পবিত্র কোরআনের আলো-কতিপয় হিংসাপরায়ণ ইহুদির ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার নির্দেশ
৯৮. ক্বুল ইয়া-আহ্লাল কিতাবি লিমা তাকফুরূনা বিআ-ইয়া-তিল্লাহি; ওয়াল্লাহু শাহীদুন আ'লা- মা-তা'লামূন।
৯৯. ক্বুল ইয়া-আহ্লাল কিতাবি লিমা তাসুদ্দূনা আ'ন ছাবীলিল্লাহি মান আ-মানা তাব্গূনাহা- ই'ওয়াজাঁও ওয়া আনতুম শুহাদা-; ওয়ামাল্লা-হু বিগা-ফিলিন আ'ম্মা- তা'মালূন।
৯৯. ক্বুল ইয়া-আহ্লাল কিতাবি লিমা তাসুদ্দূনা আ'ন ছাবীলিল্লাহি মান আ-মানা তাব্গূনাহা- ই'ওয়াজাঁও ওয়া আনতুম শুহাদা-; ওয়ামাল্লা-হু বিগা-ফিলিন আ'ম্মা- তা'মালূন।
১০০. ইয়া-আয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূ ইন তুত্বীঊ' ফারীক্বাম্ মিনাল্লাযীনা ঊতুল্ কিতাবা ইয়ারুদ্দূকুম বা'দা ঈমা-নিকুম কা-ফিরীন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৮-১০০]
অনুবাদ
৯৮. (হে নবী!) আপনি বলুন, হে আহলে কিতাব, তোমরা কেন জেনে-বুঝে আল্লাহর আয়াত অস্বীকার করো। তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তায়ালা তো এর ওপর সাক্ষী রয়েছেন।
৯৯. আপনি আরো বলুন, হে আহলে কিতাব, তোমরা কেন তাদের আল্লাহর পথ থেকে ফেরাতে চেষ্টা করছ, যারা ইমান এনেছে? তোমরা সোজা পথ বাঁকা করতে চাও, অথচ সত্য পথ সম্পর্কে তোমরা নিজেরাই অবগত আছ। আল্লাহ তায়ালা তোমাদের অপকর্ম সম্পর্কে মোটেও বেখবর নন।
১০০. হে ইমানদাররা! তোমরা যদি আহলে কিতাবের কোনো কোনো দলের কথা মেনে চলার পথ অবলম্বন করো, তবে মনে রেখো, এরা তোমাদের ইমান আনার পরও কাফের বানিয়ে দেবে।
ব্যাখ্যা
এসব আয়াত আহলে কিতাব_বিশেষ করে মদিনার ইহুদিদের উদ্দেশ করে নাজিল হয়েছে। ইহুদিরা তো আসলে জ্ঞানপাপী। তারা সবই জানত। হজরত মুহাম্মদ (সা.) যে আল্লাহর রাসুল এবং কোরআন যে আল্লাহর কিতাব তা তারা জানত। জেনে-বুঝেও তারা নিজেদের কায়েমি স্বার্থ বিনষ্ট হবে ভেবে রাসুল (সা.)-এর বিরোধিতা করছিল। এই সত্য বিষয়টা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমেই এ আয়াতগুলো শুরু করা হয়েছে। আয়াতগুলোর শানেনুজুল এ রকম_শাম্মান ইবনে কায়েস নামক জনৈক ইহুদি ও তার কিছু অনুসারী মুসলমানদের প্রতি ভীষণ হিংসা পোষণ করত। সে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মদিনায় হিজরতকে মোটেও সুনজরে দেখেনি এবং কোনো ইহুদির সঙ্গে নবী (সা.)-এর সুসম্পর্কও সহ্য করতে পারত না। মদিনায় ইহুদিরা ছাড়া আওস ও খাজরাজ নামে দুটি গোত্র বাস করত। এদের পরস্পরের মধ্যে সম্পর্ক মোটেও ভালো ছিল না; এরা ছিল চিরশত্রু। এদের মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহ প্রায়ই লেগে থাকত। অনেক সময় ইহুদিরা এদের শত্রুতার সুযোগ ব্যবহার করত। ইহুদিদের কোনো কোনো গোত্র আওসদের পক্ষে আবার কেউ কেউ খাজরাজদের পক্ষে কাজ করত। মদিনায় রাসুল (সা.)-এর আগমনের পর এই দুই গোত্রের চিরদিনের চলে আসা বিবাদ কিছুটা হলেও প্রশমিত হয়ে যায়। তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ মুসলমান হতে শুরু করে। রাসুল (সা.)-এর প্রভাবে দুই গোত্রের মানুষ একত্রে স্বাভাবিকভাবে চলতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। একবার শাম্মার ইবনে কায়েস আওস ও খাজরাজ গোত্রের লোকদের একতাবদ্ধভাবে একই মজলিসে সমবেত দেখতে পেয়ে হিংসার আগুনে ক্ষিপ্ত হলো।
অতঃপর সে উভয় গোত্রের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির লক্ষ্যে এক কৌশল ফাঁদল। সে এক ব্যক্তিকে বলল, উভয় গোত্রের মধ্যে যুদ্ধ চলাকালে রচিত আত্মশ্লাঘামূলক যেসব কবিতা রয়েছে তুমি তাদের মজলিসে উপস্থিত হয়ে সেসব কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়ে এসো। সে লোক তা-ই করল। এসব কবিতা শোনা মাত্র দুই গোত্রের মধ্যেই পুরনো হিংসার আগুন জ্বলে উঠল। তারা আবার যুদ্ধের হুঙ্কার ছাড়ল। এমনকি যুদ্ধের স্থান ও সময় নির্ধারিত হয়ে গেল। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াত নাজিল হয়েছে। ১০০ নম্বর আয়াতে যারা মুসলমান হয়েছে তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে তাদের কী করণীয়। অর্থাৎ মুসলমানদের উচিত হবে এসব বিভ্রান্ত আহলে কিতাবের উসকানিতে সাড়া না দেওয়া।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ
৯৮. (হে নবী!) আপনি বলুন, হে আহলে কিতাব, তোমরা কেন জেনে-বুঝে আল্লাহর আয়াত অস্বীকার করো। তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তায়ালা তো এর ওপর সাক্ষী রয়েছেন।
৯৯. আপনি আরো বলুন, হে আহলে কিতাব, তোমরা কেন তাদের আল্লাহর পথ থেকে ফেরাতে চেষ্টা করছ, যারা ইমান এনেছে? তোমরা সোজা পথ বাঁকা করতে চাও, অথচ সত্য পথ সম্পর্কে তোমরা নিজেরাই অবগত আছ। আল্লাহ তায়ালা তোমাদের অপকর্ম সম্পর্কে মোটেও বেখবর নন।
১০০. হে ইমানদাররা! তোমরা যদি আহলে কিতাবের কোনো কোনো দলের কথা মেনে চলার পথ অবলম্বন করো, তবে মনে রেখো, এরা তোমাদের ইমান আনার পরও কাফের বানিয়ে দেবে।
ব্যাখ্যা
এসব আয়াত আহলে কিতাব_বিশেষ করে মদিনার ইহুদিদের উদ্দেশ করে নাজিল হয়েছে। ইহুদিরা তো আসলে জ্ঞানপাপী। তারা সবই জানত। হজরত মুহাম্মদ (সা.) যে আল্লাহর রাসুল এবং কোরআন যে আল্লাহর কিতাব তা তারা জানত। জেনে-বুঝেও তারা নিজেদের কায়েমি স্বার্থ বিনষ্ট হবে ভেবে রাসুল (সা.)-এর বিরোধিতা করছিল। এই সত্য বিষয়টা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমেই এ আয়াতগুলো শুরু করা হয়েছে। আয়াতগুলোর শানেনুজুল এ রকম_শাম্মান ইবনে কায়েস নামক জনৈক ইহুদি ও তার কিছু অনুসারী মুসলমানদের প্রতি ভীষণ হিংসা পোষণ করত। সে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মদিনায় হিজরতকে মোটেও সুনজরে দেখেনি এবং কোনো ইহুদির সঙ্গে নবী (সা.)-এর সুসম্পর্কও সহ্য করতে পারত না। মদিনায় ইহুদিরা ছাড়া আওস ও খাজরাজ নামে দুটি গোত্র বাস করত। এদের পরস্পরের মধ্যে সম্পর্ক মোটেও ভালো ছিল না; এরা ছিল চিরশত্রু। এদের মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহ প্রায়ই লেগে থাকত। অনেক সময় ইহুদিরা এদের শত্রুতার সুযোগ ব্যবহার করত। ইহুদিদের কোনো কোনো গোত্র আওসদের পক্ষে আবার কেউ কেউ খাজরাজদের পক্ষে কাজ করত। মদিনায় রাসুল (সা.)-এর আগমনের পর এই দুই গোত্রের চিরদিনের চলে আসা বিবাদ কিছুটা হলেও প্রশমিত হয়ে যায়। তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ মুসলমান হতে শুরু করে। রাসুল (সা.)-এর প্রভাবে দুই গোত্রের মানুষ একত্রে স্বাভাবিকভাবে চলতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। একবার শাম্মার ইবনে কায়েস আওস ও খাজরাজ গোত্রের লোকদের একতাবদ্ধভাবে একই মজলিসে সমবেত দেখতে পেয়ে হিংসার আগুনে ক্ষিপ্ত হলো।
অতঃপর সে উভয় গোত্রের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির লক্ষ্যে এক কৌশল ফাঁদল। সে এক ব্যক্তিকে বলল, উভয় গোত্রের মধ্যে যুদ্ধ চলাকালে রচিত আত্মশ্লাঘামূলক যেসব কবিতা রয়েছে তুমি তাদের মজলিসে উপস্থিত হয়ে সেসব কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়ে এসো। সে লোক তা-ই করল। এসব কবিতা শোনা মাত্র দুই গোত্রের মধ্যেই পুরনো হিংসার আগুন জ্বলে উঠল। তারা আবার যুদ্ধের হুঙ্কার ছাড়ল। এমনকি যুদ্ধের স্থান ও সময় নির্ধারিত হয়ে গেল। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াত নাজিল হয়েছে। ১০০ নম্বর আয়াতে যারা মুসলমান হয়েছে তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে তাদের কী করণীয়। অর্থাৎ মুসলমানদের উচিত হবে এসব বিভ্রান্ত আহলে কিতাবের উসকানিতে সাড়া না দেওয়া।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments