দাবি পূরণ না হলে কয়লা তোলা বন্ধঃ শিগগির ফয়সালা করুন
খনিজ কয়লাকে বলা হয় মাটির নিচে জমে থাকা ‘কালো সোনা’। বাংলাদেশ প্রাকৃতিকভাবে এই কালো সোনার মালিক। দেশে এখন পাঁচটি আবিষ্কৃত কয়লা খনি রয়েছে। এর মধ্যে কয়লা তোলা হচ্ছে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে।
অন্যান্য খনি থেকে কয়লা তোলা নিয়ে কথাবার্তা চলছে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে। কিন্তু বড়পুকুরিয়া খনি থেকে বেশি পরিমাণ কয়লা উত্তোলনের কার্যক্রম নেয়ার পর সেখানে দেখা দিয়েছে নতুন বিড়ম্বনা। ফলে দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি ঘাটতি পূরণে বেশি করে কয়লা তোলার উদ্যোগ আপাতত ঝিমিয়ে পড়েছে অনেকখানি। বঞ্চিত শ্রমিক ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর আন্দোলনের মুখে দেখা দিয়েছে কয়লা উত্তোলন বন্ধের আশঙ্কা। এ ব্যাপারে সরকার এখনও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
জানা গেছে, এর আগে প্রফিট বোনাসের দাবিতে কয়লা খনির ১১শ’ বাংলাদেশী শ্রমিক এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী ক্ষতিপূরণের দাবিতে যে আন্দোলন করে আসছিল, তা আরও বড় আকার নিয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি মেনে নেয়ার আলটিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। না হলে তারা ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দেবেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ২৭ জানুয়ারি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আন্দোলনরত শ্রমিক ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কিন্তু তাতে সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি। এ অবস্থায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি জানিয়েছেন, সমস্যার সমাধান না হলে বাংলাদেশী শ্রমিকরা লাগাতার ধর্মঘটে যাবে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সমস্যার সমাধান না পেলে কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। তবে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি গত বছরের ৩২৪ কোটি টাকার মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী তথা চুক্তি মোতাবেক ওই এলাকায় একটি ‘খনি নগরী’ গড়ে তোলার জন্য এরই মধ্যে জরিপ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে। অনুমোদনের জন্য তা পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। কোল মাইনিং কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, খনির দুটি ফেস থেকে কয়লা উত্তোলন সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ১১০৫ ফেস থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে। আন্দোলনের কারণে এই ফেসে উত্তোলনের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই ফেসের কয়লা তোলা বন্ধ হলে অতিরিক্ত গ্যাস নির্গমনের ফলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে বলেও কর্তৃপক্ষ মনে করছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কার্যক্রম শুরু হয়। ক্রমাগত লোকসান দিয়ে এটি লাভের মুখ দেখতে শুরু করে ২০০৯ সালের শেষ দিক থেকে। আর তখন থেকেই আন্দোলন অঙ্কুরিত হয়ে বর্তমান অবস্থায় এসে ঠেকেছে। বড়পুকুরিয়া খনিতে মোট কয়লা মজুতের পরিমাণ প্রায় ৩৯ কোটি মেট্রিক টন। জানা গেছে, এই কয়লা দিয়ে মূলত ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রটি চলবে। এছাড়া সরকার ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন চারটি বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে দেশে বাড়তি কয়লা পাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই। কিন্তু সম্ভাবনার হিসাব সবসময়ই অনিশ্চিত, খনিজ দ্রব্য উত্তোলনই হচ্ছে প্রাথমিক সাফল্য। সেক্ষেত্রে কোনো প্রকার আশঙ্কাকে জিইয়ে রাখা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু কয়লাই নয়, আমাদের মাটিতে পিট কয়লা, প্রচুর চুনাপাথর, হোয়াইট ক্লে, চায়না ক্লে, বালিতে মিশ্রিত জিরকনসহ মূল্যবান মিনারেল ইত্যাদি রয়েছে। সেগুলো সংগ্রহ করে কাজে লাগাতে পারলে আমাদের সার্বিক উন্নয়ন নতুন দিকে মোড় নেবে—এমন প্রত্যাশা মোটেই অবান্তর নয়। কয়লা উত্তোলনের ধারা অব্যাহত রেখেই সেই ব্যাপক কর্মযজ্ঞের দরজা উন্মুক্ত করতে হবে। এ বিবেচনায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলনজনিত যে জটিলতা দেখা দিয়েছে, তার সমাধান করতে দেরি করার অবকাশ নেই। কয়লা তোলা একটি শ্রমঘন কাজ। এ কাজে যারা নিয়োজিত তারা ন্যায্যপ্রাপ্তি পেতে এত দরকষাকষিতে যাবেন, এটা প্রত্যাশিত নয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এ ব্যাপারে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাও রয়েছে। জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে, নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য খনি নগর বা কোল মাইনিং সিটি গড়ে তোলার কথাও বলা হয়েছে। এখন শুধু অনুমোদনের অপেক্ষা। এই অনুমোদন যত শিগগির হবে, কয়লা উত্তোলন কর্মকাণ্ড তত বেগবান হবে। এ লক্ষ্যে সরকারকে অবিলম্বে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একটি স্থায়ী ফয়সালায় পৌঁছানোর বিকল্প নেই।
জানা গেছে, এর আগে প্রফিট বোনাসের দাবিতে কয়লা খনির ১১শ’ বাংলাদেশী শ্রমিক এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী ক্ষতিপূরণের দাবিতে যে আন্দোলন করে আসছিল, তা আরও বড় আকার নিয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি মেনে নেয়ার আলটিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। না হলে তারা ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দেবেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ২৭ জানুয়ারি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আন্দোলনরত শ্রমিক ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কিন্তু তাতে সমস্যার কোনো সুরাহা হয়নি। এ অবস্থায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি জানিয়েছেন, সমস্যার সমাধান না হলে বাংলাদেশী শ্রমিকরা লাগাতার ধর্মঘটে যাবে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সমস্যার সমাধান না পেলে কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। তবে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি গত বছরের ৩২৪ কোটি টাকার মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী তথা চুক্তি মোতাবেক ওই এলাকায় একটি ‘খনি নগরী’ গড়ে তোলার জন্য এরই মধ্যে জরিপ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে। অনুমোদনের জন্য তা পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। কোল মাইনিং কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, খনির দুটি ফেস থেকে কয়লা উত্তোলন সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ১১০৫ ফেস থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে। আন্দোলনের কারণে এই ফেসে উত্তোলনের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই ফেসের কয়লা তোলা বন্ধ হলে অতিরিক্ত গ্যাস নির্গমনের ফলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে বলেও কর্তৃপক্ষ মনে করছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কার্যক্রম শুরু হয়। ক্রমাগত লোকসান দিয়ে এটি লাভের মুখ দেখতে শুরু করে ২০০৯ সালের শেষ দিক থেকে। আর তখন থেকেই আন্দোলন অঙ্কুরিত হয়ে বর্তমান অবস্থায় এসে ঠেকেছে। বড়পুকুরিয়া খনিতে মোট কয়লা মজুতের পরিমাণ প্রায় ৩৯ কোটি মেট্রিক টন। জানা গেছে, এই কয়লা দিয়ে মূলত ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্রটি চলবে। এছাড়া সরকার ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন চারটি বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে দেশে বাড়তি কয়লা পাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই। কিন্তু সম্ভাবনার হিসাব সবসময়ই অনিশ্চিত, খনিজ দ্রব্য উত্তোলনই হচ্ছে প্রাথমিক সাফল্য। সেক্ষেত্রে কোনো প্রকার আশঙ্কাকে জিইয়ে রাখা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু কয়লাই নয়, আমাদের মাটিতে পিট কয়লা, প্রচুর চুনাপাথর, হোয়াইট ক্লে, চায়না ক্লে, বালিতে মিশ্রিত জিরকনসহ মূল্যবান মিনারেল ইত্যাদি রয়েছে। সেগুলো সংগ্রহ করে কাজে লাগাতে পারলে আমাদের সার্বিক উন্নয়ন নতুন দিকে মোড় নেবে—এমন প্রত্যাশা মোটেই অবান্তর নয়। কয়লা উত্তোলনের ধারা অব্যাহত রেখেই সেই ব্যাপক কর্মযজ্ঞের দরজা উন্মুক্ত করতে হবে। এ বিবেচনায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলনজনিত যে জটিলতা দেখা দিয়েছে, তার সমাধান করতে দেরি করার অবকাশ নেই। কয়লা তোলা একটি শ্রমঘন কাজ। এ কাজে যারা নিয়োজিত তারা ন্যায্যপ্রাপ্তি পেতে এত দরকষাকষিতে যাবেন, এটা প্রত্যাশিত নয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এ ব্যাপারে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাও রয়েছে। জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে, নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য খনি নগর বা কোল মাইনিং সিটি গড়ে তোলার কথাও বলা হয়েছে। এখন শুধু অনুমোদনের অপেক্ষা। এই অনুমোদন যত শিগগির হবে, কয়লা উত্তোলন কর্মকাণ্ড তত বেগবান হবে। এ লক্ষ্যে সরকারকে অবিলম্বে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একটি স্থায়ী ফয়সালায় পৌঁছানোর বিকল্প নেই।
No comments