মাহমুদুর রহমানকে বিদেশ যেতে বাধাঃ সরকারের ঘাড়ে এক-এগারোর ভূত
মাহমুদুর রহমান আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক এবং একজন মাঝারি মানের সফল উদ্যোক্তা। কিছুদিন আগে আমার দেশ পত্রিকায় মহাজোট সরকারের প্রভাবশালীদের দুর্নীতির অভিযোগসংবলিত একটি রিপোর্ট প্রকাশের পর দেশের বিভিন্ন জেলায় তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা সব নিয়মনীতি ভঙ্গ করে ২৪টি মামলা দায়ের করে।
উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলে এর ২২টি স্থগিত ও ২৩টিতে জামিন মঞ্জুর করা হয়। এর মধ্যেই সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে কাল্পনিক অভিযোগ এনে হয়রানি করার অপচেষ্টার আরেকটি খবর প্রকাশের পর তিনি তার সাম্প্রতিক এক লেখায় যে জবাব দিয়েছেন সেটিও সর্বত্র আলোচিত হয়েছে। এরপর অনেকেই তার সমূহ বিপদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সেটা কীভাবে আসবে ধারণা করা যায়নি। তবে সরকারের মরিয়া অবস্থার বিষয়টি গোপন রাখা সম্ভব হয়নি। গত মঙ্গলবার রাতে কোনো কারণ ছাড়াই ব্যবসায়িক কাজে মাহমুদুর রহমানের বিদেশ যাত্রা আটকে দেয়ার ঘটনা একই সঙ্গে সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবও প্রকাশ করেছে।
সবার হয়তো জানা নেই যে, সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ও বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী প্রধান মাহমুদুর রহমান দেশের শীর্ষস্থানীয় সিরামিক বিশেষজ্ঞ। দু’বছরের ভয়াবহ মন্দার ভেতরেও তিনি গত চার বছরে নিজ প্রতিষ্ঠানে উত্পাদিত প্রায় ৬৫ কোটি টাকার সিরামিক পণ্য রফতানি করেছেন। তার আগে একজন উদ্যমী প্রকৌশলী হিসেবে মুন্নু ও শাইনপুকুরসহ বড় বড় সিরামিক কারখানা প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। সর্বশেষ গত বছর নিজ প্রতিষ্ঠান আর্টিসান সিরামিকের পণ্য জার্মানিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বের অন্যতম সিরামিক মেলা ‘ফ্রাঙ্কফুর্ট স্প্রিং ফেয়ার’-এ শ্রেষ্ঠ দশটি ডিজাইনের একটি হিসেবে পুরস্কার লাভ করে। গত মঙ্গলবার এ বছরের সেই মেলায় অংশগ্রহণের জন্য মাহমুদুর রহমানকে জার্মানি যেতে দেয়া হয়নি। জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওসি ইমিগ্রেশন নির্দিষ্ট ফ্লাইটে ওঠার প্রাক্কালে ‘ওপরের মৌখিক নির্দেশের’ কথা জানিয়ে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন।
নির্বাচিত সরকারের গণতান্ত্রিক ভূমিকার সঙ্গে মহাজোট সরকারের এমন পদক্ষেপ যে মোটেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ধরনের ভূমিকা পালন করে ঘৃণা ও দুর্নাম কুড়িয়েছিল এক-এগারো পরবর্তী অসাংবিধানিক মইন-ফখরুদ্দীন সরকার। তখন অনেককেই, যাদের মধ্যে বর্তমান সরকারের পদ-পদবিধারীরাও রয়েছেন, বিদেশে যেতে একইভাবে বাধা দেয়া হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সঙ্গে মানানসই হলেও গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে এ ধরনের বেআইনি ঘটনা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা সংবিধান পরিপন্থীও বটে। সংবিধানের ৩১, ৩২, ৩৬ এবং ৪০ ধারা লঙ্ঘন করে ব্যক্তিস্বাধীনতা, আইনের শাসন ও মৌলিক নাগরিক অধিকার হতে এভাবে কাউকে বঞ্চিত করা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কী হতে পারে!
মনে রাখা দরকার, দেশের রফতানি আয় বৃদ্ধি ও শিল্প বিকাশের লক্ষ্যেই মাহমুদুর রহমান জার্মানি যাচ্ছিলেন। সেখানে নিজ কারখানায় তৈরি পণ্যের সুনাম অর্জন ও বাজার সম্প্রসারিত হলে দেশের মুখ উজ্জ্বল হওয়ার পাশাপাশি কয়েকশ’ শ্রমিকের রুটি-রুজির নিশ্চয়তাই শুধু নয়, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগও পাওয়া যেত। সরকার যেখানে বেসরকারি খাতের বিকাশ ও রফতানি বৃদ্ধিতে সচেষ্ট সেখানে ব্যবসায়িক কারণে মাহমুদুর রহমানের বিদেশ গমনে বাধা দেয়ার আসল কারণ জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কেউ। তার বিরুদ্ধে নিজ মন্ত্রণালয়ে কোনো অভিযোগ নেই, সেটা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রীও বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই অবগত নন বলে জানিয়েছেন। তাহলে কি শুধুমাত্র ভিন্নমত প্রকাশের কারণেই মাহমুদুর রহমানকে বিদেশ যেতে দেয়া হয়নি?
রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এমন আইনবহির্ভূত পদক্ষেপ অতীতেও দেখা গেছে। কিন্তু তার ফলাফল কখনও ভালো হয়নি। তাছাড়া জার্মানির বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণে বাধা দেয়ার ফলে মাহমুদুর রহমানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে তার দায়দায়িত্বই বা কে নেবে? তিনি অবশ্য আইনসম্মতভাবেই সরকারের জবরদস্তির প্রতিকার চাইবেন বলে জানিয়েছেন। এতে আদালতের রায়ে তার সুবিচার পাওয়ার আশা করা গেলেও গণতান্ত্রিক শাসনের দাবিদার সরকারের জন্য সেটা মোটেও সুখকর হবে না। বরং সেটা রাষ্ট্রের ঘাড়ে এখনও চেপে থাকা এক-এগারোর ভূত সম্পর্কিত মানুষের ধারণাই নতুন করে প্রমাণ করবে।
সবার হয়তো জানা নেই যে, সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ও বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী প্রধান মাহমুদুর রহমান দেশের শীর্ষস্থানীয় সিরামিক বিশেষজ্ঞ। দু’বছরের ভয়াবহ মন্দার ভেতরেও তিনি গত চার বছরে নিজ প্রতিষ্ঠানে উত্পাদিত প্রায় ৬৫ কোটি টাকার সিরামিক পণ্য রফতানি করেছেন। তার আগে একজন উদ্যমী প্রকৌশলী হিসেবে মুন্নু ও শাইনপুকুরসহ বড় বড় সিরামিক কারখানা প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। সর্বশেষ গত বছর নিজ প্রতিষ্ঠান আর্টিসান সিরামিকের পণ্য জার্মানিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বের অন্যতম সিরামিক মেলা ‘ফ্রাঙ্কফুর্ট স্প্রিং ফেয়ার’-এ শ্রেষ্ঠ দশটি ডিজাইনের একটি হিসেবে পুরস্কার লাভ করে। গত মঙ্গলবার এ বছরের সেই মেলায় অংশগ্রহণের জন্য মাহমুদুর রহমানকে জার্মানি যেতে দেয়া হয়নি। জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওসি ইমিগ্রেশন নির্দিষ্ট ফ্লাইটে ওঠার প্রাক্কালে ‘ওপরের মৌখিক নির্দেশের’ কথা জানিয়ে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন।
নির্বাচিত সরকারের গণতান্ত্রিক ভূমিকার সঙ্গে মহাজোট সরকারের এমন পদক্ষেপ যে মোটেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ধরনের ভূমিকা পালন করে ঘৃণা ও দুর্নাম কুড়িয়েছিল এক-এগারো পরবর্তী অসাংবিধানিক মইন-ফখরুদ্দীন সরকার। তখন অনেককেই, যাদের মধ্যে বর্তমান সরকারের পদ-পদবিধারীরাও রয়েছেন, বিদেশে যেতে একইভাবে বাধা দেয়া হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সঙ্গে মানানসই হলেও গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে এ ধরনের বেআইনি ঘটনা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা সংবিধান পরিপন্থীও বটে। সংবিধানের ৩১, ৩২, ৩৬ এবং ৪০ ধারা লঙ্ঘন করে ব্যক্তিস্বাধীনতা, আইনের শাসন ও মৌলিক নাগরিক অধিকার হতে এভাবে কাউকে বঞ্চিত করা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কী হতে পারে!
মনে রাখা দরকার, দেশের রফতানি আয় বৃদ্ধি ও শিল্প বিকাশের লক্ষ্যেই মাহমুদুর রহমান জার্মানি যাচ্ছিলেন। সেখানে নিজ কারখানায় তৈরি পণ্যের সুনাম অর্জন ও বাজার সম্প্রসারিত হলে দেশের মুখ উজ্জ্বল হওয়ার পাশাপাশি কয়েকশ’ শ্রমিকের রুটি-রুজির নিশ্চয়তাই শুধু নয়, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগও পাওয়া যেত। সরকার যেখানে বেসরকারি খাতের বিকাশ ও রফতানি বৃদ্ধিতে সচেষ্ট সেখানে ব্যবসায়িক কারণে মাহমুদুর রহমানের বিদেশ গমনে বাধা দেয়ার আসল কারণ জানাতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কেউ। তার বিরুদ্ধে নিজ মন্ত্রণালয়ে কোনো অভিযোগ নেই, সেটা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রীও বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই অবগত নন বলে জানিয়েছেন। তাহলে কি শুধুমাত্র ভিন্নমত প্রকাশের কারণেই মাহমুদুর রহমানকে বিদেশ যেতে দেয়া হয়নি?
রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এমন আইনবহির্ভূত পদক্ষেপ অতীতেও দেখা গেছে। কিন্তু তার ফলাফল কখনও ভালো হয়নি। তাছাড়া জার্মানির বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণে বাধা দেয়ার ফলে মাহমুদুর রহমানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে তার দায়দায়িত্বই বা কে নেবে? তিনি অবশ্য আইনসম্মতভাবেই সরকারের জবরদস্তির প্রতিকার চাইবেন বলে জানিয়েছেন। এতে আদালতের রায়ে তার সুবিচার পাওয়ার আশা করা গেলেও গণতান্ত্রিক শাসনের দাবিদার সরকারের জন্য সেটা মোটেও সুখকর হবে না। বরং সেটা রাষ্ট্রের ঘাড়ে এখনও চেপে থাকা এক-এগারোর ভূত সম্পর্কিত মানুষের ধারণাই নতুন করে প্রমাণ করবে।
No comments