প্রযুক্তির চমকে... by পল্লব মোহাইমেন
ল্যাপটপটা আপনার হাতে আসার আগে কতবার খোলা, কতবার বন্ধ করা হয়েছিল জানেন? শুনে ঘাবড়ে যাবেন না—২৫ হাজারবার। বাজারে ছাড়ার আগে ল্যাপটপের ডালার যে কব্জা আছে, তার শক্তি পরীক্ষা এভাবে করে হিউলেট-প্যাকার্ড (এইচপি)। আবার ল্যাপটপের যে হুড়কো, সেটাও পরীক্ষা করা হয় ২৫ হাজারবার খুলে ও বন্ধ করে।
আর কি- বোর্ড? কি-বোর্ডের বোতামগুলো চাপা হয় ১০ লাখবার! যন্ত্র দিয়েই চলে এসব পরীক্ষা। নানা রকম পণ্য বাজারে ছাড়ার আগে কঠিন কঠিন সব পরীক্ষা করা হয় ল্যাবে। চাক্ষুষ করা গেল ৯ মে চীনের সাংহাই নগরে।
সাংহাই এক্সপো সেন্টারে ৯ ও ১০ মে হয়ে গেল এইচপির ‘গ্লোবাল ইনফ্লুয়েন্সার সামিট ২০১২’। পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে ২০০ জন সংবাদমাধ্যমকর্মী অংশ নেন এ আয়োজনে। যাঁরা প্রযুক্তিদুনিয়ার খবর রাখেন, তাঁরা জানেন ইএচপির দুটি শক্তিশালী বিভাগ প্রিন্টিং ও পারসোনাল সিস্টেম—এখন এক হয়ে গেছে। শক্তি আরও বেড়েছে, উদ্ভাবনী উদ্যোগও বেড়েছে। ভবিষ্যতের উপযোগী প্রযুক্তি তৈরি করা হচ্ছে। উদ্বোধনী আর সমাপনী বক্তব্যে এমনটাই জানালেন এইচপির প্রিন্টিং ও পারসোনাল সিস্টেম বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চিফ অব স্টাফ স্টিভ হফম্যান।
দুই দিনের এ আয়োজনে এইচপির নতুন পণ্য ছাড়ার ঘোষণা যেমন এল, তেমনি জানা গেল বর্তমানের প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবহার সম্পর্কে। আর পাওয়া গেল ভবিষ্যতের কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য কী ধরনের প্রযুক্তির পসরা সাজাচ্ছে এইচপি।
জমকালো আয়োজন
কংক্রিট-ইস্পাত আর কাচের অবকাঠামো নিয়ে বিশাল এক প্রদর্শনীপ্রাঙ্গণ সাংহাইয়ের এক্সপো সেন্টার। সেখানেই এইচপির প্রযুক্তি আয়োজন। মঞ্চের পেছনে বড় তিনটি ডিজিটাল পর্দা। গ্র্যাফিক্সের চমক। হঠাৎ ড্রাগনের আর্বিভাব। মঞ্চে চীনা শিল্পীদের ড্রাগন-নৃত্য আর পেছনে তিন পর্দাজুড়ে বিশালাকার ড্রাগনের মুখ। শুরু হয়ে গেল এইচপির সামিট। এইচপির কর্তাব্যক্তিরা জানালেন, গত বছর ১২ কোটি যন্ত্র সরবরাহ করেছে এইচপি।
সাধারণ ক্রেতা থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তা—এইচপি সব ধরনের গ্রাহকের কথা মাথায় রেখে পণ্য তৈরি করছে।
ছোট ব্যবসা থেকে বড় ব্যবসা পরিচালনার জন্য যেমন প্রযুক্তি দরকার, তা উদ্ভাবন করে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। জানা গেল, চীন এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় কম্পিউটার বাজার। তাই তো চীনকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এইচপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে হঠাৎ করেই ঢুকে গেল মস্ত এক গাড়ি। গাড়িটির শরীরে এইচপির অসংখ্য লোগো। সেটা থেকে নেমে এলেন ওয়েস্টকোস্ট কাস্টমসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রায়ান ফ্রেন্ডলিংহগস। রায়ানের কাজ হলো গাড়িকে তার মালিকের রুচি অনুযায়ী সাজিয়ে দেওয়া। চাকা ও আসন থেকে শুরু করে রং-ঢং—সবই পাল্টে দেন তিনি। আর এ কাজে ব্যবহার করেন এইচপির ওয়ার্কস্টেশন কম্পিউটার জি১।
ওয়ার্কস্টেশন দিয়ে অ্যানিমেশন ও চলচ্চিত্রের বিশেষ আবহ তৈরি করেন হলিউডেন ব্যান্ডিডেট ব্রাদার্সের পরিচালক ও প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা জ্যাকব রোজেনবার্গ।
তাঁর পরবর্তী ছবি ওয়েটিং ফর লাইটিং-এর শুটিং চীনেই হচ্ছে। হট হুইলসের খেলনাগুলোর চলচ্চিত্রায়ণ যেন এটি। বিশেষ আবহের পুরো কাজই করছেন এইচপির ওয়ার্কস্টেশন দিয়ে।
শুধু মনিটরটাই দৃশ্যমান। সঙ্গে কি-বোর্ড আর মাউস। এইচপির ওমনি পিসি। বিশ্বের প্রথম ২৭ ইঞ্চি মনিটরের ওমনি পিসি তৈরি করেছে এইচপি। নকশা নিয়ে যাঁদের কাজ, তাঁদের জন্য এটা আদর্শ এক কম্পিউটার। তেমনটা বোঝা গেল সাবেক মিস ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো আনিয়া আইয়ং-চির কথায়। তিনি এখন ফ্যাশন ডিজাইনার। সিঙ্গাপুর, হাওয়াইয়ের পর এখন নিউইয়র্কে ছাড়া হবে তাঁর ডিজাইন করা পোশাক। সেসবের কিছু নমুনাও দেখা গেল স্বল্প সময়ের এক ফ্যাশন শোতে।
সময়ের প্রযুক্তি
জমকালো এ আয়োজনে এইচপির কর্মকর্তা জন সলোমন, কেভিন ফ্রস্ট, ডমেনিক ম্যাককার্থি, জেমস মউটন, জিম জাফারানা, ক্যারল হেস প্রমুখ জানান এইচপির উদ্ভাবনী ও শক্তিশালী প্রযুক্তির কথা। ২৭ ইঞ্চির ওমনি পিসির কথা তো বলাই হলো। জানা গেল, পৃথিবীর প্রথম বহনযোগ্য অল-ইন-ওয়ান প্রিন্টার তৈরি করে এইচপি। অফিসজেট ১৫০ মডেলের এই প্রিন্টারে ফ্যাক্স, ফটোকপিয়ার ও স্ক্যানার রয়েছে। বহন করা যায় এ প্রিন্টার, এর ট্রেতে ৫০০ পৃষ্ঠা কাগজ রাখা যায়। একবার চার্জ দিলে ৫০০ পৃষ্ঠা প্রিন্টও নেওয়া যায়।
এইচপির এ আয়োজনে প্রযুক্তি সম্পর্কে যেমন ধারণা দেওয়া হলো, তেমনি নতুন পণ্য প্রদর্শনও করা হলো। দেখা গেল এইচপি জেড-১ ওয়ার্কস্টেশন। ওয়ার্কস্টেশনের সঙ্গে যেসব কম্পিউটার (ক্লায়েন্ট পিসি) যুক্ত থাকবে, সেসবে এখন আর আলাদা করে বিদ্যুতের সংযোগ লাগবে না। ইথারনেট নেটওয়ার্ক থেকেই দরকারি বিদ্যুৎ নেবে এসব ক্লায়েন্ট (স্মার্ট জিরো ক্লায়েন্ট)। খুচরা দোকানের বিকিকিনির হিসাব রাখার জন্য কোয়াড কোর প্রসেসরসহ এইচপির নতুন কম্পিউটার আরপি-৭। সব ধরনের কাজের জন্যই আছে প্রযুক্তির সমাধান।
বছরটা আল্ট্রাবুকের
স্টিভ হফম্যান জানান, এ বছর আল্ট্রাবুকের বছর। আল্ট্রাবুক আসলে ইন্টেলের প্রসেসরের একটা ব্র্যান্ড। বহনযোগ্য যন্ত্রের জন্য দুর্দান্ত এক প্রযুক্তি সমাধান। তবে প্রসেসর হলেই তো হবে না; সেটা ব্যবহার করে কম্পিউটার বানাতে হবে। তাই এইচপি। এবারে তৈরি হচ্ছে হালকা-পাতলা ও শক্তিশালী ল্যাপটপ কম্পিউটার। সাংহাইতে দেখানো হলো নতুন আল্ট্রাবুক ‘স্পেকট্রা এক্সটি’। এর নকশায় শক্তিটা টের পাওয়া যায়। একজন দৌড়বিদের দৌড় শুরুর ভঙ্গিটাই এর নকশায় ফুটে উঠেছে। এতে তথ্য রাখার জন্য আছে এসএসডি (সলিড স্টেট ড্রাইভ)। একবার চার্জ দিলে চলে আট ঘণ্টা। মডেমসহ বাড়তি প্রায় সব যন্ত্র লাগানোর ব্যবস্থাই এতে আছে। কোনো কনভার্টার বা আলাদা কিছু লাগবে না। এর ওজন ৩ দশমিক ৩ পাউন্ড। মাত্র ১৯ মিলিমিটার পুরু। এই আল্ট্রাবুক বাজার মাতাবে—এমনটিই আশা এইচপির।
প্রস্তুতি ভবিষ্যতের জন্য
ডিজিটাল যুগে মুদ্রণ কি আদৌ দরকারি? যুক্তরাষ্ট্রের স্প্রিং গ্রিন নামের একটা গ্রামে এ নিয়ে পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ চালিয়েছিল কনজিউমার ইনকরপোরেটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সেটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্র্যান্সি ট্যাংক জানালেন ‘ইমাজিন ওয়ার্ল্ড উইথ আউট প্রিন্ট’ নামের পরীক্ষার ফলাফল। গ্রামটিতে সাত দিনে কোনো ছাপা জিনিস কোথাও ছিল না।
দোকানে পণ্যের মোড়কে কোনো ছাপা হরফ নেই, প্রিন্ট করা কোনো পোশাক নেই। দেয়ালে নেই কোনো ছবি। দেখা গেল, সাত দিনে গ্রামের মানুষ বিরক্ত ও হতাশ। আসলে প্রিন্ট ছাড়া আমাদের জীবন অচল। ছাপা কোনো কিছু স্মরণশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে, জানালেন ট্যাংক। তাই এইচপির সিদ্ধান্ত, মুদ্রণের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন চলবে। ডিজিটাল মাধ্যমের পাশাপাশি সমান গুরুত্ব পাবে মুদ্রণমাধ্যমও।
বিশ্বের সাতটি দেশে আছে এইচপির গবেষণা ও উন্নয়নকেন্দ্র। ৫০০ গবেষক কাজ করছেন সেসব কেন্দ্রে। ভবিষ্যতের জন্য হালকা উপাদানের কম্পিউটার, পরিধেয় মনিটর ইত্যাদি তৈরির গবেষণা চলছে। ক্লাউড নেটওয়ার্কের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত করা যায় পারসোনাল কম্পিউটারকে, সে গবেষণাও চলছে।
ঝা-চকচকে সাংহাই নগরে এইচপির এই প্রযুক্তি আয়োজন আগামী দিনের কথাই মনে করিয়ে দেয়, যেখানে প্রযুক্তি আর স্টাইলের সমন্বয় থাকবে, সহজ, সাশ্রয়ী ও দ্রুতগতির প্রযুক্তি বাড়িয়ে দেবে জীবনযাপনের মান।
সাংহাই এক্সপো সেন্টারে ৯ ও ১০ মে হয়ে গেল এইচপির ‘গ্লোবাল ইনফ্লুয়েন্সার সামিট ২০১২’। পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে ২০০ জন সংবাদমাধ্যমকর্মী অংশ নেন এ আয়োজনে। যাঁরা প্রযুক্তিদুনিয়ার খবর রাখেন, তাঁরা জানেন ইএচপির দুটি শক্তিশালী বিভাগ প্রিন্টিং ও পারসোনাল সিস্টেম—এখন এক হয়ে গেছে। শক্তি আরও বেড়েছে, উদ্ভাবনী উদ্যোগও বেড়েছে। ভবিষ্যতের উপযোগী প্রযুক্তি তৈরি করা হচ্ছে। উদ্বোধনী আর সমাপনী বক্তব্যে এমনটাই জানালেন এইচপির প্রিন্টিং ও পারসোনাল সিস্টেম বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চিফ অব স্টাফ স্টিভ হফম্যান।
দুই দিনের এ আয়োজনে এইচপির নতুন পণ্য ছাড়ার ঘোষণা যেমন এল, তেমনি জানা গেল বর্তমানের প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবহার সম্পর্কে। আর পাওয়া গেল ভবিষ্যতের কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য কী ধরনের প্রযুক্তির পসরা সাজাচ্ছে এইচপি।
জমকালো আয়োজন
কংক্রিট-ইস্পাত আর কাচের অবকাঠামো নিয়ে বিশাল এক প্রদর্শনীপ্রাঙ্গণ সাংহাইয়ের এক্সপো সেন্টার। সেখানেই এইচপির প্রযুক্তি আয়োজন। মঞ্চের পেছনে বড় তিনটি ডিজিটাল পর্দা। গ্র্যাফিক্সের চমক। হঠাৎ ড্রাগনের আর্বিভাব। মঞ্চে চীনা শিল্পীদের ড্রাগন-নৃত্য আর পেছনে তিন পর্দাজুড়ে বিশালাকার ড্রাগনের মুখ। শুরু হয়ে গেল এইচপির সামিট। এইচপির কর্তাব্যক্তিরা জানালেন, গত বছর ১২ কোটি যন্ত্র সরবরাহ করেছে এইচপি।
সাধারণ ক্রেতা থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তা—এইচপি সব ধরনের গ্রাহকের কথা মাথায় রেখে পণ্য তৈরি করছে।
ছোট ব্যবসা থেকে বড় ব্যবসা পরিচালনার জন্য যেমন প্রযুক্তি দরকার, তা উদ্ভাবন করে পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। জানা গেল, চীন এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় কম্পিউটার বাজার। তাই তো চীনকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এইচপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে হঠাৎ করেই ঢুকে গেল মস্ত এক গাড়ি। গাড়িটির শরীরে এইচপির অসংখ্য লোগো। সেটা থেকে নেমে এলেন ওয়েস্টকোস্ট কাস্টমসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রায়ান ফ্রেন্ডলিংহগস। রায়ানের কাজ হলো গাড়িকে তার মালিকের রুচি অনুযায়ী সাজিয়ে দেওয়া। চাকা ও আসন থেকে শুরু করে রং-ঢং—সবই পাল্টে দেন তিনি। আর এ কাজে ব্যবহার করেন এইচপির ওয়ার্কস্টেশন কম্পিউটার জি১।
ওয়ার্কস্টেশন দিয়ে অ্যানিমেশন ও চলচ্চিত্রের বিশেষ আবহ তৈরি করেন হলিউডেন ব্যান্ডিডেট ব্রাদার্সের পরিচালক ও প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা জ্যাকব রোজেনবার্গ।
তাঁর পরবর্তী ছবি ওয়েটিং ফর লাইটিং-এর শুটিং চীনেই হচ্ছে। হট হুইলসের খেলনাগুলোর চলচ্চিত্রায়ণ যেন এটি। বিশেষ আবহের পুরো কাজই করছেন এইচপির ওয়ার্কস্টেশন দিয়ে।
শুধু মনিটরটাই দৃশ্যমান। সঙ্গে কি-বোর্ড আর মাউস। এইচপির ওমনি পিসি। বিশ্বের প্রথম ২৭ ইঞ্চি মনিটরের ওমনি পিসি তৈরি করেছে এইচপি। নকশা নিয়ে যাঁদের কাজ, তাঁদের জন্য এটা আদর্শ এক কম্পিউটার। তেমনটা বোঝা গেল সাবেক মিস ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো আনিয়া আইয়ং-চির কথায়। তিনি এখন ফ্যাশন ডিজাইনার। সিঙ্গাপুর, হাওয়াইয়ের পর এখন নিউইয়র্কে ছাড়া হবে তাঁর ডিজাইন করা পোশাক। সেসবের কিছু নমুনাও দেখা গেল স্বল্প সময়ের এক ফ্যাশন শোতে।
সময়ের প্রযুক্তি
জমকালো এ আয়োজনে এইচপির কর্মকর্তা জন সলোমন, কেভিন ফ্রস্ট, ডমেনিক ম্যাককার্থি, জেমস মউটন, জিম জাফারানা, ক্যারল হেস প্রমুখ জানান এইচপির উদ্ভাবনী ও শক্তিশালী প্রযুক্তির কথা। ২৭ ইঞ্চির ওমনি পিসির কথা তো বলাই হলো। জানা গেল, পৃথিবীর প্রথম বহনযোগ্য অল-ইন-ওয়ান প্রিন্টার তৈরি করে এইচপি। অফিসজেট ১৫০ মডেলের এই প্রিন্টারে ফ্যাক্স, ফটোকপিয়ার ও স্ক্যানার রয়েছে। বহন করা যায় এ প্রিন্টার, এর ট্রেতে ৫০০ পৃষ্ঠা কাগজ রাখা যায়। একবার চার্জ দিলে ৫০০ পৃষ্ঠা প্রিন্টও নেওয়া যায়।
এইচপির এ আয়োজনে প্রযুক্তি সম্পর্কে যেমন ধারণা দেওয়া হলো, তেমনি নতুন পণ্য প্রদর্শনও করা হলো। দেখা গেল এইচপি জেড-১ ওয়ার্কস্টেশন। ওয়ার্কস্টেশনের সঙ্গে যেসব কম্পিউটার (ক্লায়েন্ট পিসি) যুক্ত থাকবে, সেসবে এখন আর আলাদা করে বিদ্যুতের সংযোগ লাগবে না। ইথারনেট নেটওয়ার্ক থেকেই দরকারি বিদ্যুৎ নেবে এসব ক্লায়েন্ট (স্মার্ট জিরো ক্লায়েন্ট)। খুচরা দোকানের বিকিকিনির হিসাব রাখার জন্য কোয়াড কোর প্রসেসরসহ এইচপির নতুন কম্পিউটার আরপি-৭। সব ধরনের কাজের জন্যই আছে প্রযুক্তির সমাধান।
বছরটা আল্ট্রাবুকের
স্টিভ হফম্যান জানান, এ বছর আল্ট্রাবুকের বছর। আল্ট্রাবুক আসলে ইন্টেলের প্রসেসরের একটা ব্র্যান্ড। বহনযোগ্য যন্ত্রের জন্য দুর্দান্ত এক প্রযুক্তি সমাধান। তবে প্রসেসর হলেই তো হবে না; সেটা ব্যবহার করে কম্পিউটার বানাতে হবে। তাই এইচপি। এবারে তৈরি হচ্ছে হালকা-পাতলা ও শক্তিশালী ল্যাপটপ কম্পিউটার। সাংহাইতে দেখানো হলো নতুন আল্ট্রাবুক ‘স্পেকট্রা এক্সটি’। এর নকশায় শক্তিটা টের পাওয়া যায়। একজন দৌড়বিদের দৌড় শুরুর ভঙ্গিটাই এর নকশায় ফুটে উঠেছে। এতে তথ্য রাখার জন্য আছে এসএসডি (সলিড স্টেট ড্রাইভ)। একবার চার্জ দিলে চলে আট ঘণ্টা। মডেমসহ বাড়তি প্রায় সব যন্ত্র লাগানোর ব্যবস্থাই এতে আছে। কোনো কনভার্টার বা আলাদা কিছু লাগবে না। এর ওজন ৩ দশমিক ৩ পাউন্ড। মাত্র ১৯ মিলিমিটার পুরু। এই আল্ট্রাবুক বাজার মাতাবে—এমনটিই আশা এইচপির।
প্রস্তুতি ভবিষ্যতের জন্য
ডিজিটাল যুগে মুদ্রণ কি আদৌ দরকারি? যুক্তরাষ্ট্রের স্প্রিং গ্রিন নামের একটা গ্রামে এ নিয়ে পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ চালিয়েছিল কনজিউমার ইনকরপোরেটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সেটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্র্যান্সি ট্যাংক জানালেন ‘ইমাজিন ওয়ার্ল্ড উইথ আউট প্রিন্ট’ নামের পরীক্ষার ফলাফল। গ্রামটিতে সাত দিনে কোনো ছাপা জিনিস কোথাও ছিল না।
দোকানে পণ্যের মোড়কে কোনো ছাপা হরফ নেই, প্রিন্ট করা কোনো পোশাক নেই। দেয়ালে নেই কোনো ছবি। দেখা গেল, সাত দিনে গ্রামের মানুষ বিরক্ত ও হতাশ। আসলে প্রিন্ট ছাড়া আমাদের জীবন অচল। ছাপা কোনো কিছু স্মরণশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে, জানালেন ট্যাংক। তাই এইচপির সিদ্ধান্ত, মুদ্রণের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন চলবে। ডিজিটাল মাধ্যমের পাশাপাশি সমান গুরুত্ব পাবে মুদ্রণমাধ্যমও।
বিশ্বের সাতটি দেশে আছে এইচপির গবেষণা ও উন্নয়নকেন্দ্র। ৫০০ গবেষক কাজ করছেন সেসব কেন্দ্রে। ভবিষ্যতের জন্য হালকা উপাদানের কম্পিউটার, পরিধেয় মনিটর ইত্যাদি তৈরির গবেষণা চলছে। ক্লাউড নেটওয়ার্কের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত করা যায় পারসোনাল কম্পিউটারকে, সে গবেষণাও চলছে।
ঝা-চকচকে সাংহাই নগরে এইচপির এই প্রযুক্তি আয়োজন আগামী দিনের কথাই মনে করিয়ে দেয়, যেখানে প্রযুক্তি আর স্টাইলের সমন্বয় থাকবে, সহজ, সাশ্রয়ী ও দ্রুতগতির প্রযুক্তি বাড়িয়ে দেবে জীবনযাপনের মান।
No comments