তদন্তের স্বার্থে সুরঞ্জিতের পদত্যাগ জরুরি ছিল by ড. ইফতেখারুজ্জামান
দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে আগে প্রয়োজন গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থা। দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক সরকারের কোনো বিকল্প নেই। দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে যেসব গুণাবলি বা যোগ্যতা প্রয়োজন তা কেবল গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থাতেই খুঁজে পাওয়া যাবে।
গণতান্ত্রিক সরকারের মধ্যে জবাবদিহিতা থাকা প্রয়োজন বিধায় সেখানে দুর্নীতি হওয়ার সুযোগ থাকে কম। আবার স্বচ্ছতার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে পারে গণতান্ত্রিক সরকারই। কোনো দেশে যদি স্বৈরশাসক কিংবা অগণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকে, তাহলে সেখানে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব হয় না। আবার গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও কোথাও কোথাও দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নাও হতে পারে। গণতান্ত্রিক সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে সেই সরকারও দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে পারবে না।
দুর্নীতি যেই করুক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে গণতান্ত্রিক সরকারকেই। দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হলে গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন। দুর্নীতি যে শাস্তিযোগ্য অপরাধ তা যদি সাধারণ মানুষের জানা থাকে, তাহলে দুর্নীতি করতে কেউ সাহস পাবে না।
দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কিছু শক্তি আছে, সেগুলোকে আরো ক্ষমতা দিতে হবে। যেমন- পার্লামেন্ট। সেখানে আইন প্রণেতাদের নিয়মিত যেতে হবে। পার্লামেন্টে কথা বলার সুযোগ থাকতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সততা তৈরির ক্ষেত্রেও গণমাধ্যম বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। এর জন্য গণমাধ্যমকে আরো এগিয়ে আসতে হবে। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা প্রমাণ করে দেয়, জনমত তৈরি করলে অনেক কিছুই হয়। জনগণকে সোচ্চার হতে হবে, তারা দাবি তুলতে পারে, যাতে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করার জন্য সরকার এগিয়ে আসে। বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতাও প্রয়োজন। দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে। আমাদের এখানে বিচারব্যবস্থায় প্রভাব খাটানো হয় বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ আছে। রাজনৈতিক কোনো প্রভাব সেখানে থাকা উচিত নয়।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পদত্যাগের বিষয়টি ইতিবাচক। এর দুটি দিক আছে। একটি হচ্ছে, নৈতিক দিক দিয়ে তিনি একটি যথাযথ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য একটি বিরল দৃষ্টান্ত। সরকারি দল ও বিরোধী দলের জন্য এটি অবশ্যই একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। দ্বিতীয়ত, তদন্তের স্বার্থে এই পদত্যাগ জরুরি ছিল। তিনি পদত্যাগ করায় এখন সুস্থ তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা কমে আসবে। এ কারণে আমরা এ পদত্যাগকে স্বাগত জানাই। তবে আমরা দুটি বিষয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। একটি হলো, অস্বাভাবিকভাবে ঘটনার গাড়িচালকের উধাও হয়ে যাওয়া। সে কোথায় আছে, কী অবস্থায় আছে, কাদের হেফাজতে আছে তা জবাব দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। তার বিষয়টি আমরা তথা দেশের মানুষ জানতে চায়। দ্বিতীয়ত, বিজিবির ঘটনাগুলো সুস্পষ্ট নয়। এটা সুস্পষ্ট করা দরকার। একটি বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার যে কেন বিজিবির মতো একটি ডিসিপ্লিন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তাদের আইনি ব্যবস্থার হাতে না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো এবং কারা ছেড়ে দিল। বিজিবির চত্বরে ঢোকা এবং সেখানকার ঘটনাবলি এখনো রহস্যাবৃত্ত হয়ে আছে। সেটা পরিষ্কার করা জরুরি।
গ্রন্থনা : মোস্তফা হোসেইন ও মহসীন হাবিব
দুর্নীতি যেই করুক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে গণতান্ত্রিক সরকারকেই। দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হলে গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন। দুর্নীতি যে শাস্তিযোগ্য অপরাধ তা যদি সাধারণ মানুষের জানা থাকে, তাহলে দুর্নীতি করতে কেউ সাহস পাবে না।
দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কিছু শক্তি আছে, সেগুলোকে আরো ক্ষমতা দিতে হবে। যেমন- পার্লামেন্ট। সেখানে আইন প্রণেতাদের নিয়মিত যেতে হবে। পার্লামেন্টে কথা বলার সুযোগ থাকতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সততা তৈরির ক্ষেত্রেও গণমাধ্যম বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। এর জন্য গণমাধ্যমকে আরো এগিয়ে আসতে হবে। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা প্রমাণ করে দেয়, জনমত তৈরি করলে অনেক কিছুই হয়। জনগণকে সোচ্চার হতে হবে, তারা দাবি তুলতে পারে, যাতে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করার জন্য সরকার এগিয়ে আসে। বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতাও প্রয়োজন। দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে। আমাদের এখানে বিচারব্যবস্থায় প্রভাব খাটানো হয় বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ আছে। রাজনৈতিক কোনো প্রভাব সেখানে থাকা উচিত নয়।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পদত্যাগের বিষয়টি ইতিবাচক। এর দুটি দিক আছে। একটি হচ্ছে, নৈতিক দিক দিয়ে তিনি একটি যথাযথ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য একটি বিরল দৃষ্টান্ত। সরকারি দল ও বিরোধী দলের জন্য এটি অবশ্যই একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। দ্বিতীয়ত, তদন্তের স্বার্থে এই পদত্যাগ জরুরি ছিল। তিনি পদত্যাগ করায় এখন সুস্থ তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা কমে আসবে। এ কারণে আমরা এ পদত্যাগকে স্বাগত জানাই। তবে আমরা দুটি বিষয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। একটি হলো, অস্বাভাবিকভাবে ঘটনার গাড়িচালকের উধাও হয়ে যাওয়া। সে কোথায় আছে, কী অবস্থায় আছে, কাদের হেফাজতে আছে তা জবাব দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। তার বিষয়টি আমরা তথা দেশের মানুষ জানতে চায়। দ্বিতীয়ত, বিজিবির ঘটনাগুলো সুস্পষ্ট নয়। এটা সুস্পষ্ট করা দরকার। একটি বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার যে কেন বিজিবির মতো একটি ডিসিপ্লিন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তাদের আইনি ব্যবস্থার হাতে না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো এবং কারা ছেড়ে দিল। বিজিবির চত্বরে ঢোকা এবং সেখানকার ঘটনাবলি এখনো রহস্যাবৃত্ত হয়ে আছে। সেটা পরিষ্কার করা জরুরি।
গ্রন্থনা : মোস্তফা হোসেইন ও মহসীন হাবিব
No comments