আক্রান্ত সাংবাদিক-অপরাধীদের শাস্তি পেতেই হবে
নড়াইলের কালিয়ায় সমকালের উপজেলা প্রতিনিধি মশিউল হক মিটু ও তার পরিবারের ওপর বোমা হামলার ঘটনায় আমরা চরম ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। রাতের বেলায় নিজের বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ তিনি যেভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, তাও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। ঘরেই যদি নিরাপদ না থাকতে পারেন, নিরাপত্তা তাহলে কোথায়?
এটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা না যে, সাংবাদিক মিটুর ওপর বোমা হামলা নিছক অপরাধমূলক তৎপরতা হতে পারে না। এর মধ্য দিয়ে বাক্-স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারও আক্রান্ত হয়েছে। আমরা উদ্বিগ্ন যে, ওই অঘটনের পর তিন দিন কেটে গেলেও পুলিশ হামলাকারীদের কাউকে আটক করতে পারেনি। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী ও স্থানীয় সাংবাদিকরা যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, তা ন্যায্য। মিটু হামলাকারীদের কয়েকজনকে চিনতে পেরেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন বোধগম্য নয়। আমরা মনে করি, স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন আন্তরিক হলে অপরাধীদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার কঠিন নয়। হামলার পরপরই এর সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে মিটু জানিয়েছিলেন যে, বিভিন্ন সময় তিনি যেসব সন্ত্রাসী ও অপরাধীর বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করেছেন তাদের কেউ হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া হত্যা ও ডাকাতি মামলার কয়েকজন আসামিকে সন্ত্রাসের পথ পরিহারের অনুরোধ জানিয়েছিলেন মিটু। এ ছাড়া তার বাড়ির জমি নিয়েও বিরোধ রয়েছে। সম্ভাব্য সব কারণ খতিয়ে দেখা হবে বলে প্রত্যাশা। সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলার ক্ষেত্রে অনেক সময় রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রভাবশালীরা জড়িত থাকতে দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ দুর্বৃত্তদের আটকে গড়িমসি করে থাকে। কালিয়ায় তেমনটি ঘটছে কি-না, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাই আমরা। মিটুর ওপর হামলাকারী যেই হোক, তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়ার অবকাশ নেই। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পেতে হবে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিটু ও তার স্ত্রী দ্রুততম সময়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন_ সমকাল পরিবার সে প্রত্যাশাই করছে।
No comments