদ ও সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রের দুটি সাংবিধানিক স্তম্ভ। সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেন স্পিকারের রুলিং প্রসঙ্গে বলেছেন, 'এই দুটি সাংবিধানিক স্তম্ভের মধ্যে যেন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বিরোধ সৃষ্টি না হয়, সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। স্পিকার সম্পর্কে একজন বিচারপতির কিছু মন্তব্যকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করেননি, বরং পরিমিত ভাষায় সংসদের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছেন। সংবিধান নিয়ে যে একটা জটিল সমস্যা দেখা দিয়েছিল, স্পিকার তার একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান দিতে সক্ষম হয়েছেন।' এ অভিমত যথার্থ এবং সংশ্লিষ্ট সবার তা উপলব্ধিতে আসবে বলেই মনে করি। সাংবিধানিক স্তম্ভের মতো কোনো প্রতিষ্ঠানেরই এমন ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়, যাতে জনগণের কাছে মনে হতে পারে যে একটি অপরটিকে হেয় করার চেষ্টা করছে। এখানে কার এখতিয়ার বেশি, কার হাত কতটা লম্বা সে প্রসঙ্গ তোলা অর্থহীন। বরং পরমতসহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত তাদের কাছ থেকেই প্রত্যাশা করা হয়। জাতীয় সংসদে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রুলিং প্রদান করতে গিয়ে স্পিকার যথার্থভাবেই তেমন নজির স্থাপন করতে পেরেছেন, যা অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হতে পারে।
প্রসঙ্গত, সড়ক ও জনপথ বিভাগের দখলে থাকা সুপ্রিম কোর্টের সম্পত্তি উচ্চ আদালতের রায়ে পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকারের বক্তব্যকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং আদালত অবমাননাকর বলে অভিহিত করলে তার প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় সংসদে বিষয়টি উত্থাপিত হয়। সংসদের আলোচনায় অংশ নিয়ে কোনো কোনো সংসদ সদস্য ওই বিচারপতির অপসারণ দাবি করেছেন। তা না হলে সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের অভিসংশন ক্ষমতা পুনরায় সংসদেই ফিরিয়ে আনা হবে বলেও মত ব্যক্ত হয়েছিল। স্পিকার এ দাবি প্রত্যাহারের জন্য সংসদ সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানান এবং এ বিষয়টি প্রধান বিচারপতির এখতিয়ারে ছেড়ে দিয়ে তাকেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একজন বিচারকের অশোভন
আচরণ রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ককে ব্যাহত করতে পারে না। সার্বিক বিবেচনায় এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ তার বিবেচনায় সমীচীন হতো না। একই সঙ্গে তার আহ্বান_ প্রত্যেককে নিজ নিজ
অবস্থান থেকে সংবিধান সমুন্নত রাখতে হবে।
সংসদ ও সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রের দুটি সাংবিধানিক স্তম্ভ। সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেন স্পিকারের রুলিং প্রসঙ্গে বলেছেন, 'এই দুটি সাংবিধানিক স্তম্ভের মধ্যে যেন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বিরোধ সৃষ্টি না হয়, সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। স্পিকার সম্পর্কে একজন বিচারপতির কিছু মন্তব্যকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করেননি, বরং পরিমিত ভাষায় সংসদের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছেন। সংবিধান নিয়ে যে একটা জটিল সমস্যা দেখা দিয়েছিল, স্পিকার তার একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান দিতে সক্ষম হয়েছেন।' এ অভিমত যথার্থ এবং সংশ্লিষ্ট সবার তা উপলব্ধিতে আসবে বলেই মনে করি। সাংবিধানিক স্তম্ভের মতো কোনো প্রতিষ্ঠানেরই এমন ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়, যাতে জনগণের কাছে মনে হতে পারে যে একটি অপরটিকে হেয় করার চেষ্টা করছে। এখানে কার এখতিয়ার বেশি, কার হাত কতটা লম্বা সে প্রসঙ্গ তোলা অর্থহীন। বরং পরমতসহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত তাদের কাছ থেকেই প্রত্যাশা করা হয়। জাতীয় সংসদে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রুলিং প্রদান করতে গিয়ে স্পিকার যথার্থভাবেই তেমন নজির স্থাপন করতে পেরেছেন, যা অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হতে পারে।
No comments