হরতালে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ২৭০
নেতাদের মুক্তির দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপি জোটের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে পিকেটারদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, সংঘর্ষ ও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে রাজধানী ঢাকায় ঢিলেঢালাভাবে হরতাল পালিত হয়।
রাজশাহী ছাড়া অন্য বিভাগগুলোতে হরতালে মিছিল-পিকেটিং তেমন ছিল না। সর্বত্র ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারি ও অ্যাকশন। আগের কয়েকটি হরতালের মতোই রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ। এখান থেকে সকালে গ্রেপ্তার হন দলের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন। তাঁকে পল্টন থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত আগামী ২২ মে শুনানির দিন ধার্য করে তাঁকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলন করে হরতাল সফল হওয়ায় দেশবাসীকে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালনের সময় পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটা করে। কোথাও শান্তিপূর্ণ মিছিল-পিকেটিং করতে দেয়নি সরকারের পুলিশ বাহিনী। সারা দেশে দল ও জোটের ২৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন ঘটনায় তিন শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তিনি জানান, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১৮ দলীয় জোটের বৈঠকে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।
রাজধানীর চিত্র
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতা ও জোটের নেতারা কারাবন্দি থাকায় গতকাল তৃণমূল নেতা-কর্মীদের রাজপথে কম দেখা গেছে। মিছিল বের করার চেষ্টা করে পুলিশের লাঠিপেটায় রাস্তায় দাঁড়াতেই পারেননি দলের নেতা-কর্মীরা। রাজধানীর অন্যান্য স্থানের তুলনায় মিরপুর এলাকা ছিল অনেকটা উত্তপ্ত। সকালে মিরপুর ১ নম্বর সেকশনে দারুস সালাম সড়কের প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্রদল একটি মিছিল বের হয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। দ্রুত টহলরত পুলিশের একটি দল এসে লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর মিরপুর ২ নম্বরে জার্মান টেকনিক্যালের সামনে পরপর পাঁচটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। প্রায় একই সময়ে হরতালের সমর্থনে পল্লবী এলাকায় একটি মিছিল বের হয়। মিছিল থেকে কয়েকটি বাসে হামলা চালানো হয়। মুহূর্তেই এলাকাগুলোতে র্যাব-পুলিশের টহল বেড়ে যায়। স্পর্শকাতর স্থান চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকপোস্ট বসানো হয়।
পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখে বুধবার রাত থেকেই। পুরানা পল্টনের আশপাশের এলাকায়ও বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ বিএনপির কয়েকজন নেতা দলীয় কার্যালয়েই রাত কাটান। সকাল থেকে সেখানে কাউকে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেন।
সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি ও টেম্পো চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে মহাখালী, গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। বিমান, ট্রেন, লঞ্চ চলাচলও ছিল স্বাভাবিক। সচিবালয়সহ ব্যাংক ও অফিসপাড়ায়ও কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে হয়েছে। নগরীর বড় বড় বিপণিবিতান বন্ধ থাকলেও সেগুলোর সামনে ছিল পুলিশের পাহারা। অলিগলির ছোট দোকানপাট ও কাঁচাবাজার খোলা দেখা গেছে।
মহাখালী-বনানী : মহাখালী রেলক্রসিং-সংলগ্ন এলাকায় সকালের দিকে হরতালের সমর্থনে স্বল্পসংখ্যক লোক বিক্ষোভের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে। তেজগাঁও এলাকায় যুবদলকর্মীরা কিছু গাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়ে। দুপুর আড়াইটার দিকে গুলশান-১ নম্বরে ডিসিসি মার্কেটের সামনে হরতাল সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। গুলশান-বনানী এলাকায় কূটনীতিক এবং ভিআইপিদের বসবাস হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এ ঘটনা এড়াতে পারেনি।
হরতালের আগের রাতে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও গতকাল হরতালে পিকেটিং, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, শেরে বাংলানগর, তেজগাঁও, কোতোয়ালি, রমনা, খিলগাঁও ও মিরপুর থানায় মামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় আটক করা হয়েছে অন্তত ৫০ জনকে। তবে বিভিন্ন থানা সূত্রে পাওয়া তথ্য এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যের মধ্যে পার্থক্য দেখা গেছে। ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, হরতালের সময় রাজধানীতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ১৯ জনকে। রাজধানীতে গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে দুটি। ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে ছয়টি। অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে একটি ককটেল।
পুরান ঢাকায় নিরুপদ্রব হরতাল
হরতালে পুরান ঢাকায় কোনো অঘটন ঘটেনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ পুরান ঢাকার কোথাও পিকেটিংয়ের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। বিএনপির ডাকা আগের কয়েকটি হরতালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকলেও গতকাল তাঁদের দেখা মেলেনি। হরতালের কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সানাউল্লাহ মিয়া ও ইকবাল হোসেনের সমর্থকরা আদালতপাড়ায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশি বাধায় রাস্তায় বের হতে পারেনি। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হরতালের বিপক্ষে কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস থেকে একটি মিছিল বের করে। দুপুর ১২টার দিকে ৪২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এবং হরতালের বিপক্ষে লক্ষ্মীবাজার এলাকায় মিছিল বের করে। মিছিলটি বাহাদুর শাহ পার্ক, রায়সাহেব বাজারসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
শরিক দলগুলোকে দেখা যায়নি
রাজধানীর কোথাও পিকেটিং করতে দেখা যায়নি বিএনপি জোটের অন্যতম শরিক জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের। যাত্রাবাড়ী ও খিলগাঁওয়ে ঝটিকা মিছিলের চেষ্টাকালে পুলিশ শিবিরের ১১ জনকে আটক করেছে। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে এর আগে বিএনপির পরপর তিন দিনের হরতালেও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের তেমনভাবে রাজপথে দেখা যায়নি। এ ছাড়া গতকাল অন্যান্য শরিক দলের নেতা-কর্মীদেরও মাঠে দেখা যায়নি।
বিএনপির সংবাদ সম্মেলন
হরতাল শেষে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১৮ দলীয় জোটের বৈঠকে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, হরতালে সরকারের পুলিশ বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা বিরোধী দলের ওপর নিষ্ঠুর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়েছে। দলের কার্যালয় পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সরকার দেশে গণতন্ত্রের নামে স্বৈরশাসন চালাচ্ছে। এর পরও আমাদের আন্দোলন চলবেই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, মিজানুর রহমান মিনু, বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, মহানগর সদস্যসচিব আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সংসদ সদস্য রেহানা আখতার রানু, রাশেদা বেগম হীরা, নিলুফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলন করে হরতাল সফল হওয়ায় দেশবাসীকে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালনের সময় পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটা করে। কোথাও শান্তিপূর্ণ মিছিল-পিকেটিং করতে দেয়নি সরকারের পুলিশ বাহিনী। সারা দেশে দল ও জোটের ২৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন ঘটনায় তিন শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তিনি জানান, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১৮ দলীয় জোটের বৈঠকে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।
রাজধানীর চিত্র
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতা ও জোটের নেতারা কারাবন্দি থাকায় গতকাল তৃণমূল নেতা-কর্মীদের রাজপথে কম দেখা গেছে। মিছিল বের করার চেষ্টা করে পুলিশের লাঠিপেটায় রাস্তায় দাঁড়াতেই পারেননি দলের নেতা-কর্মীরা। রাজধানীর অন্যান্য স্থানের তুলনায় মিরপুর এলাকা ছিল অনেকটা উত্তপ্ত। সকালে মিরপুর ১ নম্বর সেকশনে দারুস সালাম সড়কের প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্রদল একটি মিছিল বের হয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। দ্রুত টহলরত পুলিশের একটি দল এসে লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর মিরপুর ২ নম্বরে জার্মান টেকনিক্যালের সামনে পরপর পাঁচটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। প্রায় একই সময়ে হরতালের সমর্থনে পল্লবী এলাকায় একটি মিছিল বের হয়। মিছিল থেকে কয়েকটি বাসে হামলা চালানো হয়। মুহূর্তেই এলাকাগুলোতে র্যাব-পুলিশের টহল বেড়ে যায়। স্পর্শকাতর স্থান চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকপোস্ট বসানো হয়।
পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখে বুধবার রাত থেকেই। পুরানা পল্টনের আশপাশের এলাকায়ও বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ বিএনপির কয়েকজন নেতা দলীয় কার্যালয়েই রাত কাটান। সকাল থেকে সেখানে কাউকে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেন।
সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি ও টেম্পো চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে মহাখালী, গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। বিমান, ট্রেন, লঞ্চ চলাচলও ছিল স্বাভাবিক। সচিবালয়সহ ব্যাংক ও অফিসপাড়ায়ও কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে হয়েছে। নগরীর বড় বড় বিপণিবিতান বন্ধ থাকলেও সেগুলোর সামনে ছিল পুলিশের পাহারা। অলিগলির ছোট দোকানপাট ও কাঁচাবাজার খোলা দেখা গেছে।
মহাখালী-বনানী : মহাখালী রেলক্রসিং-সংলগ্ন এলাকায় সকালের দিকে হরতালের সমর্থনে স্বল্পসংখ্যক লোক বিক্ষোভের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে। তেজগাঁও এলাকায় যুবদলকর্মীরা কিছু গাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়ে। দুপুর আড়াইটার দিকে গুলশান-১ নম্বরে ডিসিসি মার্কেটের সামনে হরতাল সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। গুলশান-বনানী এলাকায় কূটনীতিক এবং ভিআইপিদের বসবাস হওয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এ ঘটনা এড়াতে পারেনি।
হরতালের আগের রাতে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও গতকাল হরতালে পিকেটিং, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, শেরে বাংলানগর, তেজগাঁও, কোতোয়ালি, রমনা, খিলগাঁও ও মিরপুর থানায় মামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় আটক করা হয়েছে অন্তত ৫০ জনকে। তবে বিভিন্ন থানা সূত্রে পাওয়া তথ্য এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যের মধ্যে পার্থক্য দেখা গেছে। ডিএমপির তথ্য অনুযায়ী, হরতালের সময় রাজধানীতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ১৯ জনকে। রাজধানীতে গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে দুটি। ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে ছয়টি। অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে একটি ককটেল।
পুরান ঢাকায় নিরুপদ্রব হরতাল
হরতালে পুরান ঢাকায় কোনো অঘটন ঘটেনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ পুরান ঢাকার কোথাও পিকেটিংয়ের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। বিএনপির ডাকা আগের কয়েকটি হরতালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকলেও গতকাল তাঁদের দেখা মেলেনি। হরতালের কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সানাউল্লাহ মিয়া ও ইকবাল হোসেনের সমর্থকরা আদালতপাড়ায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশি বাধায় রাস্তায় বের হতে পারেনি। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হরতালের বিপক্ষে কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস থেকে একটি মিছিল বের করে। দুপুর ১২টার দিকে ৪২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এবং হরতালের বিপক্ষে লক্ষ্মীবাজার এলাকায় মিছিল বের করে। মিছিলটি বাহাদুর শাহ পার্ক, রায়সাহেব বাজারসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
শরিক দলগুলোকে দেখা যায়নি
রাজধানীর কোথাও পিকেটিং করতে দেখা যায়নি বিএনপি জোটের অন্যতম শরিক জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের। যাত্রাবাড়ী ও খিলগাঁওয়ে ঝটিকা মিছিলের চেষ্টাকালে পুলিশ শিবিরের ১১ জনকে আটক করেছে। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে এর আগে বিএনপির পরপর তিন দিনের হরতালেও জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের তেমনভাবে রাজপথে দেখা যায়নি। এ ছাড়া গতকাল অন্যান্য শরিক দলের নেতা-কর্মীদেরও মাঠে দেখা যায়নি।
বিএনপির সংবাদ সম্মেলন
হরতাল শেষে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১৮ দলীয় জোটের বৈঠকে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, হরতালে সরকারের পুলিশ বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা বিরোধী দলের ওপর নিষ্ঠুর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়েছে। দলের কার্যালয় পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সরকার দেশে গণতন্ত্রের নামে স্বৈরশাসন চালাচ্ছে। এর পরও আমাদের আন্দোলন চলবেই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, মিজানুর রহমান মিনু, বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, মহানগর সদস্যসচিব আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সংসদ সদস্য রেহানা আখতার রানু, রাশেদা বেগম হীরা, নিলুফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।
No comments