১১ মার্চ ঢাকায় মানববন্ধন-১২ মার্চের আগেই মাঠে নামছে ১৪ দল

বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের মহাসমাবেশের আগের দিন ১১ মার্চ ঢাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।


দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে আগামী ১২ মার্চ ঢাকায় বিরোধী দলের মহাসমাবেশের আগেই রাজপথ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের। এ কারণেই বিরোধী দলের কর্মসূচির আগের দিন ১৪ দল মানববন্ধন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে।
এর আগে ৭ মার্চ ঢাকায় গণমিছিল কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া ১২ মার্চ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় অবস্থান নেবে। এ জন্য সাংগঠনিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
অবশ্য মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা দিতে নয়, অরাজকতা ঠেকাতে সরকারি দলের কর্মীরা মাঠে থাকবে।
এদিকে বিএনপি অভিযোগ করছে, বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা দিতে মহানগর আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের ব্যানারে এসব কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারা যে রাস্তায় যাচ্ছে, তা অত্যন্ত কণ্টকাকীর্ণ ও অস্থিরতার রাস্তা। আমরা আশা করি সরকার এ ভুলটা করবে না।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা আরও বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে চায়। কোনো সংঘাতে যেতে চায় না। তিনি বলেন, ‘আমরা যখনই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিই, তখন তারা পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। আর বলছে, আমরা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চাইছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করছি। অথচ দুই বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি, একটা কর্মসূচিতেও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাইনি।’
১৪ দলের আরও কর্মসূচি: ঢাকার কর্মসূচির বাইরে ১৪ দল ৯ মার্চ সব জেলা শহরে মানববন্ধন ও ২৩ মার্চ খুলনায় বিভাগীয় মহাসমাবেশ করবে।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
হানিফ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ত্বরান্বিত করার দাবি ও গণতন্ত্র নস্যাতের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার জন্য এসব কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এপ্রিলের মধ্যে অন্যান্য বিভাগেও মহাসমাবেশ করা হবে।
সূত্র জানায়, গতকালের ১৪ দলের বৈঠকে ১২ মার্চ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন না করার অভিমত দেন নেতারা।
সূত্র জানায়, বৈঠকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, দেশে অর্থনীতি কী অবস্থায় রয়েছে তা নিয়ে মুক্ত আলোচনা দরকার। সংকট আছে কি না কিংবা সংকট নিরসনে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো জনগণকে জানানো দরকার।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশেদ খান মেনন বলেন, বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রশ্নে বিরোধী দলকে প্রস্তাব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি মনে করেন, এ ক্ষেত্রে কূটনৈতিক মধ্যস্থতার প্রয়োজন নেই।
জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, পুরোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায অনেকগুলো ত্রুটি রয়েছে। সেসব ত্রুটি রেখে তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা সম্ভব নয়।
সংসদ উপনেতা ও ১৪ দলের সমন্বয়ক সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, সতীশ চন্দ্র রায়, দিলীপ বড়ুয়া, আবদুস সামাদ, শরিফ নুরুল আম্বিয়া, বিমল বিশ্বাস, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আনিছুর রহমান প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.