হরতালে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা অগ্নিসংযোগ
এম ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারের দাবিতে বিএনপির ডাকা হরতালের তৃতীয় দিন গতকাল মঙ্গলবার দেশের কোথাও বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়নি। ইলিয়াস আলীর নিজ এলাকা সিলেট ও বিশ্বনাথেও হরতাল মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়। রাজধানীতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কয়েক কর্মীকে আটকের প্রতিবাদে দলের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী গামছা বিছিয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ জানান। পরে কর্মীদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।
হরতাল চলাকালে রাজধানীতে কয়েকটি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়, চালানো হয় ভাঙচুর। চট্টগ্রামে পিকেটারদের দেওয়া আগুনে নিয়াজ নামে টেম্পোর এক হেলপারের মুখের অংশবিশেষ পুড়ে গেছে। চট্টগ্রামে পিকেটিং করার সময় নগর মহিলা দলের সভানেত্রী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মনিসহ ১৩ বিএনপিকর্মীকে আটক করে পুলিশ। খুলনায় হরতাল সমর্থকদের থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হলে পুলিশ দুইটি রাবার বুলেট ও দুইটি টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। খুলনায় সহিংসতায় পুলিশসহ কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়। আটক করা হয় চার পিকেটারকে। আমাদের অফিস ও নিজস্ব প্রতিবেদকদের পাঠানো প্রতিবেদন :
ঢাকায় গাড়িতে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণ : তৃতীয় দিনের মতো গতকালও সকাল থেকে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় ঘিরে রাখে পুলিশ ও র্যাব। নাশকতা চালানোর জন্য গোপন বৈঠক হচ্ছে- এই অভিযোগে সকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহর বাসায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা হচ্ছে- এমন ধারণা থেকেই হান্নান শাহর মহাখালীর ডিওএইচএসের বাসায় পুলিশের এ তল্লাশি। তবে হান্নান শাহ দাবি করেছেন, এ তল্লাশি হয়রানি ছাড়া আর কিছু নয়।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে নয়াপল্টনে একটি মিছিল করার চেষ্টা হলে পুলিশের বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়। মহাখালী টিভি গেট এলাকায় সকাল ১০টার দিকে বিএনপি ও ছাত্রদলের একটি ছোট মিছিল পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে হরতাল সমর্থকরা গলিতে ঢুকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। বিকেল পৌনে ৪টায় মহাখালীর রহমান টাওয়ারের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ৬ নম্বর বাস ও একটি সিএনজি ভাঙচুর করে হরতাল সমর্থকরা।
সকালের দিকে কারওয়ান বাজার এলাকায় দুটি গাড়ি ও শেরে বাংলানগরে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। মধ্য বাড্ডায়ও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ হরতালকারীরা। এদিকে গতকাল সকালে রাজারবাগ টিঅ্যান্ডটি কলোনির সামনে হাতবোমা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ছাড়া রাজধানীর মহাখালী এলাকায় দুটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। হাতবোমা বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায় গুলশান এলাকায়ও।
ধানমণ্ডির বাসস্ট্যান্ডে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মান্নান ও ইমরান সালেহ প্রিন্সের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হওয়ামাত্র পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে যায়। মোহাম্মদপুরে যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে মিছিল বের করলে পুলিশ বাধা দেয়। এর পরও মিছিলের চেষ্টা হলে পুলিশ চার হরতাল সমর্থককে আটক করে।
মিরপুর, আজিমপুর, তেজগাঁও, গুলশান, আসাদ গেট, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় হরতালের সমর্থনে মিছিল বের হলে পুলিশ তা ছত্রভঙ্গ করে দেয়। হরতালের তৃতীয় দিনে এসে জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, জাগপা, এনপিপি, ন্যাপ, লেবার পার্টি, কল্যাণ পার্টি, এনডিপিসহ অঙ্গ সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু পুলিশের বাধায় রাস্তায় দাঁড়াতে পারেননি তাঁরা। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের সামনের রাস্তায় বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মিছিলেও বাধা দেয় পুলিশ। তবে হরতালের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউসহ নগরীর বিভিন্ন সড়কে আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ বিক্ষোভ মিছিল করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাসুদুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, তিন দিনের হরতালে রাজধানীতে ১০২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল আটক করা হয় ২৪ জনকে। হরতাল চলাকালে বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত কার্যক্রম পরিচালনা করলেও কাউকে কোনো ধরনের সাজা দেওয়া হয়নি।
বিএনপি কার্যালয়ে বঙ্গবীর : স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীসহ দলের প্রায় ২০ নেতা-কর্মী নিয়ে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাদের সিদ্দিকী নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে যান। তিনি বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে ঢোকার পর পুলিশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে ধরে নিয়ে যায়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে প্রায় আধঘণ্টা বৈঠকের পর বেরিয়ে এসে ঘটনা জানতে পেরে কাদের সিদ্দিকী দলের নির্বাচনী প্রতীক গামছা রাস্তায় বিছিয়ে সেখানে শুয়ে পড়েন। আটক কর্মীদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করার ঘোষণা দেন। প্রখর রোদের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট সেখানেই অবস্থান করেন কাদের সিদ্দিকী। এ সময় স্ত্রী তাঁর পাশে ছিলেন। একপর্যায়ে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আনোয়ার হোসেন উপস্থিত হয়ে জানান, আট কর্মীর সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদারকে পল্টন থানায় গিয়ে কর্মীদের নিয়ে আসার অনুরোধ জানান। দুপুর পৌনে ১টার দিকে মুক্ত কর্মীরা ফের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ফিরলে কাদের সিদ্দিকী উঠে দাঁড়িয়ে অজু করেন এবং বিএনপি কার্যালয় থেকে জায়নামাজ আনিয়ে দুই রাকাত শোকরানা নামাজ আদায় করেন। পরে নেতা-কর্মীদের নিয়ে নয়াপল্টন এলাকা ত্যাগ করেন তিনি।
জানা যায়, কাদের সিদ্দিকীকে দলীয় কার্যালয়ে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, 'আপনি আমাদের অভিভাবক, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সে জন্য আপনার কাছে দাবি- গুম ও হত্যা এবং নির্যাতন ইস্যুতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই।'
তৃতীয় দিনের হরতালে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও ট্রেন, বিমান ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকে। রাজধানীতে যানবাহনও চলেছে বেশি। সচিবালয়সহ অফিস-আদালত যথারীতি খোলা ছিল।
খুলনা অফিস জানায়, সকালে নগরীর মডার্ন ফার্নিচারের মোড়ে ছাত্রদলের মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একপর্যায়ে পুলিশ দুটি রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের দুটি শেল নিক্ষেপ করে। সোয়া ৮টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় দুটি মোটরসাইকেল আরোহী ইউসুফিয়া মসজিদের সামনে দুটি পেট্রলবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। এ ছাড়া পুলিশ খুলনা প্রেসক্লাব চত্বর থেকে একটি পরিত্যক্ত ককটেল উদ্ধার করে। দুপুরে ১২টার দিকে যুবলীগ-ছাত্রলীগের মিছিল থানার মোড় পার হওয়ার সময় হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবল শাহীন, বিএনপিকর্মী ফিরোজ, নাঈম, মামুন, মঈনুদ্দিন, আলমগীর, পলাশ, সুব্রত ব্যানার্জি, কাঞ্চন কুমারসহ ১২ জন আহত হন। এর আগে সকালে মাদ্রাসার সামনে থেকে ছাত্রদলকর্মী খান সাইফুল ইসলাম, আবদুল্লাহ আল মামুন, বিএনপিকর্মী সিরাজুল ইসলাম ও খালিশপুর বাস্তুহারা এলাকা থেকে জামাল হোসেনকে আটক করা হয়। অন্যদিকে সকাল সাড়ে ১১টায় বদর উদ্দিন-আবদুর রশীদ হত্যা ও হরতালের প্রতিবাদে দলীয় কার্যালয় চত্বরে সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ।
রাজশাহী অফিস জানায়, সকালে কাদিরগঞ্জে হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ এবং লাঠিপেটা করে। লাঠিপেটায় বিএনপির পাঁচ কর্মী আহত হন। পরে পুলিশ মহিলা দলের নেত্রী অ্যাডভোকেট রওশানারা পপি, নিরা বেগম ও নূরজাহান বেগমকে আটক করে। সকালে নগর ভবনের সামনে পিকেটাররা অটোরিকশা ভাঙচুর করতে থাকলে পুলিশ বাধা দেয়। ক্ষুব্ধ পিকেটাররা খাজা ভবন, নগরীর চেম্বার অব কমার্স ভবন ও মাস্টার সেফ ভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ গিয়ে ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সকাল ৯টায় মহানগর দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে রাজশাহীর শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার পেছনে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রোকনুজ্জামানকে দায়ী করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু। তিনি সাত দিনের মধ্যে এসি রোকনকে প্রত্যাহারের দাবি জানান। মিনু দাবি করেন, তিন দিনে নগরীতে বিএনপির ১০৩ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে, মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে চারটি। তিনি দাবি করেন, গতকাল ভোরে র্যাবের সদস্যরা নগরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ টুটুলকে তুলে নিয়ে গেছে এবং বিএনপির ১১ জন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
সিলেট অফিস জানায়, গতকাল হরতাল ছিল অনেক ঢিলেঢালা। কোথাও বিএনপির নেতা-কর্মীদের পিকেটিং করতে দেয়নি পুলিশ। বিশ্বনাথে সংঘর্ষের পর গতকাল সিলেটে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পুলিশে ও র্যাবের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা দিনভর টহল দেন। দুপুরে বিএনপি শহীদ মিনার থেকে মিছিল বের করে চৌহাট্টা পয়েন্ট হয়ে আম্বরখানায় গিয়ে সমাবেশ করে। সমাবেশে বলা হয়, 'দলমত নির্বিশেষে সবার দায়িত্ব হলো ইলিয়াস আলী, দিনার, জুনেদ ও আনসার আলীকে ফিরিয়ে আনা।'
এদিকে হরতালবিরোধী মিছিল শেষে কোর্ট পয়েন্টে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন, ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়াকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আমরাও মর্মাহত। কিন্তু বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইছে। তাই জনগণের স্বার্থে বাধ্য হয়ে আমাদের রাস্তায় নামতে হয়েছে।'
চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, ঢিলেঢালা হরতালের মধ্যে চট্টগ্রামের অলংকার ও চান্দগাঁও মোহরায় বাস ও অটোরিকশায় আগুন দেয় পিকেটাররা। মোহরায় পিকেটারদের আগুনে নিয়াজ নামে টেম্পোর এক হেলপারের মুখের অংশবিশেষ পুড়ে গেলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
সিএমপির ডবলমুরিং জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরেফীন জুয়েল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গ্রেপ্তারকৃত মনিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। আদালতে পাঠানোর পর আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদের জেলে পাঠিয়েছেন।'
বিকেলে কাজির দেউড়ির মহানগর বিএনপির কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় নগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান।
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ প্রথমবারের মতো গতকাল হরতালবিরোধী মিছিল ও সমাবেশ করে। সকালে নগরীর দারুল ফজল মার্কেট চত্বরে মিছিলপূর্ব এক সমাবেশে প্রধান অতিধি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
রংপুর অফিস জানায়, হরতালের সমর্থনে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে যুবদলের একটি মিছিল বের হলে শহরের জাহাজ কম্পানি মোড়ে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা অতিক্রম করে মিছিলটি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তিনটি টিয়ার শেল নিক্ষেপ কমর মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ সেখান থেকে হুমায়ুন কবির ও সাজু নামের দুই যুবদলকর্মীকে আটক করেছে। গতকাল শহরের কয়েকটি স্থানে অটোরিকশা ভাঙচুর করছে পিকেটাররা। কোতোয়ালি থানা জানায়, এসব ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ তৌহিদ ও সুজন নামের দুই ছাত্রদলকর্মীকে আটক করেছে। হরতালের বিপক্ষে শহরে মিছিল করেছে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগ। এদিকে হরতালকে কেন্দ্র করে কাউনিয়া উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কাউনিয়া থানা পুলিশ জানায়, সংঘর্ষে আট থেকে ১০ জন আহত হয়। বিএনপির স্থানীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
ঢাকায় গাড়িতে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণ : তৃতীয় দিনের মতো গতকালও সকাল থেকে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় ঘিরে রাখে পুলিশ ও র্যাব। নাশকতা চালানোর জন্য গোপন বৈঠক হচ্ছে- এই অভিযোগে সকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহর বাসায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা হচ্ছে- এমন ধারণা থেকেই হান্নান শাহর মহাখালীর ডিওএইচএসের বাসায় পুলিশের এ তল্লাশি। তবে হান্নান শাহ দাবি করেছেন, এ তল্লাশি হয়রানি ছাড়া আর কিছু নয়।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে নয়াপল্টনে একটি মিছিল করার চেষ্টা হলে পুলিশের বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়। মহাখালী টিভি গেট এলাকায় সকাল ১০টার দিকে বিএনপি ও ছাত্রদলের একটি ছোট মিছিল পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে হরতাল সমর্থকরা গলিতে ঢুকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। বিকেল পৌনে ৪টায় মহাখালীর রহমান টাওয়ারের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ৬ নম্বর বাস ও একটি সিএনজি ভাঙচুর করে হরতাল সমর্থকরা।
সকালের দিকে কারওয়ান বাজার এলাকায় দুটি গাড়ি ও শেরে বাংলানগরে মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। মধ্য বাড্ডায়ও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ হরতালকারীরা। এদিকে গতকাল সকালে রাজারবাগ টিঅ্যান্ডটি কলোনির সামনে হাতবোমা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ছাড়া রাজধানীর মহাখালী এলাকায় দুটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। হাতবোমা বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায় গুলশান এলাকায়ও।
ধানমণ্ডির বাসস্ট্যান্ডে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মান্নান ও ইমরান সালেহ প্রিন্সের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হওয়ামাত্র পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে যায়। মোহাম্মদপুরে যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে মিছিল বের করলে পুলিশ বাধা দেয়। এর পরও মিছিলের চেষ্টা হলে পুলিশ চার হরতাল সমর্থককে আটক করে।
মিরপুর, আজিমপুর, তেজগাঁও, গুলশান, আসাদ গেট, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় হরতালের সমর্থনে মিছিল বের হলে পুলিশ তা ছত্রভঙ্গ করে দেয়। হরতালের তৃতীয় দিনে এসে জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, জাগপা, এনপিপি, ন্যাপ, লেবার পার্টি, কল্যাণ পার্টি, এনডিপিসহ অঙ্গ সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু পুলিশের বাধায় রাস্তায় দাঁড়াতে পারেননি তাঁরা। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের সামনের রাস্তায় বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মিছিলেও বাধা দেয় পুলিশ। তবে হরতালের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউসহ নগরীর বিভিন্ন সড়কে আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ বিক্ষোভ মিছিল করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাসুদুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, তিন দিনের হরতালে রাজধানীতে ১০২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল আটক করা হয় ২৪ জনকে। হরতাল চলাকালে বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত কার্যক্রম পরিচালনা করলেও কাউকে কোনো ধরনের সাজা দেওয়া হয়নি।
বিএনপি কার্যালয়ে বঙ্গবীর : স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীসহ দলের প্রায় ২০ নেতা-কর্মী নিয়ে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাদের সিদ্দিকী নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে যান। তিনি বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে ঢোকার পর পুলিশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে ধরে নিয়ে যায়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে প্রায় আধঘণ্টা বৈঠকের পর বেরিয়ে এসে ঘটনা জানতে পেরে কাদের সিদ্দিকী দলের নির্বাচনী প্রতীক গামছা রাস্তায় বিছিয়ে সেখানে শুয়ে পড়েন। আটক কর্মীদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করার ঘোষণা দেন। প্রখর রোদের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট সেখানেই অবস্থান করেন কাদের সিদ্দিকী। এ সময় স্ত্রী তাঁর পাশে ছিলেন। একপর্যায়ে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আনোয়ার হোসেন উপস্থিত হয়ে জানান, আট কর্মীর সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদারকে পল্টন থানায় গিয়ে কর্মীদের নিয়ে আসার অনুরোধ জানান। দুপুর পৌনে ১টার দিকে মুক্ত কর্মীরা ফের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ফিরলে কাদের সিদ্দিকী উঠে দাঁড়িয়ে অজু করেন এবং বিএনপি কার্যালয় থেকে জায়নামাজ আনিয়ে দুই রাকাত শোকরানা নামাজ আদায় করেন। পরে নেতা-কর্মীদের নিয়ে নয়াপল্টন এলাকা ত্যাগ করেন তিনি।
জানা যায়, কাদের সিদ্দিকীকে দলীয় কার্যালয়ে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, 'আপনি আমাদের অভিভাবক, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। সে জন্য আপনার কাছে দাবি- গুম ও হত্যা এবং নির্যাতন ইস্যুতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই।'
তৃতীয় দিনের হরতালে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও ট্রেন, বিমান ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক থাকে। রাজধানীতে যানবাহনও চলেছে বেশি। সচিবালয়সহ অফিস-আদালত যথারীতি খোলা ছিল।
খুলনা অফিস জানায়, সকালে নগরীর মডার্ন ফার্নিচারের মোড়ে ছাত্রদলের মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একপর্যায়ে পুলিশ দুটি রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের দুটি শেল নিক্ষেপ করে। সোয়া ৮টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় দুটি মোটরসাইকেল আরোহী ইউসুফিয়া মসজিদের সামনে দুটি পেট্রলবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। এ ছাড়া পুলিশ খুলনা প্রেসক্লাব চত্বর থেকে একটি পরিত্যক্ত ককটেল উদ্ধার করে। দুপুরে ১২টার দিকে যুবলীগ-ছাত্রলীগের মিছিল থানার মোড় পার হওয়ার সময় হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবল শাহীন, বিএনপিকর্মী ফিরোজ, নাঈম, মামুন, মঈনুদ্দিন, আলমগীর, পলাশ, সুব্রত ব্যানার্জি, কাঞ্চন কুমারসহ ১২ জন আহত হন। এর আগে সকালে মাদ্রাসার সামনে থেকে ছাত্রদলকর্মী খান সাইফুল ইসলাম, আবদুল্লাহ আল মামুন, বিএনপিকর্মী সিরাজুল ইসলাম ও খালিশপুর বাস্তুহারা এলাকা থেকে জামাল হোসেনকে আটক করা হয়। অন্যদিকে সকাল সাড়ে ১১টায় বদর উদ্দিন-আবদুর রশীদ হত্যা ও হরতালের প্রতিবাদে দলীয় কার্যালয় চত্বরে সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ।
রাজশাহী অফিস জানায়, সকালে কাদিরগঞ্জে হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ এবং লাঠিপেটা করে। লাঠিপেটায় বিএনপির পাঁচ কর্মী আহত হন। পরে পুলিশ মহিলা দলের নেত্রী অ্যাডভোকেট রওশানারা পপি, নিরা বেগম ও নূরজাহান বেগমকে আটক করে। সকালে নগর ভবনের সামনে পিকেটাররা অটোরিকশা ভাঙচুর করতে থাকলে পুলিশ বাধা দেয়। ক্ষুব্ধ পিকেটাররা খাজা ভবন, নগরীর চেম্বার অব কমার্স ভবন ও মাস্টার সেফ ভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ গিয়ে ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সকাল ৯টায় মহানগর দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে রাজশাহীর শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার পেছনে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রোকনুজ্জামানকে দায়ী করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু। তিনি সাত দিনের মধ্যে এসি রোকনকে প্রত্যাহারের দাবি জানান। মিনু দাবি করেন, তিন দিনে নগরীতে বিএনপির ১০৩ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে, মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে চারটি। তিনি দাবি করেন, গতকাল ভোরে র্যাবের সদস্যরা নগরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ টুটুলকে তুলে নিয়ে গেছে এবং বিএনপির ১১ জন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
সিলেট অফিস জানায়, গতকাল হরতাল ছিল অনেক ঢিলেঢালা। কোথাও বিএনপির নেতা-কর্মীদের পিকেটিং করতে দেয়নি পুলিশ। বিশ্বনাথে সংঘর্ষের পর গতকাল সিলেটে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পুলিশে ও র্যাবের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা দিনভর টহল দেন। দুপুরে বিএনপি শহীদ মিনার থেকে মিছিল বের করে চৌহাট্টা পয়েন্ট হয়ে আম্বরখানায় গিয়ে সমাবেশ করে। সমাবেশে বলা হয়, 'দলমত নির্বিশেষে সবার দায়িত্ব হলো ইলিয়াস আলী, দিনার, জুনেদ ও আনসার আলীকে ফিরিয়ে আনা।'
এদিকে হরতালবিরোধী মিছিল শেষে কোর্ট পয়েন্টে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন, ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়াকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় আমরাও মর্মাহত। কিন্তু বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইছে। তাই জনগণের স্বার্থে বাধ্য হয়ে আমাদের রাস্তায় নামতে হয়েছে।'
চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, ঢিলেঢালা হরতালের মধ্যে চট্টগ্রামের অলংকার ও চান্দগাঁও মোহরায় বাস ও অটোরিকশায় আগুন দেয় পিকেটাররা। মোহরায় পিকেটারদের আগুনে নিয়াজ নামে টেম্পোর এক হেলপারের মুখের অংশবিশেষ পুড়ে গেলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
সিএমপির ডবলমুরিং জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরেফীন জুয়েল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গ্রেপ্তারকৃত মনিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। আদালতে পাঠানোর পর আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদের জেলে পাঠিয়েছেন।'
বিকেলে কাজির দেউড়ির মহানগর বিএনপির কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় নগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান।
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ প্রথমবারের মতো গতকাল হরতালবিরোধী মিছিল ও সমাবেশ করে। সকালে নগরীর দারুল ফজল মার্কেট চত্বরে মিছিলপূর্ব এক সমাবেশে প্রধান অতিধি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
রংপুর অফিস জানায়, হরতালের সমর্থনে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে যুবদলের একটি মিছিল বের হলে শহরের জাহাজ কম্পানি মোড়ে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা অতিক্রম করে মিছিলটি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তিনটি টিয়ার শেল নিক্ষেপ কমর মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশ সেখান থেকে হুমায়ুন কবির ও সাজু নামের দুই যুবদলকর্মীকে আটক করেছে। গতকাল শহরের কয়েকটি স্থানে অটোরিকশা ভাঙচুর করছে পিকেটাররা। কোতোয়ালি থানা জানায়, এসব ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ তৌহিদ ও সুজন নামের দুই ছাত্রদলকর্মীকে আটক করেছে। হরতালের বিপক্ষে শহরে মিছিল করেছে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগ। এদিকে হরতালকে কেন্দ্র করে কাউনিয়া উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কাউনিয়া থানা পুলিশ জানায়, সংঘর্ষে আট থেকে ১০ জন আহত হয়। বিএনপির স্থানীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
No comments