আইপিএল-জুয়া by সুমন মোল্লা
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগকে (আইপিএল) ঘিরে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে প্রতিদিন জুয়ার আসর বসছে। ভারতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলা চলছে। টেলিভিশনের সামনে বসে লোকজন লাখ লাখ টাকা বাজি ধরছে। ব্যবসায়ী, তরুণ থেকে শুরু করে ছাত্ররাও আইপিএল-জুয়ায় যুক্ত হচ্ছে।
ভৈরবের সমাজব্যবস্থায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে জনপ্রতিনিধিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। প্রশাসন জুয়াড়ি চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বা বিপিএল থেকে ক্রিকেটকে ঘিরে ভৈরবে জুয়ার আধিক্য বাড়ে। আইপিএলে প্রসার পায়। খেলাকে ঘিরে অঞ্চলভিত্তিক জুয়াড়ি চক্র সক্রিয় আছে। তারা দিনের শুরু থেকে ম্যাচ শুরুর আগ পর্যন্ত দর্শকদের কাছে যায়। মুঠোফোনে যোগাযোগ করে। আগ্রহী ব্যক্তিরা পছন্দমতো খেলায় বাজি ধরে।
আজকের ম্যাচে জিতবে কোন দল? ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার যাবে কার হাতে? সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হবে কোন খেলোয়াড়? চার, ছক্কা হবে কয়টি? এসব প্রশ্নের ওপর বাজি ধরা হয়। এ ছাড়া খেলা চলাকালে ওভারে ওভারে বাজি চলে। পাড়ার ক্লাব, দোকানঘরগুলোতে বিকেলের পর থেকে জুয়ার এই আসর বসে।
ভৈরবের ক্রীড়া সংগঠক আবদুল বাসেত প্রথম আলোকে বলেন, খেলাধুলা মানুষের বিনোদনের অংশ। খেলা নিয়ে জুয়া হলে সমাজে ও মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত এক সপ্তাহে প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, জুয়ার বড় আসরটি বসে ভৈরব শহরের পলতাকান্দায়। এ জন্য নৈশ মৎস্য আড়তের একটি কক্ষ বেছে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি মাছবাজারের বড় বড় ব্যবসায়ীরা এতে অংশ নেন। এ ছাড়া পৌর শহরের জগন্নাথপুরের সেবা সংঘের পাশের একটি কক্ষে, কুড়াপট্টি, বাইন্নাপট্টি, রানীবাজার, কাঠবাজার, লঞ্চঘাট, ভৈরবপুর মনামারা সেতু সংলগ্ন কাঁচাবাজার, চণ্ডীবের এলাকার দক্ষিণ উত্তর ও মধ্যপাড়া, পুরাতন ফেরিঘাটের কয়লাঘাট, চণ্ডীবের কাঁচাবাজার, কমলপুর গাছতলা ঘাট, পঞ্চবটি পুকুরপাড়, ঘোড়াকান্দা জব্বার জুটমিল সড়কের পাশে টেলিভিশনে খেলা দেখা ও জুয়া খেলা চলে। জুয়াড়ি চক্রের নিয়ন্ত্রণাধীন টিভিগুলোতে সাধারণ দর্শক খেলা দেখার সুযোগ পায় না। অনুসন্ধানে জানা যায়, জুয়ার আসরগুলোতে চা ও মুদির দোকানের টেলিভিশন বেশি ব্যবহার হয়। ওভারে কত রান হবে, চার-ছয় হবে কি না, এই ওভারে উইকেট পড়বে কি না, এমন সব বিষয় থাকে ওভারের জুয়ায়। এ কারণে অনেকে এখন আর নিজ ঘরে টিভি না দেখে দোকান ও ক্লাবে একত্রে বসে খেলা দেখে। গত মঙ্গলবার চণ্ডীবের ও পলতাকান্দায় গিয়ে দেখা যায়, যেসব দোকানে টিভি আছে, সেসব দোকানে অসংখ্য মানুষের ভিড়।
সেদিন কলকাতা নাইট রাইডার্স ও ডেকান চার্জার্সের মধ্যে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হওয়ার কথা। চণ্ডীবের মধ্যপাড়ার কটেজঘরে বসে খেলা দেখায় মগ্ন হাবিবুর রহমান নামের এক তরুণ জানান, ওভারের জুয়ায় ১০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ধরা হচ্ছে। একই দিন পলতাকান্দা মাছবাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের একটি কক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ জন বসে টিভি দেখছেন। তাঁদের মধ্যে কথা হয় পলতাকান্দা গ্রামের নূর হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি বলেন, অস্বীকার করার উপায় নেই, লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়ে যাচ্ছে।
ওই এলাকার কাউন্সিলর মাহিন সিদ্দিকী আক্ষেপ করে বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। জুয়া খেলার টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আমার এলাকার দুটি পরিবার বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে।’ গত বুধবার কমলপুরে গিয়ে সড়কের পাশের দোকানগুলোতে একই চিত্র দেখা যায়। এখানকার কাউন্সিলর লোকমান সরকার বলেন, ‘আইপিএল-জুয়া কীভাবে বন্ধ করা যায় ভাবছি।’
গত সোমবার কথা হয় কুড়া ও বাইন্নাপট্টির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তাঁদের কয়েকজন বলেন, এমনও হয়েছে, একজন ব্যবসায়ী এক রাতে কয়েক লাখ টাকা হেরেছেন। আবার পরের রাতে কয়েক লাখ টাকা জিতেছেন। কথা হয় ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
আজকের ম্যাচে জিতবে কোন দল? ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার যাবে কার হাতে? সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হবে কোন খেলোয়াড়? চার, ছক্কা হবে কয়টি? এসব প্রশ্নের ওপর বাজি ধরা হয়। এ ছাড়া খেলা চলাকালে ওভারে ওভারে বাজি চলে। পাড়ার ক্লাব, দোকানঘরগুলোতে বিকেলের পর থেকে জুয়ার এই আসর বসে।
ভৈরবের ক্রীড়া সংগঠক আবদুল বাসেত প্রথম আলোকে বলেন, খেলাধুলা মানুষের বিনোদনের অংশ। খেলা নিয়ে জুয়া হলে সমাজে ও মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত এক সপ্তাহে প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, জুয়ার বড় আসরটি বসে ভৈরব শহরের পলতাকান্দায়। এ জন্য নৈশ মৎস্য আড়তের একটি কক্ষ বেছে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি মাছবাজারের বড় বড় ব্যবসায়ীরা এতে অংশ নেন। এ ছাড়া পৌর শহরের জগন্নাথপুরের সেবা সংঘের পাশের একটি কক্ষে, কুড়াপট্টি, বাইন্নাপট্টি, রানীবাজার, কাঠবাজার, লঞ্চঘাট, ভৈরবপুর মনামারা সেতু সংলগ্ন কাঁচাবাজার, চণ্ডীবের এলাকার দক্ষিণ উত্তর ও মধ্যপাড়া, পুরাতন ফেরিঘাটের কয়লাঘাট, চণ্ডীবের কাঁচাবাজার, কমলপুর গাছতলা ঘাট, পঞ্চবটি পুকুরপাড়, ঘোড়াকান্দা জব্বার জুটমিল সড়কের পাশে টেলিভিশনে খেলা দেখা ও জুয়া খেলা চলে। জুয়াড়ি চক্রের নিয়ন্ত্রণাধীন টিভিগুলোতে সাধারণ দর্শক খেলা দেখার সুযোগ পায় না। অনুসন্ধানে জানা যায়, জুয়ার আসরগুলোতে চা ও মুদির দোকানের টেলিভিশন বেশি ব্যবহার হয়। ওভারে কত রান হবে, চার-ছয় হবে কি না, এই ওভারে উইকেট পড়বে কি না, এমন সব বিষয় থাকে ওভারের জুয়ায়। এ কারণে অনেকে এখন আর নিজ ঘরে টিভি না দেখে দোকান ও ক্লাবে একত্রে বসে খেলা দেখে। গত মঙ্গলবার চণ্ডীবের ও পলতাকান্দায় গিয়ে দেখা যায়, যেসব দোকানে টিভি আছে, সেসব দোকানে অসংখ্য মানুষের ভিড়।
সেদিন কলকাতা নাইট রাইডার্স ও ডেকান চার্জার্সের মধ্যে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হওয়ার কথা। চণ্ডীবের মধ্যপাড়ার কটেজঘরে বসে খেলা দেখায় মগ্ন হাবিবুর রহমান নামের এক তরুণ জানান, ওভারের জুয়ায় ১০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ধরা হচ্ছে। একই দিন পলতাকান্দা মাছবাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের একটি কক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ জন বসে টিভি দেখছেন। তাঁদের মধ্যে কথা হয় পলতাকান্দা গ্রামের নূর হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি বলেন, অস্বীকার করার উপায় নেই, লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়ে যাচ্ছে।
ওই এলাকার কাউন্সিলর মাহিন সিদ্দিকী আক্ষেপ করে বলেন, ‘বিষয়টা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। জুয়া খেলার টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আমার এলাকার দুটি পরিবার বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে।’ গত বুধবার কমলপুরে গিয়ে সড়কের পাশের দোকানগুলোতে একই চিত্র দেখা যায়। এখানকার কাউন্সিলর লোকমান সরকার বলেন, ‘আইপিএল-জুয়া কীভাবে বন্ধ করা যায় ভাবছি।’
গত সোমবার কথা হয় কুড়া ও বাইন্নাপট্টির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। তাঁদের কয়েকজন বলেন, এমনও হয়েছে, একজন ব্যবসায়ী এক রাতে কয়েক লাখ টাকা হেরেছেন। আবার পরের রাতে কয়েক লাখ টাকা জিতেছেন। কথা হয় ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
No comments