বিএনপির নেতৃত্বে ১৭ দলীয় জোটের ঘোষণা আজ

বিএনপির নেতৃত্বে সম্প্রসারিত নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটছে আজ বুধবার। বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন জোটের ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করবেন।


জোট সম্প্রসারণের ব্যাপারে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গুলশানের কার্যালয়ে চারদলীয় জোটের শরিক ও সমমনা দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন। প্রতিটি দলের সভাপতি সম্প্রসারিত জোটের নামের ব্যাপারে ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন। বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দলের একটি সূত্র জানায়, জোট সম্প্রসারণের ব্যাপারে দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জোটের শীর্ষ নেতারা। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে একটি ফোরাম গঠন ও দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। কারণ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সরাসরি ১৭ দলীয় জোট নেতারা উপস্থিত থাকলে 'গোপনীয় ও রাজনৈতিক কৌশল' ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব চিন্তাভাবনা করেই শরিক ও সমমনা দলের নেতাদের নিয়ে ১৭ দলীয় জোট গঠনের বিষয়ে বৈঠক হয়।
তবে নতুন জোটের নাম কী হবে, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ১৭ দলের নেতারা খালেদা জিয়ার ওপর বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে চারদলীয় জোট বিলুপ্ত করে নতুন জোটের নাম '১৭ দলীয় জোট', 'সম্মিলিত গণতান্ত্রিক জোট' কিংবা 'জাতীয়তাবাদী সম্মিলিত জোট' নামকরণ হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে চারদলীয় জোট সমপ্রসারণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন খালেদা জিয়া। জোটের নামকরণ নিয়ে এত দিন সমস্যা ছিল। তা ছাড়া আরো কয়েকটি দলকে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে তোড়জোড় ছিল। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ১৭ দলের নেতাদের নিয়েই জোট করতে হচ্ছে বিএনপিকে।
এ প্রসঙ্গে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল লতিফ নেজামী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের বিকেল ৩টার মধ্যে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।' চিঠি দেওয়া হয়েছে কি না, প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, 'আমাদের নামে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে নতুন জোটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে- ১৭ দলীয় জোট।'
এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন বলেন, 'আমরা প্রস্তাব করেছিলাম- নতুন জোটে রাজনৈতিক দলের আসার পথ খোলা রাখার জন্য জোটের নাম সম্মিলিত গণতান্ত্রিক দল রাখতে। যেহেতু নেত্রীর ওপর জোটের নামকরণ নির্ধারণের দায়িত্ব ছিল, সেখানে আমাদের কিছু বলার নেই।'
১৯৯৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট গঠন করা হয়। বর্তমানে এই জোটে বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও খেলাফত মজলিশ রয়েছে। এর বাইরে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), ডেমোক্রেটিক লীগ (অলি আহাদ), বাংলাদেশ ন্যাপ, মুসলিম লীগ, ইসলামিক পার্টি ও ন্যাপ ভাসানী নতুন জোটে যোগ হচ্ছে বলে জানা গেছে।

No comments

Powered by Blogger.