রেমিট্যান্স প্রবাহে বিঘ্ন-কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়ূক
সিলেট বিভাগে গত অর্থবছরে প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ এসেছে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ২১০৮ কোটি টাকা কম। গত বছর সামগ্রিক রেমিট্যান্স প্রবাহের তুলনায় এ ক্ষেত্রে ভিন্নতা রয়েছে। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দুটি বিষয়ের উল্লেখ করা হচ্ছে। এক. মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় যে অস্থিরতা চলছে তার প্রভাব।
লিবিয়া থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিককে এ জন্য দেশে ফিরিয়ে আনতে হয়েছে। আর যারা রয়ে গেছেন তাদের জীবনেও চলছে অনিশ্চয়তা। তবে ওয়াকিবহাল মহল বলছে, সিলেট অঞ্চলের বেশিরভাগ লোক রয়েছে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতে। মধ্যপ্রাচ্যে যতই অস্থিরতা চলুক, তাতে সিলেটের জেলাগুলোতে অর্থের প্রবাহ তেমন কমার কথা নয়। এটা ঘটতে পারে উন্নত দেশগুলোতে সংকট দেখা দিলে, যেমনটি ঘটেছিল ২০০৮-০৯ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার সময়ে। রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার দ্বিতীয় যে কারণ বলা হচ্ছে তা নিয়ে বাড়তি উদ্বেগ হতেই পারে। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা যে অবৈধ পথে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণের প্রবণতা বাড়ছে বলেই ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স কমে গেছে। এমনটি ঘটলে তার প্রভাবে দেশে কালো টাকার জোগান বেড়ে যাবে এবং তার পৌনঃপুনিক প্রতিক্রিয়া অনুভব হতে থাকবে । অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রবাসীরা কি বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে যথেষ্ট প্রণোদনা পাচ্ছে না? অবৈধভাবে পাঠানো হলে কি বিদেশি মুদ্রার জন্য আরও ভালো রেট পাওয়া যায়? এসব প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলেই সহজে উত্তর মিলতে পারে। এ ধরনের ঘটনা রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এটাও মনে রাখা চাই যে, অবৈধপথে যে অর্থ আসে তার জন্যও হুন্ডি চক্র ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে। অতীতে এমনটি ঘটেছে এবং তা আর্থিক খাতের জন্য মোটেই শুভ নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে অতীতের মতোই সংশ্লিষ্ট এলাকার ব্যাংকগুলোতে নজরদারি বাড়ানো। এটাও মনে রাখতে হবে যে, এ চক্রের হাত যথেষ্ট শক্তিশালী এবং তারা সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করার মতো চাপও সৃষ্টি করতে পারে।
No comments