মুখের ভাষা, মায়ের ভাষা by সৈয়দ ওলিউর রহমান
ভাষা শহীদদের মহান আত্মত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত ফেব্রুয়ারি মাস। ১৯৫২ সালের এই ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলছিল বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলনের দাবানল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অর্জিত হবার পর দেখা যায় মোট জনসংখ্যার শতকরা ৫৬ ভাগের আবাসভূমি পূর্ববঙ্গ এবং তাদের মাতৃভাষা বাংলা।
এর বিপরীতে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরবর্তী পশ্চিম পাকিস্তান বহু ভাষাভাষীর এলাকা এবং শতকরা মাত্র ৫ জনের মাতৃভাষা উর্দু।
এদিকে ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী-রাজনীতিবিদরা ধারণা পোষণ করেছিলেন, পূর্ব বাংলা একটি ‘স্বতন্ত্র' ও ‘স্বশাসিত' রাষ্ট্র হবে।
তাই নতুন রাষ্ট্রের চরিত্র এবং নিজস্ব মাতৃভাষা বাংলাকে নিয়ে ছিল চিন্তা-ভাবনা।
১৯৪৭ সালে লাহোর প্রস্তাবের চেতনায় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা পায়নি বলে স্বতন্ত্র বাংলা বা স্বশাসিত পূর্ব পাকিস্তানের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।
এ প্রেক্ষিতেই বাংলা ভাষা সমস্যার উদ্ভব হয়। ঊনিশ শ' সাতচল্লিশের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আগেই আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. জিয়া উদ্দিন আহমদ প্রথম ভাষা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেন।
তিনি ওই বছর জুলাই মাসে মন্তব্য করেন, ‘উর্দুকেই পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।'
এ ধরনের বক্তব্যের প্রতিবাদে যিনি অগ্রসেনানীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।
কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজাদ পত্রিকায় তিনি স্বনামে একটি নিবন্ধ লিখেন, যার শিরোনাম-‘পাকিস্তানের ভাষা সমস্যা।'
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে বাংলার দাবিকে অগ্রগণ্য উল্লেখ করে বলেন, ‘যদি এরপরও অন্য কোন ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রশ্ন আসে, শুধু তাহলেই উর্দুর কথা চিন্তা করা যেতে পারে।'
সে সময় তার এই দূরদর্শী ও সাহসী বক্তব্য এ দেশের শিক্ষিত ও বুদ্ধিজীবী মহলে দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করে।
সত্যি বলতে কি, পূর্বাঞ্চলের আমাদের সহস্রাধিক বছরের বঙ্গীয় ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক ধারা তাহজীব ও তমদ্দুনের দ্রুত রূপান্তর ঘটাতে হবে এমন মানসিকতাই কাজ করেছিল লেখক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে।
সে জন্যেই তারা উর্দুর বিরোধিতা করে আসছিল ইংরেজ আমল থেকেই। দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভ থেকেই একুশে ফেব্রুয়ারীতে ছাত্র জনতার মিছিল হয়।
যে মিছিল ই ভিত্তি সৃষ্টি করে মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার।
কিন্তূ তার জন্য হারাতে হয়েছে আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের, তাজা প্রাণের বিনিময়ে অর্জন করতে হয়েছে আমাদের দাবি।
এদিকে ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী-রাজনীতিবিদরা ধারণা পোষণ করেছিলেন, পূর্ব বাংলা একটি ‘স্বতন্ত্র' ও ‘স্বশাসিত' রাষ্ট্র হবে।
তাই নতুন রাষ্ট্রের চরিত্র এবং নিজস্ব মাতৃভাষা বাংলাকে নিয়ে ছিল চিন্তা-ভাবনা।
১৯৪৭ সালে লাহোর প্রস্তাবের চেতনায় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা পায়নি বলে স্বতন্ত্র বাংলা বা স্বশাসিত পূর্ব পাকিস্তানের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।
এ প্রেক্ষিতেই বাংলা ভাষা সমস্যার উদ্ভব হয়। ঊনিশ শ' সাতচল্লিশের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আগেই আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. জিয়া উদ্দিন আহমদ প্রথম ভাষা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেন।
তিনি ওই বছর জুলাই মাসে মন্তব্য করেন, ‘উর্দুকেই পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।'
এ ধরনের বক্তব্যের প্রতিবাদে যিনি অগ্রসেনানীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।
কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজাদ পত্রিকায় তিনি স্বনামে একটি নিবন্ধ লিখেন, যার শিরোনাম-‘পাকিস্তানের ভাষা সমস্যা।'
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে বাংলার দাবিকে অগ্রগণ্য উল্লেখ করে বলেন, ‘যদি এরপরও অন্য কোন ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রশ্ন আসে, শুধু তাহলেই উর্দুর কথা চিন্তা করা যেতে পারে।'
সে সময় তার এই দূরদর্শী ও সাহসী বক্তব্য এ দেশের শিক্ষিত ও বুদ্ধিজীবী মহলে দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করে।
সত্যি বলতে কি, পূর্বাঞ্চলের আমাদের সহস্রাধিক বছরের বঙ্গীয় ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক ধারা তাহজীব ও তমদ্দুনের দ্রুত রূপান্তর ঘটাতে হবে এমন মানসিকতাই কাজ করেছিল লেখক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে।
সে জন্যেই তারা উর্দুর বিরোধিতা করে আসছিল ইংরেজ আমল থেকেই। দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভ থেকেই একুশে ফেব্রুয়ারীতে ছাত্র জনতার মিছিল হয়।
যে মিছিল ই ভিত্তি সৃষ্টি করে মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার।
কিন্তূ তার জন্য হারাতে হয়েছে আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের, তাজা প্রাণের বিনিময়ে অর্জন করতে হয়েছে আমাদের দাবি।
No comments