গঙ্গার পানিচুক্তি নিয়ে আলোচনা জরুরিঃ ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছে না বাংলাদেশ
চুক্তি লঙ্ঘন করে গঙ্গার পানি প্রত্যাহার করছে ভারত। ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ। ক্রমেই বাংলাদেশের জন্য চরম আত্মঘাতী হয়ে দেখা দিচ্ছে গঙ্গাচুক্তি। এবার শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই বাংলাদেশ প্রায় ষাট হাজার কিউসেক পানি কম পেয়েছে।
চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে এবং শর্তের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভারত গঙ্গার বেশিরভাগ পানি সরিয়ে নিচ্ছে হুগলি ও ভাগীরথি নদীতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের পানি প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়নি; বরং বাংলাদেশকে পানি না দেয়ার ব্যাপারে পোক্ত হয়েছে ভারতের অধিকার। এ অবস্থায় বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তিটি যেন কাগুজে চুক্তিতে পর্যবসিত হয়েছে।
গঙ্গা পানিচুক্তি অনুযায়ী শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ এক লাখ ৭৫ হাজার ৩৪৩ কিউসেক পানি পাওয়ার কথা। সেখানে এ সময় ভারত দিয়েছে মাত্র এক লাখ ১৮ হাজর ৯৭২ কিউসেক। অর্থাত্ চুক্তি মোতাবেক জানুয়ারি মাসে তিন কিস্তিতে বাংলাদেশ ৫৬ হাজার ৩৭১ কিউসেক পানি কম পেয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১৩ বছরই বাংলাদেশ তার ন্যায্য হিস্যা পায়নি। তার পরিণতি কারও অজানা নয়। এরই মধ্যে এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মা পরিণত হয়েছে হাঁটুজলের নদীতে। শুকিয়ে এবং বহুবিভক্ত হয়েছে এর মূলস্রোতধারা। চিকন জলধারার চারপাশে বিস্তীর্ণ বালুচর। পাকশি হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচ দিয়ে চলছে ট্রাক। শুকিয়ে যাওয়া নদীর বুকে চলছে চাষাবাদ আর সেচ সঙ্কটে পড়েছে তীরবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চলের খেতখামার।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আন্তর্জাতিক নদী গঙ্গার পানিবন্টন চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল ১২ ডিসেম্বর। চুক্তির প্রথম বছরে পানি পেয়েছিল বাংলাদেশ। তারপর এক যুগের বেশি সময় ধরে ন্যায্য হিস্যা থেকে লাগাতার বঞ্চিত হয়ে আসছে বাংলাদেশ। স্বাক্ষরিত চুক্তিতে কোনো গ্যারান্টি ক্লজ না থাকায় ভারত তার সুযোগ নিয়েছে এবং ফারাক্কা বাঁধের সাহায্যে উজান থেকে শুরু করে গঙ্গার উত্সমুখ পর্যন্ত ত্রিশটির মতো ব্যারাজ নির্মাণ করেছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও প্রায় তিনশ’ ক্যানেলের মাধ্যমে পানি নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। এখন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে এরকম—ভারত বাংলাদেশকে যতটুকু ইচ্ছা ততটুকু পানিই দিতে পারে। এ ব্যাপারে চুক্তি করার শুরু থেকে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। বিরোধী দল প্রতিবাদ করে হরতালও করেছিল। কিন্তু সরকার তা আমলে আনেনি।
পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় প্রতি বছরই ভারতকে আলোচনায় বসার অনুরোধ করা হলেও ভারত একবারের জন্যও রাজি হয়নি। চলতি বছর দু’দেশের পর্যবেক্ষণ দল হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পর্যবেক্ষণ করেছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। কার্যকর কোনো পদক্ষেপই নেয়া হয়নি। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক নদী তিস্তায় পানিবন্টন ইস্যুও পড়েছে অনিশ্চয়তার আবর্তে। সব মিলিয়ে অভিন্ন নদীর পানিবন্টনে ভারত গায়ের জোরে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করছে বলা যায়।
গঙ্গার পানির হিস্যা না পাওয়ায় শুধু পদ্মা নদীই পানিশূন্য অবস্থায় পতিত হয়নি, দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পও হুমকির মুখে পড়েছে। নাব্য হারাচ্ছে শাখা নদীগুলো। নদীগর্ভে চলছে ফসলের আবাদ। বিশাল অঞ্চল জুড়ে পরিবেশগত ভারসাম্য বিপন্ন হওয়ায় জীববৈচিত্র্য ও জনজীবনে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। সেচ বিঘ্নিত হওয়ায় অনাবাদি থাকছে ফসলি জমি। অন্যদিকে নদী ভরাট হওয়ার ফলে বর্ষায় দেখা দিচ্ছে বন্যা এবং নদীর ভাঙন। এখন এই বিপর্যয়ের ছায়া প্রলম্বিত হয়েছে দেশজুড়ে।
প্রতিবেশী ভারত আন্তর্জাতিক নীতি-নিয়ম মেনে ভাটির দেশের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত আচরণ করছে না। ৫৪টি অভিন্ন নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার কাজ অব্যাহত রেখেছে। এবার বরাকের টিপাইমুখে বাঁধ দেয়ার পাঁয়তারা করছে। যদি এভাবে ভারতের খেয়ালখুশির বাস্তবায়ন হতে থাকে তাহলে বাংলাদেশের জন্য আক্ষরিক অর্থেই তা ডেকে আনবে মহাবিপর্যয়। এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের উচিত ভারতের সঙ্গে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে জোর দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়া। সরকার জোরদার ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হলে পানিচুক্তি আক্ষরিক অর্থেই কাগজে থাকবে, বাস্তবে নয়।
গঙ্গা পানিচুক্তি অনুযায়ী শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ এক লাখ ৭৫ হাজার ৩৪৩ কিউসেক পানি পাওয়ার কথা। সেখানে এ সময় ভারত দিয়েছে মাত্র এক লাখ ১৮ হাজর ৯৭২ কিউসেক। অর্থাত্ চুক্তি মোতাবেক জানুয়ারি মাসে তিন কিস্তিতে বাংলাদেশ ৫৬ হাজার ৩৭১ কিউসেক পানি কম পেয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১৩ বছরই বাংলাদেশ তার ন্যায্য হিস্যা পায়নি। তার পরিণতি কারও অজানা নয়। এরই মধ্যে এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মা পরিণত হয়েছে হাঁটুজলের নদীতে। শুকিয়ে এবং বহুবিভক্ত হয়েছে এর মূলস্রোতধারা। চিকন জলধারার চারপাশে বিস্তীর্ণ বালুচর। পাকশি হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচ দিয়ে চলছে ট্রাক। শুকিয়ে যাওয়া নদীর বুকে চলছে চাষাবাদ আর সেচ সঙ্কটে পড়েছে তীরবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চলের খেতখামার।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আন্তর্জাতিক নদী গঙ্গার পানিবন্টন চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল ১২ ডিসেম্বর। চুক্তির প্রথম বছরে পানি পেয়েছিল বাংলাদেশ। তারপর এক যুগের বেশি সময় ধরে ন্যায্য হিস্যা থেকে লাগাতার বঞ্চিত হয়ে আসছে বাংলাদেশ। স্বাক্ষরিত চুক্তিতে কোনো গ্যারান্টি ক্লজ না থাকায় ভারত তার সুযোগ নিয়েছে এবং ফারাক্কা বাঁধের সাহায্যে উজান থেকে শুরু করে গঙ্গার উত্সমুখ পর্যন্ত ত্রিশটির মতো ব্যারাজ নির্মাণ করেছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও প্রায় তিনশ’ ক্যানেলের মাধ্যমে পানি নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। এখন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে এরকম—ভারত বাংলাদেশকে যতটুকু ইচ্ছা ততটুকু পানিই দিতে পারে। এ ব্যাপারে চুক্তি করার শুরু থেকে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। বিরোধী দল প্রতিবাদ করে হরতালও করেছিল। কিন্তু সরকার তা আমলে আনেনি।
পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় প্রতি বছরই ভারতকে আলোচনায় বসার অনুরোধ করা হলেও ভারত একবারের জন্যও রাজি হয়নি। চলতি বছর দু’দেশের পর্যবেক্ষণ দল হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে পর্যবেক্ষণ করেছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। কার্যকর কোনো পদক্ষেপই নেয়া হয়নি। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক নদী তিস্তায় পানিবন্টন ইস্যুও পড়েছে অনিশ্চয়তার আবর্তে। সব মিলিয়ে অভিন্ন নদীর পানিবন্টনে ভারত গায়ের জোরে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করছে বলা যায়।
গঙ্গার পানির হিস্যা না পাওয়ায় শুধু পদ্মা নদীই পানিশূন্য অবস্থায় পতিত হয়নি, দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পও হুমকির মুখে পড়েছে। নাব্য হারাচ্ছে শাখা নদীগুলো। নদীগর্ভে চলছে ফসলের আবাদ। বিশাল অঞ্চল জুড়ে পরিবেশগত ভারসাম্য বিপন্ন হওয়ায় জীববৈচিত্র্য ও জনজীবনে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। সেচ বিঘ্নিত হওয়ায় অনাবাদি থাকছে ফসলি জমি। অন্যদিকে নদী ভরাট হওয়ার ফলে বর্ষায় দেখা দিচ্ছে বন্যা এবং নদীর ভাঙন। এখন এই বিপর্যয়ের ছায়া প্রলম্বিত হয়েছে দেশজুড়ে।
প্রতিবেশী ভারত আন্তর্জাতিক নীতি-নিয়ম মেনে ভাটির দেশের সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত আচরণ করছে না। ৫৪টি অভিন্ন নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার কাজ অব্যাহত রেখেছে। এবার বরাকের টিপাইমুখে বাঁধ দেয়ার পাঁয়তারা করছে। যদি এভাবে ভারতের খেয়ালখুশির বাস্তবায়ন হতে থাকে তাহলে বাংলাদেশের জন্য আক্ষরিক অর্থেই তা ডেকে আনবে মহাবিপর্যয়। এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের উচিত ভারতের সঙ্গে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে জোর দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়া। সরকার জোরদার ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হলে পানিচুক্তি আক্ষরিক অর্থেই কাগজে থাকবে, বাস্তবে নয়।
No comments