ইলিয়াসকে না পেলে রবিবার থেকে কঠোর কর্মসূচি-গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাব জড়িত : খালেদা
২৮ এপ্রিল শনিবারের মধ্যে ইলিয়াস আলী ও তাঁর গাড়িচালককে পরিবারের হাতে তুলে না দিলে ২৯ এপ্রিল রবিবার থেকে সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচি দেবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তবে কঠোর কর্মসূচি কী হবে তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
দেশব্যাপী হরতালের তৃতীয় দিন শেষে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'আমরা কোনো কঠোর কর্মসূচি দিতে চাই না। অনেক ধৈর্য ধরেছি, অনেক নেতা-কর্মী হারিয়েছি, অনেক জীবন অকালে ঝরে গেছে, আর নয়।' তিনি বলেন, ২৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। এরপর ২৮ এপ্রিল শনিবার সারা দেশে সব থানা সদরে বিক্ষোভ মিছিল হবে। সেদিন কেন্দ্র থেকে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে। ইলিয়াস বেঁচে আছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা এখনো আশাবাদী। সরকার তদন্ত করছে। এটা সরকার দেখবে।' এই গুমের সঙ্গে সরকার জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাব এতে জড়িত। তিনি বলেন, গুম-নিখোঁজ করে পার পাওয়া যাবে না।
সরকারকেই এর দায়দায়িত্ব নিতে হবে। ইলিয়াস আলী ও তাঁর গাড়িচালককে সরকারকেই খুঁজে বের করতে হবে। সরকারের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, 'আমরা জানি, হরতাল দেশের জন্য ক্ষতিকর। অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনেই বাধ্য হয়ে আমাদের হরতাল ডাকতে হয়েছে।' এ সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে দেশের সর্বস্তরের শ্রেণী-পেশার মানুষের সমর্থন দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সময় খালেদা জিয়ার পাশে ইলিয়াসের স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা ও তাঁদের সন্তানরা ছিলেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র নেতারা। গত ১৭ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী। বিএনপির এই নেতার বনানীর বাড়ির কাছে মহাখালীর একটি গলিতে তাঁর গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এ নিয়ে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেছেন কি না প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে, এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপি নেতারা কথা বলেছেন। মন্ত্রী আশ্বাসও দিয়েছেন।
তদন্ত চলছে, এ সময় কঠোর কর্মসূচি থাকলে তাতে ব্যাঘাত ঘটবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত তদন্তের মতো চলবে আর কর্মসূচি চলবে কর্মসূচির মতো। তিনি বলেন, 'ঢাকা মহানগরীর প্রভাবশালী নেতা চৌধুরী আলম নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা শুধু জিডি করেছি। তখন কোনো কর্মসূচি দিইনি। তার ফল কী হয়েছে দেশবাসী দেখেছেন। বিএনপি লংমার্চ ও জনসভা সফলভাবে করেছে, দেশের মানুষের ব্যাপক সাড়া পেয়েছে।' এ জন্যই কি বিরোধী দলের নেতাদের গুম করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, 'হতে পারে'।
কোনো বিদেশি সংস্থার সহযোগিতা নেবেন কি না প্রশ্নের উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, 'এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের পত্র-পত্রিকায় এ নিয়ে লেখালেখি হয়েছে। আমরা বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের বিষয়টি জানিয়েছি।'
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেন, 'সারা দেশে বিরাজ করছে আতঙ্ক। চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে জনগণ। দেশের কেউ ভালো নেই। গভীর উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে বাস করছি সবাই।' তিনি বলেন, সাত দিন হয়ে গেল ইলিয়াস আলী নিখোঁজ রয়েছেন।
খালেদা বলেন, 'বিএনপির নেতারা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে কথা বলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। আমরা আশা করেছিলাম, সরকার দ্রুত বিষয়টির আইনসম্মত ফয়সালা করবে। সবার উৎকণ্ঠার অবসান ঘটবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে পুরো বিষয়টিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হলো। প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে খুবই দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিলেন। তিনি বললেন, আন্দোলনের ইস্যু তৈরির জন্য আমরাই নাকি ইলিয়াস আলীকে লুকিয়ে রেখেছি। একই সঙ্গে তিনি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাবের দিকে ইঙ্গিত করে আমাদের হুমকি দিলেন, আপনাদের তৈরি করা বাহিনীই আপনাদের খাবে। প্রজাতন্ত্রের প্রধান নির্বাহীর এ ধরনের বক্তব্যের নিন্দা করার ভাষা আমার জানা নেই।' এই দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্য ও হুমকির কারণেই প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোভাব পুরোপুরি পাল্টে যায়। তারা ইলিয়াস আলী ও তাঁর গাড়িচালককে জনগণের সামনে হাজির করার কথা বললে নানা ধরনের নাটক সাজানো ও কাহিনী তৈরিতে উৎসাহী হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, 'ইলিয়াস আলীর মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে যখন এভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় ধরে নিয়ে গিয়ে গায়েব করে রাখা হয়, তখন অস্তিত্ব রক্ষার খাতিরেই কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া ছাড়া বিরোধী দলের আর কোনো উপায় থাকে না। অর্থাৎ সরকারই আমাদের হরতাল ডাকতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, আমাদের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ। সরকার ও সরকারি দলই উসকানি ও হরতালবিরোধী কর্মসূচি দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলে।' তিনি বলেন, 'আমরা প্রথমে এক দিনের হরতাল ডেকেছিলাম। পরে সরকারের আচরণেই তা বাড়াতে বাধ্য হই। আমরা বলেছিলাম, ইলিয়াস ও তাঁর গাড়িচালক আনসার আলীকে ছেড়ে দিলে হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করব। সরকার আমাদের দাবি মানেনি। বরং সারা দেশে হরতাল-বিরোধিতার নামে তারা পুলিশ, র্যাব ও দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে বিরোধী দলের ওপর হামলা করেছে।'
সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, জুলুম-নির্যাতন করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। হরতালকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের প্রায় দেড় হাজার নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার নেতা-কর্মী। তাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় সরকারের বিরুদ্ধে আরো দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সেই আন্দোলনের মাত্রা ক্রমেই তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, ঢাকা মহানগরীর প্রভাবশালী নেতা চৌধুরী আলমকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর গুম করে ফেলা হয়েছে। যশোরের নেতা নাজমুলকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর লাশ পাওয়া গেছে। সিলেটের ছাত্রদল নেতা দিনার ও জুনেদকে ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নেওয়ার পর আজও তাঁদের খোঁজ মেলেনি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন মেধাবী ছাত্রকে একইভাবে তুলে নেওয়ার পর হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়নি। এভাবে বর্তমান সরকারের আমলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাবেই প্রায় সোয়া শ লোককে ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করা হয়েছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি নৃশংসভাবে খুন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বললেন, তিনি বেডরুমে কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারবেন না। এরপর সৌদি কূটনীতিক খালাফ আলী খুন হলেন রাস্তায়। এখন পথে-ঘাটে, বাসায়-অফিসে নানা জায়গায় প্রতিনিয়ত মানুষ খুন হচ্ছে, অপহরণ হচ্ছে। এমপি হোস্টেলের মতো সুরক্ষিত জায়গায় আজ তরুণীর লাশ পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, 'দৈনিক সমকাল পত্রিকার মালিক ও সম্পাদক দুজনই সরকার সমর্থক বলে পরিচিত। সেই পত্রিকায় ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশের জন্য সম্পাদক গোলাম সরওয়ারকে হত্যা কিংবা গুম করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করতে বাধ্য হয়েছেন। এসব কিসের আলামত? বিদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে, বেছে বেছে বিএনপির ১০০ নেতার তালিকা করা হয়েছে। তাঁদের একে একে গুম কিংবা খুন করা হবে। সংবাদে বলা হচ্ছে, বিশেষ গুপ্তঘাতক বাহিনী গঠন করা হয়েছে। আমরা আতঙ্কিত।'
সরকারকেই এর দায়দায়িত্ব নিতে হবে। ইলিয়াস আলী ও তাঁর গাড়িচালককে সরকারকেই খুঁজে বের করতে হবে। সরকারের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, 'আমরা জানি, হরতাল দেশের জন্য ক্ষতিকর। অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনেই বাধ্য হয়ে আমাদের হরতাল ডাকতে হয়েছে।' এ সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে দেশের সর্বস্তরের শ্রেণী-পেশার মানুষের সমর্থন দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সময় খালেদা জিয়ার পাশে ইলিয়াসের স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা ও তাঁদের সন্তানরা ছিলেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র নেতারা। গত ১৭ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী। বিএনপির এই নেতার বনানীর বাড়ির কাছে মহাখালীর একটি গলিতে তাঁর গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এ নিয়ে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেছেন কি না প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে, এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপি নেতারা কথা বলেছেন। মন্ত্রী আশ্বাসও দিয়েছেন।
তদন্ত চলছে, এ সময় কঠোর কর্মসূচি থাকলে তাতে ব্যাঘাত ঘটবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত তদন্তের মতো চলবে আর কর্মসূচি চলবে কর্মসূচির মতো। তিনি বলেন, 'ঢাকা মহানগরীর প্রভাবশালী নেতা চৌধুরী আলম নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা শুধু জিডি করেছি। তখন কোনো কর্মসূচি দিইনি। তার ফল কী হয়েছে দেশবাসী দেখেছেন। বিএনপি লংমার্চ ও জনসভা সফলভাবে করেছে, দেশের মানুষের ব্যাপক সাড়া পেয়েছে।' এ জন্যই কি বিরোধী দলের নেতাদের গুম করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, 'হতে পারে'।
কোনো বিদেশি সংস্থার সহযোগিতা নেবেন কি না প্রশ্নের উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, 'এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের পত্র-পত্রিকায় এ নিয়ে লেখালেখি হয়েছে। আমরা বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের বিষয়টি জানিয়েছি।'
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেন, 'সারা দেশে বিরাজ করছে আতঙ্ক। চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে জনগণ। দেশের কেউ ভালো নেই। গভীর উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে বাস করছি সবাই।' তিনি বলেন, সাত দিন হয়ে গেল ইলিয়াস আলী নিখোঁজ রয়েছেন।
খালেদা বলেন, 'বিএনপির নেতারা সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে কথা বলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। আমরা আশা করেছিলাম, সরকার দ্রুত বিষয়টির আইনসম্মত ফয়সালা করবে। সবার উৎকণ্ঠার অবসান ঘটবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে পুরো বিষয়টিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হলো। প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে খুবই দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিলেন। তিনি বললেন, আন্দোলনের ইস্যু তৈরির জন্য আমরাই নাকি ইলিয়াস আলীকে লুকিয়ে রেখেছি। একই সঙ্গে তিনি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাবের দিকে ইঙ্গিত করে আমাদের হুমকি দিলেন, আপনাদের তৈরি করা বাহিনীই আপনাদের খাবে। প্রজাতন্ত্রের প্রধান নির্বাহীর এ ধরনের বক্তব্যের নিন্দা করার ভাষা আমার জানা নেই।' এই দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্য ও হুমকির কারণেই প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোভাব পুরোপুরি পাল্টে যায়। তারা ইলিয়াস আলী ও তাঁর গাড়িচালককে জনগণের সামনে হাজির করার কথা বললে নানা ধরনের নাটক সাজানো ও কাহিনী তৈরিতে উৎসাহী হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, 'ইলিয়াস আলীর মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে যখন এভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় ধরে নিয়ে গিয়ে গায়েব করে রাখা হয়, তখন অস্তিত্ব রক্ষার খাতিরেই কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া ছাড়া বিরোধী দলের আর কোনো উপায় থাকে না। অর্থাৎ সরকারই আমাদের হরতাল ডাকতে বাধ্য করেছে। শুধু তাই নয়, আমাদের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ। সরকার ও সরকারি দলই উসকানি ও হরতালবিরোধী কর্মসূচি দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলে।' তিনি বলেন, 'আমরা প্রথমে এক দিনের হরতাল ডেকেছিলাম। পরে সরকারের আচরণেই তা বাড়াতে বাধ্য হই। আমরা বলেছিলাম, ইলিয়াস ও তাঁর গাড়িচালক আনসার আলীকে ছেড়ে দিলে হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করব। সরকার আমাদের দাবি মানেনি। বরং সারা দেশে হরতাল-বিরোধিতার নামে তারা পুলিশ, র্যাব ও দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে বিরোধী দলের ওপর হামলা করেছে।'
সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, জুলুম-নির্যাতন করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। হরতালকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের প্রায় দেড় হাজার নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার নেতা-কর্মী। তাদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় সরকারের বিরুদ্ধে আরো দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সেই আন্দোলনের মাত্রা ক্রমেই তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, ঢাকা মহানগরীর প্রভাবশালী নেতা চৌধুরী আলমকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর গুম করে ফেলা হয়েছে। যশোরের নেতা নাজমুলকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর লাশ পাওয়া গেছে। সিলেটের ছাত্রদল নেতা দিনার ও জুনেদকে ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নেওয়ার পর আজও তাঁদের খোঁজ মেলেনি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন মেধাবী ছাত্রকে একইভাবে তুলে নেওয়ার পর হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়নি। এভাবে বর্তমান সরকারের আমলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাবেই প্রায় সোয়া শ লোককে ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করা হয়েছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি নৃশংসভাবে খুন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বললেন, তিনি বেডরুমে কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারবেন না। এরপর সৌদি কূটনীতিক খালাফ আলী খুন হলেন রাস্তায়। এখন পথে-ঘাটে, বাসায়-অফিসে নানা জায়গায় প্রতিনিয়ত মানুষ খুন হচ্ছে, অপহরণ হচ্ছে। এমপি হোস্টেলের মতো সুরক্ষিত জায়গায় আজ তরুণীর লাশ পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, 'দৈনিক সমকাল পত্রিকার মালিক ও সম্পাদক দুজনই সরকার সমর্থক বলে পরিচিত। সেই পত্রিকায় ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে সংবাদ প্রকাশের জন্য সম্পাদক গোলাম সরওয়ারকে হত্যা কিংবা গুম করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করতে বাধ্য হয়েছেন। এসব কিসের আলামত? বিদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে, বেছে বেছে বিএনপির ১০০ নেতার তালিকা করা হয়েছে। তাঁদের একে একে গুম কিংবা খুন করা হবে। সংবাদে বলা হচ্ছে, বিশেষ গুপ্তঘাতক বাহিনী গঠন করা হয়েছে। আমরা আতঙ্কিত।'
No comments