ছাত্রলীগের ভর্তিবাণিজ্যঃ এই নৈরাজ্যের অবসান কবে হবে?
প্রধানমন্ত্রীর কঠোর হুশিয়ারির পরও শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের আপত্তিকর তত্পরতার অবসান হয়নি। হল দখল, প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ইত্যকার ন্যক্কারজনক ঘটনার পর এবার রাজধানীর নামি-দামি কলেজে প্রকাশ্যে ভর্তিবাণিজ্যে নেমেছে।
ছাত্রলীগের অবৈধ চাপে বিব্রত কলেজ প্রশাসন শেষ পর্যন্ত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সাক্ষাত্কার স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছেন। শুধু তাই নয়, ছাত্রলীগের অযৌক্তিক দাবি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন এবং সেখান থেকে নির্দেশনা আসার অপেক্ষা করছেন। এ ঘটনায় গোটা শিক্ষাঙ্গনসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ-আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স প্রথমবর্ষের ভর্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন কলেজে সাক্ষাত্কার নেয়া শুরু হয় গত ৩০ জানুয়ারি থেকে। শুরুর দিনই ভর্তি-বাণিজ্যের মহড়ায় নামে ছাত্রলীগ নামধারী নেতারা। অভিযোগ আছে, ওইদিনই ঢাকা কলেজের নেতাকর্মীরা ৫০০ আসনে তাদের মনোনীতদের ভর্তির দাবি জানান। মেধা তালিকা অনুসারে সাক্ষাত্কার শুরু হওয়ার পর এ ধরনের অবাঞ্ছিত তত্পরতায় প্রশাসন বাধ্য হয়ে সেদিন সাক্ষাত্কার নেয়া বন্ধ করে দেয়। ৩১ তারিখে পুনরায় ভর্তি কার্যক্রম শুরু করলে কলেজ শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পুলিশের সামনেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়কসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করতেও ছাড়েনি তারা। এমনকি কলেজের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ রেখে ভর্তিচ্ছু ছাত্রদের গায়ে হাত তুলেছে, অভিভাবকদের অপদস্থ করেছে। এ অবস্থায় শেষ পর্যন্ত নিরূপায় কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, পুলিশি পাহারার মধ্যেও ৩১ জানুয়ারি ভর্তির কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। একই ঘটনা ঘটেছে মিরপুর বাংলা কলেজে। সেখানেও কলেজ কর্তৃপক্ষ অন্যায় আবদার রক্ষা না করে পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে, শিক্ষায়তনের সমস্ত নীতি-নিয়ম, আইন-কানুন অগ্রাহ্য করে কয়েকটি কলেজের ভর্তি কমিটি ও অধ্যক্ষ ছাত্রলীগ নেতাদের চাহিদা পূরণের আশ্বাস দিয়ে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সরকারি কলেজগুলোতে একশ’ থেকে পাঁচশ’টি আসনে অবৈধ ভর্তির চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং মোটা টাকার লেনদেনও চলছে। এছাড়া বিভিন্ন অসাধু বাণিজ্যের মতো ভর্তিবাণিজ্য নিয়ে ছাত্রলীগে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে বলেও অভিযোগ করছেন অনেকে। এর পেছনে মদত রয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতাসহ একাধিক মন্ত্রী-এমপির। গত বছরও এ ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। এ ব্যাপারে ১ ফেব্রুয়ারি ‘কলেজে ছাত্রলীগের ভর্তি-বাণিজ্য বিব্রত প্রশাসন : শিক্ষকরা লাঞ্ছিত’ শীর্ষক একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে দৈনিক আমার দেশ-এ।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, শিক্ষাঙ্গনে উচ্ছৃঙ্খলতার ষোলকলা পূরণ করেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এর আগে তাদের হামলায় আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ একাধিক শিক্ষক। ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, হল দখল, ডাইনিংয়ে বিনে পয়সায় নিয়মিত খাওয়া ছাড়াও ক্যাম্পাসে তাদের কোন্দলে প্রতিপক্ষের রক্ত ঝরেছে, খুন-খারাবি হয়েছে, গ্রুপ কোন্দলে আহত হয়েছে অনেকে। এই নৈরাজ্যকর অবস্থায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে এই অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা প্রত্যাহার করে নেন। পাশাপাশি ছাত্রলীগের নামে উচ্ছৃঙ্খলতা দমনের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এতে কিছুদিন ক্যাম্পাস শান্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত কোনো গুণগত পরিবর্তন হয়নি। তাই এখন চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হলো অবৈধভাবে বিভিন্ন কলেজে ভর্তি-বাণিজ্য চালানোর মধ্য দিয়ে, শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির নামে এসব অবৈধ তত্পরতা শিক্ষার পরিবেশকে কোন অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, এ নিয়ে স্বভাবতই সব মহলে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। ভর্তিচ্ছু মেধাবী সাধারণ শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক তথা গোটা শিক্ষক সমাজ যেন জিম্মি হয়ে পড়েছেন এই অপতত্পরতার হোতাদের কাছে। তবে এতসব চাপের পরও নাজেহাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ, যারা অন্যায় আবদারের কাছে মাথানত না করে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা চেয়েছেন বা অবহিত করেছেন। তারপরও যদি কোনো সুরাহা না হয় তাহলে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, বেপরোয়া ছাত্রলীগ নামধারীদের সামলানোর কি কেউ নেই? কবে শিক্ষাঙ্গন থেকে এই নৈরাজ্যের অবসান হবে? আমাদের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এর সদুত্তর পাওয়া যাবে।
জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স প্রথমবর্ষের ভর্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন কলেজে সাক্ষাত্কার নেয়া শুরু হয় গত ৩০ জানুয়ারি থেকে। শুরুর দিনই ভর্তি-বাণিজ্যের মহড়ায় নামে ছাত্রলীগ নামধারী নেতারা। অভিযোগ আছে, ওইদিনই ঢাকা কলেজের নেতাকর্মীরা ৫০০ আসনে তাদের মনোনীতদের ভর্তির দাবি জানান। মেধা তালিকা অনুসারে সাক্ষাত্কার শুরু হওয়ার পর এ ধরনের অবাঞ্ছিত তত্পরতায় প্রশাসন বাধ্য হয়ে সেদিন সাক্ষাত্কার নেয়া বন্ধ করে দেয়। ৩১ তারিখে পুনরায় ভর্তি কার্যক্রম শুরু করলে কলেজ শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পুলিশের সামনেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়কসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করতেও ছাড়েনি তারা। এমনকি কলেজের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ রেখে ভর্তিচ্ছু ছাত্রদের গায়ে হাত তুলেছে, অভিভাবকদের অপদস্থ করেছে। এ অবস্থায় শেষ পর্যন্ত নিরূপায় কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, পুলিশি পাহারার মধ্যেও ৩১ জানুয়ারি ভর্তির কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। একই ঘটনা ঘটেছে মিরপুর বাংলা কলেজে। সেখানেও কলেজ কর্তৃপক্ষ অন্যায় আবদার রক্ষা না করে পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে, শিক্ষায়তনের সমস্ত নীতি-নিয়ম, আইন-কানুন অগ্রাহ্য করে কয়েকটি কলেজের ভর্তি কমিটি ও অধ্যক্ষ ছাত্রলীগ নেতাদের চাহিদা পূরণের আশ্বাস দিয়ে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সরকারি কলেজগুলোতে একশ’ থেকে পাঁচশ’টি আসনে অবৈধ ভর্তির চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং মোটা টাকার লেনদেনও চলছে। এছাড়া বিভিন্ন অসাধু বাণিজ্যের মতো ভর্তিবাণিজ্য নিয়ে ছাত্রলীগে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে বলেও অভিযোগ করছেন অনেকে। এর পেছনে মদত রয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতাসহ একাধিক মন্ত্রী-এমপির। গত বছরও এ ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। এ ব্যাপারে ১ ফেব্রুয়ারি ‘কলেজে ছাত্রলীগের ভর্তি-বাণিজ্য বিব্রত প্রশাসন : শিক্ষকরা লাঞ্ছিত’ শীর্ষক একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে দৈনিক আমার দেশ-এ।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, শিক্ষাঙ্গনে উচ্ছৃঙ্খলতার ষোলকলা পূরণ করেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এর আগে তাদের হামলায় আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ একাধিক শিক্ষক। ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, হল দখল, ডাইনিংয়ে বিনে পয়সায় নিয়মিত খাওয়া ছাড়াও ক্যাম্পাসে তাদের কোন্দলে প্রতিপক্ষের রক্ত ঝরেছে, খুন-খারাবি হয়েছে, গ্রুপ কোন্দলে আহত হয়েছে অনেকে। এই নৈরাজ্যকর অবস্থায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে এই অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা প্রত্যাহার করে নেন। পাশাপাশি ছাত্রলীগের নামে উচ্ছৃঙ্খলতা দমনের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এতে কিছুদিন ক্যাম্পাস শান্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত কোনো গুণগত পরিবর্তন হয়নি। তাই এখন চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হলো অবৈধভাবে বিভিন্ন কলেজে ভর্তি-বাণিজ্য চালানোর মধ্য দিয়ে, শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির নামে এসব অবৈধ তত্পরতা শিক্ষার পরিবেশকে কোন অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, এ নিয়ে স্বভাবতই সব মহলে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। ভর্তিচ্ছু মেধাবী সাধারণ শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক তথা গোটা শিক্ষক সমাজ যেন জিম্মি হয়ে পড়েছেন এই অপতত্পরতার হোতাদের কাছে। তবে এতসব চাপের পরও নাজেহাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ, যারা অন্যায় আবদারের কাছে মাথানত না করে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা চেয়েছেন বা অবহিত করেছেন। তারপরও যদি কোনো সুরাহা না হয় তাহলে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, বেপরোয়া ছাত্রলীগ নামধারীদের সামলানোর কি কেউ নেই? কবে শিক্ষাঙ্গন থেকে এই নৈরাজ্যের অবসান হবে? আমাদের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এর সদুত্তর পাওয়া যাবে।
No comments