মানসম্মত চলচ্চিত্র প্রয়োজন বড়দের জন্যও by সৈয়দ সামিউস সালেহ
গত ২৩ জানুয়ারি ২০১০ ঢাকার ওসমানী মিলনায়তনে উদ্বোধন করা হলো তৃতীয় আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উত্সব। উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শিশুদের জন্য বছরে অন্তত একটি মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে ইতিহাস-সংস্কৃতি, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া সম্ভব। তিনি শিশুতোষ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের সুকোমল মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটানোর জন্য নির্মাতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিশুদের নরম মনে একটি ভালো গল্প, কবিতা ও গান ভালো চলচ্চিত্র যে সুন্দর ছাপ রাখে তা তাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ উপস্থিত সবার মন কাড়ে। প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, দেশের যা অবস্থা চলছে, তাতে প্রতিদিনই শিশু-কিশোরদের মন খারাপ থাকে। সেখানে বছরে যদি একটা মানসম্মত সিনেমা তৈরি হয়, তাতে অন্তত তিন ঘণ্টা শিশু-কিশোররা আনন্দে মেতে উঠবে।
আমাদের শিশু-কিশোর প্রতিদিন গড়ে দুই ঘণ্টা টেলিভিশনের পর্দায়, ঘণ্টাখানেক পত্রিকার পাতায় চোখ রাখে। ছোটদের অনুষ্ঠান, ছোটদের পাতায় শুধু তাদের দৃষ্টি সীমাবদ্ধ থাকে, তা নয়। এখন তারা খবরের প্রতিও আগ্রহী। এ খবর দেখতে গিয়ে নির্দিষ্ট খবরে গিয়ে তাদের দৃষ্টি স্থির হয়ে যায়। তারা অধিক মনোযোগী হয়। এ খবর তার বড় ভাইয়ের খবর। এ খবর তার বড় বোনের খবর।
বড় ভাই বড় বোন উচ্চশিক্ষা নিতে উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়। সে জন্য তাকে বাড়ি থেকে দূরে অবস্থান করতে হয়। বাবা-মা-ভাইবোন তার জন্য উত্কণ্ঠায় থাকে, আতঙ্কে থাকে। আতঙ্কে থাকার কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেতিবাচক রাজনীতি। যাকে ঘিরে বাবা-মা অনেক স্বপ্ন দেখে, ছোট ভাইবোনদের অনেক প্রত্যাশা থাকে, সার্টিফিকেট হাতে হাসতে হাসতে নয় তাকে ফিরতে হয় কফিনের ভেতর লাশ হয়ে। কেন তাকে লাশ হতে হয়। উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর তাকে কোনো না কোনো ছাত্র সংগঠনে নাম লেখাতে হয়। কেউ লেখায় ইচ্ছায়, কেউ অনিচ্ছায়। শুরু হয় মূল দলের লেজুড়বৃত্তি। প্রভাবশালী নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেষ্টা করতে থাকে। যারা সফল হয় তারা ধরাকে সরাজ্ঞান করে। শক্তিশালী ব্যাকিং পেয়ে তারা ছিনতাই, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও বোমাবাজি করে। গাড়ি ভাংচুর করে, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে, প্রতিপক্ষের সঙ্গে মারামারি করে। এসব কাজে শিক্ষক বাধা হয়ে দাঁড়ালে শিক্ষককে অপদস্ত করে, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে। তাদের হাতে বই ও কলম থাকে না। হাতে শোভা পায় অস্ত্র। এ অস্ত্র ব্যবহার হয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। আধিপত্য বিস্তারে করে নিজ দলের কারও বিরুদ্ধে।
অস্ত্র ব্যবহার করেও তারা নিরাপদে থাকে। অস্ত্রের মহড়া করে, অস্ত্র নিয়ে নিজ এলাকা পাহারা দিয়েও তারা নিরাপদে থাকে। পুলিশ তাদের কিছু বলে না।
গত ১৮ জানুয়ারির কথা ধরা যাক, ছাত্রদল সভাপতি আসে ঢাবি ক্যাম্পাসে। গুটিকয়েক পদবঞ্চিত বিদ্রোহী ছাত্রদলের সদস্যের সঙ্গে যোগ দেয় অসংখ্য অস্ত্রধারী। মিডিয়া খবর দেয় পুলিশের সামনেই তারা অস্ত্র ব্যবহার করে। আবার নিরাপদেই নিরাপদ জায়গায় ফিরে যায়।
২৯ জানুয়ারি সিলেট হজরত শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপে মারামারি হয়। আহত হলো ১০ ছাত্র। শিশু-কিশোরদের বড় বোনের কিছু খবর না দিলে লেখাটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
বিগত জোট সরকারের আমলের শেষদিকে বিরোধী দল নানা কর্মসূচি দেয়। সেসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে রাস্তায় নেমে আসে উচ্চতর শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়েরা। তারা পুলিশের সঙ্গে মারামারি করে। পুলিশের হাত থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে পুলিশের সঙ্গে মারামারিতে লিপ্ত থাকে। তাদের কেউ কেউ কুংফু স্টাইলে মারামারি করে। গাড়ি ভাংচুর করে।
সেই দৃশ্য ফিরে এসেছিল গত ২৮ জানুয়ারি ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজে। ইডেন মহিলা কলেজে ডাইনিং পদ্ধতির বদলে কেন্টিন সিস্টেম চালু করার ঘোষণা দেয়া হয়। এর জন্য ফেব্রুয়ারি থেকে ছাত্রীদের দ্বিগুণ টাকা ধার্য করা হয়। এ পদ্ধতির বিরোধিতা করে আসছিল সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফেডারেশন। তারা অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২৮ জানুয়ারি তারা অধ্যক্ষের অফিসে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগের ২০০ ছাত্রী তাদের ওপর হামলা করে। শুরু হয় চুলোচুলি, মারামারি। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এগুলো নিয়মিত ঘটনা। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সারা বছর ধরে চলছে।
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের অরাজক পরিস্থিতিতে শুধু পড়ালেখা নষ্ট হচ্ছে না, অভিভাবকরাও আতঙ্কিত হচ্ছেন।
আমার বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রীর এসব খবর অজানা নয়। পত্রিকা পড়েন। গত এক বছরে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে তাদের সরে আসতে তিনি অনেক কথা বলেছেন। ছাত্রলীগের ক্যাডাররা তার কথা শোনেনি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পর্কচ্যুত করেন। তাতে লাভ হয়নি কিছুই; তার প্রমাণ তো প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয় ছাত্রলীগের ক্যাডারদের যারা সহযোগিতা করছে তারা প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও শক্তিশালী।
মানুষ স্বভাবজাতভাবে অনুকরণপ্রিয়। শিশুদের মধ্যে অনুকরণের প্রভাবটা বেশি। সে যা দেখে, তাই করার চেষ্টা করে। তো এখন প্রতিদিন শিশুরা যা দেখছে তা কি তাদের জীবন গঠনে সহায়ক হবে? অবশ্য এতে সরকারের তেমন কিছু যায়-আসে বলে মনে হয় না—এমনই ভাবছে সাধারণ মানুষ। এমন ভাবনাও স্বাভাবিক। গত এক বছরে ছাত্রলীগের ছেলেরা যা করছে তা নজিরবিহীন। আরও নজিরবিহীন হলো, আক্ষরিক অর্থে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে সাধারণ মানুষ দেখেনি। উল্টো তারা দেখছে সবকিছুর দায় চাপানো হচ্ছে প্রতিপক্ষের ওপর।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, দেশে বিনিয়োগ নেই, ব্যাংকে অলস টাকার পাহাড় তৈরি হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়েই চলেছে। রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় দিনে গ্যাস পাওয়া যায় না। গ্যাসের অভাবে শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সিএনজি পাম্প স্টেশন চলছে না। বাংলাদেশ স্থবির হওয়ার পথে। সরব শুধু সরকারদলীয় মন্ত্রী এমপিরা। পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করার মতো বাক্য উচ্চারিত হচ্ছে তাদের। এ লক্ষণ শুভ নয়। এর জন্য কী করা উচিত মানুষ তা জানে। তাই বলছি, শিশুদের জন্য মানসম্মত সিনেমা তৈরির চেয়ে এ মুহূর্তে বেশি প্রয়োজন বড়দের বিশেষ করে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের জন্য মানসম্মত সিনেমা তৈরি করা। প্রধানমন্ত্রী শিশুদের জন্য যেমন সিনেমার কথা বলেছেন, তেমন সিনেমা।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ উপস্থিত সবার মন কাড়ে। প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, দেশের যা অবস্থা চলছে, তাতে প্রতিদিনই শিশু-কিশোরদের মন খারাপ থাকে। সেখানে বছরে যদি একটা মানসম্মত সিনেমা তৈরি হয়, তাতে অন্তত তিন ঘণ্টা শিশু-কিশোররা আনন্দে মেতে উঠবে।
আমাদের শিশু-কিশোর প্রতিদিন গড়ে দুই ঘণ্টা টেলিভিশনের পর্দায়, ঘণ্টাখানেক পত্রিকার পাতায় চোখ রাখে। ছোটদের অনুষ্ঠান, ছোটদের পাতায় শুধু তাদের দৃষ্টি সীমাবদ্ধ থাকে, তা নয়। এখন তারা খবরের প্রতিও আগ্রহী। এ খবর দেখতে গিয়ে নির্দিষ্ট খবরে গিয়ে তাদের দৃষ্টি স্থির হয়ে যায়। তারা অধিক মনোযোগী হয়। এ খবর তার বড় ভাইয়ের খবর। এ খবর তার বড় বোনের খবর।
বড় ভাই বড় বোন উচ্চশিক্ষা নিতে উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়। সে জন্য তাকে বাড়ি থেকে দূরে অবস্থান করতে হয়। বাবা-মা-ভাইবোন তার জন্য উত্কণ্ঠায় থাকে, আতঙ্কে থাকে। আতঙ্কে থাকার কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেতিবাচক রাজনীতি। যাকে ঘিরে বাবা-মা অনেক স্বপ্ন দেখে, ছোট ভাইবোনদের অনেক প্রত্যাশা থাকে, সার্টিফিকেট হাতে হাসতে হাসতে নয় তাকে ফিরতে হয় কফিনের ভেতর লাশ হয়ে। কেন তাকে লাশ হতে হয়। উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর তাকে কোনো না কোনো ছাত্র সংগঠনে নাম লেখাতে হয়। কেউ লেখায় ইচ্ছায়, কেউ অনিচ্ছায়। শুরু হয় মূল দলের লেজুড়বৃত্তি। প্রভাবশালী নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেষ্টা করতে থাকে। যারা সফল হয় তারা ধরাকে সরাজ্ঞান করে। শক্তিশালী ব্যাকিং পেয়ে তারা ছিনতাই, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও বোমাবাজি করে। গাড়ি ভাংচুর করে, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে, প্রতিপক্ষের সঙ্গে মারামারি করে। এসব কাজে শিক্ষক বাধা হয়ে দাঁড়ালে শিক্ষককে অপদস্ত করে, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে। তাদের হাতে বই ও কলম থাকে না। হাতে শোভা পায় অস্ত্র। এ অস্ত্র ব্যবহার হয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। আধিপত্য বিস্তারে করে নিজ দলের কারও বিরুদ্ধে।
অস্ত্র ব্যবহার করেও তারা নিরাপদে থাকে। অস্ত্রের মহড়া করে, অস্ত্র নিয়ে নিজ এলাকা পাহারা দিয়েও তারা নিরাপদে থাকে। পুলিশ তাদের কিছু বলে না।
গত ১৮ জানুয়ারির কথা ধরা যাক, ছাত্রদল সভাপতি আসে ঢাবি ক্যাম্পাসে। গুটিকয়েক পদবঞ্চিত বিদ্রোহী ছাত্রদলের সদস্যের সঙ্গে যোগ দেয় অসংখ্য অস্ত্রধারী। মিডিয়া খবর দেয় পুলিশের সামনেই তারা অস্ত্র ব্যবহার করে। আবার নিরাপদেই নিরাপদ জায়গায় ফিরে যায়।
২৯ জানুয়ারি সিলেট হজরত শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপে মারামারি হয়। আহত হলো ১০ ছাত্র। শিশু-কিশোরদের বড় বোনের কিছু খবর না দিলে লেখাটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
বিগত জোট সরকারের আমলের শেষদিকে বিরোধী দল নানা কর্মসূচি দেয়। সেসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে রাস্তায় নেমে আসে উচ্চতর শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়েরা। তারা পুলিশের সঙ্গে মারামারি করে। পুলিশের হাত থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে পুলিশের সঙ্গে মারামারিতে লিপ্ত থাকে। তাদের কেউ কেউ কুংফু স্টাইলে মারামারি করে। গাড়ি ভাংচুর করে।
সেই দৃশ্য ফিরে এসেছিল গত ২৮ জানুয়ারি ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজে। ইডেন মহিলা কলেজে ডাইনিং পদ্ধতির বদলে কেন্টিন সিস্টেম চালু করার ঘোষণা দেয়া হয়। এর জন্য ফেব্রুয়ারি থেকে ছাত্রীদের দ্বিগুণ টাকা ধার্য করা হয়। এ পদ্ধতির বিরোধিতা করে আসছিল সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফেডারেশন। তারা অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২৮ জানুয়ারি তারা অধ্যক্ষের অফিসে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগের ২০০ ছাত্রী তাদের ওপর হামলা করে। শুরু হয় চুলোচুলি, মারামারি। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এগুলো নিয়মিত ঘটনা। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সারা বছর ধরে চলছে।
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের অরাজক পরিস্থিতিতে শুধু পড়ালেখা নষ্ট হচ্ছে না, অভিভাবকরাও আতঙ্কিত হচ্ছেন।
আমার বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রীর এসব খবর অজানা নয়। পত্রিকা পড়েন। গত এক বছরে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে তাদের সরে আসতে তিনি অনেক কথা বলেছেন। ছাত্রলীগের ক্যাডাররা তার কথা শোনেনি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পর্কচ্যুত করেন। তাতে লাভ হয়নি কিছুই; তার প্রমাণ তো প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয় ছাত্রলীগের ক্যাডারদের যারা সহযোগিতা করছে তারা প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও শক্তিশালী।
মানুষ স্বভাবজাতভাবে অনুকরণপ্রিয়। শিশুদের মধ্যে অনুকরণের প্রভাবটা বেশি। সে যা দেখে, তাই করার চেষ্টা করে। তো এখন প্রতিদিন শিশুরা যা দেখছে তা কি তাদের জীবন গঠনে সহায়ক হবে? অবশ্য এতে সরকারের তেমন কিছু যায়-আসে বলে মনে হয় না—এমনই ভাবছে সাধারণ মানুষ। এমন ভাবনাও স্বাভাবিক। গত এক বছরে ছাত্রলীগের ছেলেরা যা করছে তা নজিরবিহীন। আরও নজিরবিহীন হলো, আক্ষরিক অর্থে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে সাধারণ মানুষ দেখেনি। উল্টো তারা দেখছে সবকিছুর দায় চাপানো হচ্ছে প্রতিপক্ষের ওপর।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি, দেশে বিনিয়োগ নেই, ব্যাংকে অলস টাকার পাহাড় তৈরি হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়েই চলেছে। রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকায় দিনে গ্যাস পাওয়া যায় না। গ্যাসের অভাবে শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সিএনজি পাম্প স্টেশন চলছে না। বাংলাদেশ স্থবির হওয়ার পথে। সরব শুধু সরকারদলীয় মন্ত্রী এমপিরা। পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করার মতো বাক্য উচ্চারিত হচ্ছে তাদের। এ লক্ষণ শুভ নয়। এর জন্য কী করা উচিত মানুষ তা জানে। তাই বলছি, শিশুদের জন্য মানসম্মত সিনেমা তৈরির চেয়ে এ মুহূর্তে বেশি প্রয়োজন বড়দের বিশেষ করে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের জন্য মানসম্মত সিনেমা তৈরি করা। প্রধানমন্ত্রী শিশুদের জন্য যেমন সিনেমার কথা বলেছেন, তেমন সিনেমা।
No comments