কৈলাসটিলায় গ্যাস বেড়েছে, তবে তেল নিশ্চিত নয় by আরিফুজ্জামান তুহিন
সিলেটের কৈলাসটিলা গ্যাসক্ষেত্রে গ্যাসের মজুদ আগের হিসাবের চেয়ে বেশি বলে মনে করছেন বাপেক্সের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি এ গ্যাসক্ষেত্রে ত্রিমাত্রিক জরিপ শেষে তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন তাঁরা। জরিপে মাটির অনেক গভীরে গ্যাস ও তেলের ঘনীভূত (কনডেনসেট) অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া গেছে।
তবে এত গভীর থেকে বাণিজ্যিকভাবে তেল আদৌ তোলা যাবে কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন বাপেক্সের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, ত্রিমাত্রিক জরিপ থেকে সুফল পেতে হলে শিগগিরই কূপ খনন করতে হবে।
জানা যায়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের ত্রিমাত্রিক জরিপ দল (থ্রিডি সাইসমিক সার্ভেয়ার টিম) কৈলাসটিলা ও সিলেটের হরিপুর গ্যাসক্ষেত্র দুটির ৩৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শেষ করে গত ডিসেম্বর মাসে। এই তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাপেক্সের বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন, কৈলাসটিলা ও সিলেটের হরিপুরে গ্যাসের মজুদ বেড়েছে। তবে ঠিক কত পরিমাণ গ্যাসের মজুদ বেড়েছে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন একাধিক বিজ্ঞানী। বাপেক্সের অপারেশন পরিচালক আমজাদ হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'একটি থ্রিডি জরিপ হয়েছে। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, এখানে গ্যাসের মজুদ বেড়েছে। তবে ঠিক কত পরিমাণ গ্যাসের মজুদ বেড়েছে তা বলা সম্ভব নয়। কারণ, গ্যাসের প্রকৃত মজুদ জানতে কূপ খনন বা ড্রিলিং করতে হবে। এর আগে কিছুই বলা যাবে না।'
কেউ কেউ বলছেন, এখানে তেল পাওয়া গেছে, এ বিষয়ে বাপেক্সের মত কী- জানতে চাইলে আমজাদ হোসেন বলেন, 'সিলেট অঞ্চলে গ্যাসের সঙ্গে কনডেনসেট (গ্যাসের সঙ্গে তেল) আসে। এটা নতুন কিছু নয়। তেলের জন্য এর আগে সিলেটের অনেক জায়গায়ই অনুসন্ধান করা হয়েছে, তবে তেল পাওয়া যায়নি একমাত্র হরিপুর ছাড়া। সেই হরিপুরও কিন্তু কিছুদিন পর বন্ধ করে দিতে হয়েছে পানি আসায়। বলা যেতে পারে, এখানে একটা তেলের স্তরের প্রাথমিক ধারণা পাওয়া গেছে। তবে এত নিচ থেকে এই তেল আদৌ তোলা যাবে কি না তা এখনই বলা যাবে না। সবার আগে কূপ খনন করতে হবে।'
সে ক্ষেত্রে কি তেলের মজুদের বিষয়ে বাপেক্স কোনো ধারণা করতে পারে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'কূপ খনন ছাড়া তেলের মজুদের পরিমাণ কোনোভাবেই বলা সম্ভব নয়। যত শিগগির পারা যায় এখানে কূপ খনন করতে হবে। তারপর ধারণা করা যাবে এখানের তেল আদৌ বাণিজ্যিকভাবে তোলা যাবে কি না।'
বাপেক্স সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলে গ্যাসের সঙ্গে সাভাবিকভাবেই তেল পাওয়া যায়, তবে তা বাণিজ্যিকভাবে তোলা সম্ভব নয়। এর আগে ১৯৮৬ সালে সিলেটের হরিপুরে তেলের সন্ধান মেলে। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সেখান থেকে মোট তেল তোলা হয় ৫ দশমিক ৬১ লাখ ব্যারেল। একপর্যায়ে তেলের সঙ্গে পানি উঠতে থাকায় উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ করে কূপের মুখ সিল (বন্ধ) করে দেওয়া হয়।
বাপেক্সের কোনো কোনো বিজ্ঞানী মনে করছেন, কৈলাশটিলায় এর আগের ১ দশমিক ৯ টিসিএফ মজুদের সঙ্গে ৫০ শতাংশ মজুদ বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে মজুদ তিন টিসিএফের বেশি দাঁড়াতে পারে। তবে এ সবই অনুমান। এর আগে ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রশিদপুর ক্ষেত্র থেকে নতুন করে এক ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাস পাওয়ার ঘোষণা দেয় বাপেক্স।
বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অ্যাপ্রাইজাল অব গ্যাসফিল্ড (থ্রিডি সাইসমিক) শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ২০১০ সালের এপ্রিলের শেষে রশিদপুর, কৈলাশটিলা, তিতাস, বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্র এবং সিলেট অঞ্চলে গ্যাস অনুসন্ধানে ত্রিমাত্রিক জরিপকাজ করার জন্য সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাপেক্স চুক্তি করে। এ চুক্তির আওতায় বাপেক্স মোট এক হাজার ২৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক জরিপকাজ করবে। এতে প্রায় ১৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড লিমিটেড (বিজিএফসিএল) ও সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেড (এসজিএফএল) এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।
জানা গেছে, পাঁচটি ক্ষেত্রের মধ্যে রশিদপুরে ৩২৫, কৈলাশটিলায় ১৯০ এবং হরিপুরে ১৯০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় জরিপকাজ শেষ হয়েছে। ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রশিদপুরে গ্যাস পাওয়ার কথা ঘোষণা করে বাপেক্স। ওই সময় বলা হয়, রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। আরো প্রায় ৫ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বাপেক্স। এর মধ্যে গ্যাসক্ষেত্রে পশ্চিমাঞ্চলে ১ দশমিক ৮৭৩ টিসিএফ নিশ্চিত এবং পূর্বাঞ্চলে আরো ৯৬৭ দশমিক ২ বিসিএফ পাওয়ার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল। এর বাইরে পূর্বাঞ্চলে আরো ২ দশমিক ৪১৬ বিসিএফ গ্যাস পাওয়ারও আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর থেকে ২০১৫ সাল নাগাদ বাপেক্স সারা দেশের ছয়টি গ্যাসক্ষেত্রে এক হাজার ৮৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক জরিপের কাজ হাত নিয়েছে, যার মধ্যে চলতি বছর সুনেত্র ২৬০ বর্গকিলোমিটার, সুন্দলপুর-বেগমগঞ্জ ৪৪০ বর্গকিলোমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ ২৫০ বর্গকিলোমিটার, শাহবাজপুর ৬০০ বর্গকিলোমিটার, সেমুতাং ২৫০ বর্গকিলোমিটার ও সালদা নদীর ৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক জরিপ করবে।
জানা যায়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের ত্রিমাত্রিক জরিপ দল (থ্রিডি সাইসমিক সার্ভেয়ার টিম) কৈলাসটিলা ও সিলেটের হরিপুর গ্যাসক্ষেত্র দুটির ৩৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শেষ করে গত ডিসেম্বর মাসে। এই তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাপেক্সের বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন, কৈলাসটিলা ও সিলেটের হরিপুরে গ্যাসের মজুদ বেড়েছে। তবে ঠিক কত পরিমাণ গ্যাসের মজুদ বেড়েছে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন একাধিক বিজ্ঞানী। বাপেক্সের অপারেশন পরিচালক আমজাদ হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'একটি থ্রিডি জরিপ হয়েছে। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, এখানে গ্যাসের মজুদ বেড়েছে। তবে ঠিক কত পরিমাণ গ্যাসের মজুদ বেড়েছে তা বলা সম্ভব নয়। কারণ, গ্যাসের প্রকৃত মজুদ জানতে কূপ খনন বা ড্রিলিং করতে হবে। এর আগে কিছুই বলা যাবে না।'
কেউ কেউ বলছেন, এখানে তেল পাওয়া গেছে, এ বিষয়ে বাপেক্সের মত কী- জানতে চাইলে আমজাদ হোসেন বলেন, 'সিলেট অঞ্চলে গ্যাসের সঙ্গে কনডেনসেট (গ্যাসের সঙ্গে তেল) আসে। এটা নতুন কিছু নয়। তেলের জন্য এর আগে সিলেটের অনেক জায়গায়ই অনুসন্ধান করা হয়েছে, তবে তেল পাওয়া যায়নি একমাত্র হরিপুর ছাড়া। সেই হরিপুরও কিন্তু কিছুদিন পর বন্ধ করে দিতে হয়েছে পানি আসায়। বলা যেতে পারে, এখানে একটা তেলের স্তরের প্রাথমিক ধারণা পাওয়া গেছে। তবে এত নিচ থেকে এই তেল আদৌ তোলা যাবে কি না তা এখনই বলা যাবে না। সবার আগে কূপ খনন করতে হবে।'
সে ক্ষেত্রে কি তেলের মজুদের বিষয়ে বাপেক্স কোনো ধারণা করতে পারে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'কূপ খনন ছাড়া তেলের মজুদের পরিমাণ কোনোভাবেই বলা সম্ভব নয়। যত শিগগির পারা যায় এখানে কূপ খনন করতে হবে। তারপর ধারণা করা যাবে এখানের তেল আদৌ বাণিজ্যিকভাবে তোলা যাবে কি না।'
বাপেক্স সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলে গ্যাসের সঙ্গে সাভাবিকভাবেই তেল পাওয়া যায়, তবে তা বাণিজ্যিকভাবে তোলা সম্ভব নয়। এর আগে ১৯৮৬ সালে সিলেটের হরিপুরে তেলের সন্ধান মেলে। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সেখান থেকে মোট তেল তোলা হয় ৫ দশমিক ৬১ লাখ ব্যারেল। একপর্যায়ে তেলের সঙ্গে পানি উঠতে থাকায় উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ করে কূপের মুখ সিল (বন্ধ) করে দেওয়া হয়।
বাপেক্সের কোনো কোনো বিজ্ঞানী মনে করছেন, কৈলাশটিলায় এর আগের ১ দশমিক ৯ টিসিএফ মজুদের সঙ্গে ৫০ শতাংশ মজুদ বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে মজুদ তিন টিসিএফের বেশি দাঁড়াতে পারে। তবে এ সবই অনুমান। এর আগে ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রশিদপুর ক্ষেত্র থেকে নতুন করে এক ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাস পাওয়ার ঘোষণা দেয় বাপেক্স।
বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অ্যাপ্রাইজাল অব গ্যাসফিল্ড (থ্রিডি সাইসমিক) শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ২০১০ সালের এপ্রিলের শেষে রশিদপুর, কৈলাশটিলা, তিতাস, বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্র এবং সিলেট অঞ্চলে গ্যাস অনুসন্ধানে ত্রিমাত্রিক জরিপকাজ করার জন্য সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাপেক্স চুক্তি করে। এ চুক্তির আওতায় বাপেক্স মোট এক হাজার ২৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক জরিপকাজ করবে। এতে প্রায় ১৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ড লিমিটেড (বিজিএফসিএল) ও সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেড (এসজিএফএল) এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।
জানা গেছে, পাঁচটি ক্ষেত্রের মধ্যে রশিদপুরে ৩২৫, কৈলাশটিলায় ১৯০ এবং হরিপুরে ১৯০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় জরিপকাজ শেষ হয়েছে। ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রশিদপুরে গ্যাস পাওয়ার কথা ঘোষণা করে বাপেক্স। ওই সময় বলা হয়, রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। আরো প্রায় ৫ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বাপেক্স। এর মধ্যে গ্যাসক্ষেত্রে পশ্চিমাঞ্চলে ১ দশমিক ৮৭৩ টিসিএফ নিশ্চিত এবং পূর্বাঞ্চলে আরো ৯৬৭ দশমিক ২ বিসিএফ পাওয়ার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল। এর বাইরে পূর্বাঞ্চলে আরো ২ দশমিক ৪১৬ বিসিএফ গ্যাস পাওয়ারও আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর থেকে ২০১৫ সাল নাগাদ বাপেক্স সারা দেশের ছয়টি গ্যাসক্ষেত্রে এক হাজার ৮৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক জরিপের কাজ হাত নিয়েছে, যার মধ্যে চলতি বছর সুনেত্র ২৬০ বর্গকিলোমিটার, সুন্দলপুর-বেগমগঞ্জ ৪৪০ বর্গকিলোমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ ২৫০ বর্গকিলোমিটার, শাহবাজপুর ৬০০ বর্গকিলোমিটার, সেমুতাং ২৫০ বর্গকিলোমিটার ও সালদা নদীর ৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ত্রিমাত্রিক জরিপ করবে।
No comments