বিজিবির প্রধান বললেন-চালকসহ সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়

টাকাসহ রেলওয়ের তিন কর্মকর্তাকে পিলখানার ভেতরে ১১ ঘণ্টা আটক করে রাখেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নিরাপত্তারক্ষীরা। ৯ এপ্রিল রাত পৌনে ১১টা থেকে পরদিন সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই অবস্থান করেন।


বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আনোয়ার হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ১০ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিন কর্মকর্তা ও গাড়িচালককে ছেড়ে দেওয়া হয়। গাড়িতে টাকা থাকলেও সেই টাকায় বিজিবির কেউ হাত দেননি বলে তিনি জানান।
টাকাসহ গাড়ি পিলখানার ভেতরে কীভাবে প্রবেশ করল এবং ওই দিন রাতে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে গতকাল প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন বিজিবির মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, সাদা রঙের মাইক্রোবাসটি পিলখানায় আসে রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে। জিগাতলাসংলগ্ন পিলখানার চার নম্বর ফটক তখনো খোলা ছিল। সংসদ সচিবালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়িটিকে প্রথমে কেউ সন্দেহ করেননি। পিলখানার ভেতরে প্রবেশের মূল ফটকের কয়েক গজ দূরে রয়েছে তল্লাশি চৌকি। এ চৌকি অতিক্রম করে অননুমোদিত ব্যক্তির দিনে বা রাতে পিলখানায় প্রবেশের কোনো সুযোগ নেই। মাইক্রোবাসটি মূল ফটক পেরিয়ে তল্লাশি চৌকির কাছে যাওয়ার আগেই থেমে যায়। এরপর গাড়ি থেকে চালক নেমে ভেতরে টাকা আছে বলে হইচই শুরু করেন। এ সময় সেখানে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা এগিয়ে এলে গাড়িতে থাকা তিন ব্যক্তি নিজেদের পরিচয় দেন।
মহাপরিচালক বলেন, টাকাগুলোর ব্যাপারে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রীর এপিএস বলেন, টাকাগুলো তাঁর। গাড়িতে কত টাকা ছিল, তা জানা যায়নি। তিনি বলেন, রাতেই নিরাপত্তাকর্মীরা এ ঘটনা তাঁকে জানান। রেলমন্ত্রীকে ফোন করে তিনি বিষয়টি জানান। মন্ত্রী শুনে কিছুই বলেননি। পরে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের জানান।
মহাপরিচালক বলেন, রাতে পিলখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ছিলেন না। এ কারণে রেলের তিন কর্মকর্তাকে মূল ফটকের পাশে বসিয়ে রাখা হয়। সকালে তাঁদের নাশতাও দেওয়া হয়।
রেলের তিন কর্মকর্তার খোঁজ পাওয়া গেলেও গাড়িচালকের খোঁজ নেই কেন, জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, ওই দিন সকালেই গাড়িচালকসহ সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কাউকেই আটক রাখা হয়নি।
এত টাকাসহ তাঁদের পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দিলেন কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে মহাপরিচালক বলেন, তাঁরা উচ্চপদস্থ সরকারি চাকুরে। তা ছাড়া তাঁরা তো কোনো অপরাধ করেননি। গাড়িতে যে টাকা ছিল, সেটা এপিএস তাঁর বলে দাবি করেছেন। বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সেটা মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার।
এত দিন বিজিবির পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি কেন জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, ‘এটা বিজিবির বিষয় নয়। যা বলার, সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা মন্ত্রণালয় বলবে। আর যদি তদন্ত কমিটি পিলখানায় আসে, তাহলে আমরা যা জানি তা বলব।’

No comments

Powered by Blogger.