সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হোক-প্রধান বিচারপতির সম্পদের হিসাব
রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভের মধ্যে বিচার বিভাগই জনগণের আস্থা ও শ্রদ্ধার ওপর টিকে থাকে। যে রাষ্ট্রে এই আস্থা ও শ্রদ্ধার জায়গা যত বেশি ঋদ্ধ, সে রাষ্ট্রে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তিও তত বেশি উজ্জ্বল। প্রধান বিচারপতির সম্পদের হিসাব বিবরণী ঘোষণার মধ্য দিয়ে আমাদের একটি দীর্ঘদিনের চাওয়ার প্রাথমিক সূচনা ঘটেছে।
প্রধান বিচারপতি এমন এক সময় সম্পদের হিসাব বিবরণী রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করলেন, যখন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রকাশের দাবিও জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই বড় দলের রাজনীতিকেরা সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রকাশ নিয়ে নানা ধরনের বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে এসেছেন। অনেক সময় মন্ত্রী ও তাঁদের পোষ্যদের সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রকাশের অঙ্গীকার করা হয়েছে, কিন্তু তা রক্ষা করা হয়নি। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত একমাত্র ব্যতিক্রম। প্রতিবেশী দেশেও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সম্পদের হিসাব বিবরণী দেন। এমনকি তাঁরা তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন। আমাদের এখানে প্রধান বিচারপতি সবেমাত্র বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার কাজটি করেছেন। গত ৩ ডিসেম্বর নারী বিচারকদের এক সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এস কে সিনহা প্রধান বিচারপতির উপস্থিতিতে মন্তব্য করেছিলেন যে নিম্ন আদালতের বিচারকেরা সম্পদের হিসাব বিবরণী দিচ্ছেন। এখন উচ্চ আদালতের বিচারকেরা সম্পদের হিসাব বিবরণী না দিয়ে পারেন না। কিন্তু তিনি যা বলেননি তা হলো, নিম্ন আদালতের বিচারকদের জমা দেওয়া বিবরণী ফিতাবন্দী হয়ে আছে। যাচাই করে দেখার সাংবিধানিক দায় সুপ্রিম কোর্টের। ২০০৩ সালে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের আওতায় প্রণীত আচরণবিধিতে লেখা আছে, প্রধান বিচারপতি হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বিচারকদের কাছে সম্পদের হিসাব বিবরণী চাইবেন। যদিও এর কোনো কার্যকারিতা নেই। নিম্ন আদালতের বিচারকদের কাছ থেকে দুই দফায় সম্পদের হিসাব বিবরণী নেওয়া হলেও তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে না। এটা স্বচ্ছতা নয়।
রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান বিচারপতি সম্পদের হিসাব বিবরণী কেন জমা দিলেন, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। বিচারকদের দ্বারা সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রণয়ন আমাদের দেশে এক অর্থে নতুন নয়। কারণ বিচারপতিরাও প্রতিবছর আয়কর দিয়ে থাকেন। সুতরাং আয়করের বিবরণীতে সাধারণভাবে সম্পদ ও দায়দেনার একটি চিত্র পাওয়া যায়। তাই প্রধান বিচারপতি ঠিক কী ধরনের ছকে এবং কী কী তথ্য তাতে উল্লেখ করেছেন, তা এখনো আমরা জানতে পারিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, তিনি বন্ধ করা একটি খাম বঙ্গভবনে পৌঁছে দিয়েছেন মাত্র।
যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রকাশের বিষয়টি আমরা সামনে এনেছিলাম, তা এর মাধ্যমে এখনো পূরণ হয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ মূল বিষয়টি হলো জনগণকে অবহিত করা। রাষ্ট্রপতি চাইলে আয়কর বিবরণী বা নানা রাষ্ট্রীয় সূত্র থেকে বিচারকদের তথ্য জেনে নিতে পারেন। কিন্তু আমজনতার এ ধরনের তথ্য জানার কোনো সুযোগ নেই। তাই রাষ্ট্রপতির কাছে সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দেওয়ার বিষয়টিকে আমরা শুধু প্রাথমিক অগ্রগতি হিসেবে গণ্য করতে চাই। এখন উচ্চ আদালতের বিচারকেরা যদি তাঁদের ও তাঁদের পোষ্যদের সম্পদের হিসাব বিবরণী বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন, সেটাই হবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য।
রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান বিচারপতি সম্পদের হিসাব বিবরণী কেন জমা দিলেন, তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। বিচারকদের দ্বারা সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রণয়ন আমাদের দেশে এক অর্থে নতুন নয়। কারণ বিচারপতিরাও প্রতিবছর আয়কর দিয়ে থাকেন। সুতরাং আয়করের বিবরণীতে সাধারণভাবে সম্পদ ও দায়দেনার একটি চিত্র পাওয়া যায়। তাই প্রধান বিচারপতি ঠিক কী ধরনের ছকে এবং কী কী তথ্য তাতে উল্লেখ করেছেন, তা এখনো আমরা জানতে পারিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, তিনি বন্ধ করা একটি খাম বঙ্গভবনে পৌঁছে দিয়েছেন মাত্র।
যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে সম্পদের হিসাব বিবরণী প্রকাশের বিষয়টি আমরা সামনে এনেছিলাম, তা এর মাধ্যমে এখনো পূরণ হয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ মূল বিষয়টি হলো জনগণকে অবহিত করা। রাষ্ট্রপতি চাইলে আয়কর বিবরণী বা নানা রাষ্ট্রীয় সূত্র থেকে বিচারকদের তথ্য জেনে নিতে পারেন। কিন্তু আমজনতার এ ধরনের তথ্য জানার কোনো সুযোগ নেই। তাই রাষ্ট্রপতির কাছে সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দেওয়ার বিষয়টিকে আমরা শুধু প্রাথমিক অগ্রগতি হিসেবে গণ্য করতে চাই। এখন উচ্চ আদালতের বিচারকেরা যদি তাঁদের ও তাঁদের পোষ্যদের সম্পদের হিসাব বিবরণী বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন, সেটাই হবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য।
No comments