বিদেশি টিভি চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে by আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
বাংলা ভাষা আমাদের প্রাণের ভাষা, মায়ের মুখের ভাষা। বাংলা ভাষা শুধু একটা ভাষার নামই নয়, বরং এটা একটি রক্তাক্ত ইতিহাসের নাম। আমাদের এই প্রিয় মাতৃভাষা অর্জনে ব্যয় হয়েছে বহু তরুণের বুকের তাজা রক্ত। অজস্র প্রতিবন্ধকতার বাঁধ পেরিয়ে সে পেঁৗছেছে তার আস্থার উপকূলে। ১৯২০ সাল। কলকাতার শান্তিনিকেতনে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে একটি সভা হয়। সেই সভায় ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ 'রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই'-এর সপক্ষে সময়ের দাবি উপযোগী একটা মনকাড়া প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন। এ ছাড়াও বাংলার বহু সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী তাঁদের লেখা, বক্তৃতা-ভাষণ, সমাবেশসহ বিভিন্নভাবে বাংলাকে মাতৃভাষা রূপে প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন।
দিন যতই গড়াচ্ছিল, ততই দুর্বার হয়ে উঠেছিল বাঙালির মনের সুদৃঢ় সুপ্ত স্বপ্ন। এলো ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট। ইংরেজ শাসনের পতনের মাধ্যমে পাকিস্তানের জন্ম হলো। পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকরা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে চাইলেন। তখনই পূর্ব পাকিস্তানের কবি-সাহিত্যিক, বাংলার দামাল ছেলেরা রক্ত বর্ণ হয়ে গেলেন, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য।
আর এভাবেই শুরু হলো ভাষার জন্য আন্দোলন। গুটি গুটি পায়ে, অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভেঙে শহীদ বকরত, রফিক, সালাম, জব্বারসহ অনেক নাম না জানা বাংলার দামাল ছেলের জীবনের মাধ্যমে পেলাম আমরা আমাদের বহু কাঙ্ক্ষিত 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা'।
পৃথিবীতে একমাত্র আমরাই সেই জাতি, যে জাতি ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিল। যে জাতি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না, বরং তার প্রতিবাদ করতে জানে। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে ইতিহাসের পাতায় রয়েছে_১৯৫২, ১৯৭১, ১৯৯০ ...।
বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হলো আমাদের বাংলা ভাষা। কিন্তু আমরা কি ভাষার উদ্দেশে মর্যাদা, ভাষা শহীদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য রক্ষা করতে পারছি? এখন তার অবস্থা বিচার করেই উত্তরটা জেনে নেওয়া যাক_
আমরা বাংলা ভাষাভাষীর মানুষ যদি উচ্চারণের কথা বলা হয়, তাহলে তার ভয়াবহ চিত্রই আমরা দেখতে পাই।
এফ এম রেডিওতে বাংলা-ইংরেজির মিশেলে অদ্ভুত এক ভাষা চালু করেছে। এ অবস্থার অবসান হওয়া খুবই জরুরি।
বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হওয়াই আমাদের প্রতিটা স্থানে বাংলাকে প্রধান ভাষা হিসেবে প্রচলন করা উচিত, আর বর্তমান ইংরেজি যেহেতু একটি প্রযুক্তি হয়ে গেছে, সেহেতু সেটাকে বাংলার পাশাপাশি রাখা যেতে পারে। কিন্তু বর্তমানে আমরা কী দেখছি, মনে হয় সব স্থানে ইংরেজি বাধ্যতামূলক করলে এ দেশের শিক্ষা সমাজ শান্তি পায়। কেননা আজ আমাদের বাংলা ভাষা কোথায়, কী অবস্থায় আছে, আমাদের বাংলাকে বাংলাই বলছি নাকি বাংলিশ বলছি সেদিকে খেয়াল নেই।
বাংলা ভাষার ওপর বিদেশি ভাষার আগ্রাসন থেমে নেই। আগ্রাসন প্রতিরোধে সর্বস্তরে মাতৃভাষার ব্যবহার জরুরি।
অথচ আজ আমরা বিভিন্ন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, ইংলিশে কথা বলাসহ [নিজের ভাষাকে অবজ্ঞা করে] বিভিন্ন ভাষায় পারদর্শিতা অর্জনে ব্যস্ত।
আমাদের দেশে বিভিন্ন বিদেশি চ্যানেল প্রচলিত রয়েছে, অথচ অন্য দেশে কিন্তু এভাবে বাংলা চ্যানেল অনুমোদিত নয়, আজ পর্যন্তও চীন, জাপানসহ অনেক উন্নত দেশেও নিজেদের ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য শুধু খবর ছাড়া ভিনদেশি কোনো চ্যানেল অনুমোদিত নয়। আর এটা বাস্তব যে, বাংলার ঐতিহ্য ভোলা, বাংলা উচ্চারণ বিকৃতি, আমাদের সুস্থ সংস্কৃতির স্থানে অসংস্কৃতির প্রচলন এসবের জন্য বিদেশি চ্যানেলের অবদান অনস্বীকার্য।
পরিশেষে এই ভাষার মাসে আমরা বলতে পারি যে, এই আলোচনা থেকে হয়তোবা আমরা মনে করতে পারি, ইংরেজি বা অন্যান্য ভাষা শিক্ষা উচিত নয়। কিন্তু এ ধারণা ঠিক নয়। কেননা, আমাদের মাতৃভাষা বাংলা, এটা আমাদের বহু ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। তাই এই ভাষা সম্পূর্ণরূপে ঠিক রেখে অন্য ভাষার চর্চা আমরা করতে পারি। কেননা বর্তমান অবস্থায় বাংলা ভাষা চললে বা চলতে দিলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাংলার সঠিক ইতিহাস- ঐতিহ্য ভুলে যাবে।
আর এভাবেই শুরু হলো ভাষার জন্য আন্দোলন। গুটি গুটি পায়ে, অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভেঙে শহীদ বকরত, রফিক, সালাম, জব্বারসহ অনেক নাম না জানা বাংলার দামাল ছেলের জীবনের মাধ্যমে পেলাম আমরা আমাদের বহু কাঙ্ক্ষিত 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা'।
পৃথিবীতে একমাত্র আমরাই সেই জাতি, যে জাতি ভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিল। যে জাতি কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না, বরং তার প্রতিবাদ করতে জানে। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে ইতিহাসের পাতায় রয়েছে_১৯৫২, ১৯৭১, ১৯৯০ ...।
বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হলো আমাদের বাংলা ভাষা। কিন্তু আমরা কি ভাষার উদ্দেশে মর্যাদা, ভাষা শহীদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য রক্ষা করতে পারছি? এখন তার অবস্থা বিচার করেই উত্তরটা জেনে নেওয়া যাক_
আমরা বাংলা ভাষাভাষীর মানুষ যদি উচ্চারণের কথা বলা হয়, তাহলে তার ভয়াবহ চিত্রই আমরা দেখতে পাই।
এফ এম রেডিওতে বাংলা-ইংরেজির মিশেলে অদ্ভুত এক ভাষা চালু করেছে। এ অবস্থার অবসান হওয়া খুবই জরুরি।
বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হওয়াই আমাদের প্রতিটা স্থানে বাংলাকে প্রধান ভাষা হিসেবে প্রচলন করা উচিত, আর বর্তমান ইংরেজি যেহেতু একটি প্রযুক্তি হয়ে গেছে, সেহেতু সেটাকে বাংলার পাশাপাশি রাখা যেতে পারে। কিন্তু বর্তমানে আমরা কী দেখছি, মনে হয় সব স্থানে ইংরেজি বাধ্যতামূলক করলে এ দেশের শিক্ষা সমাজ শান্তি পায়। কেননা আজ আমাদের বাংলা ভাষা কোথায়, কী অবস্থায় আছে, আমাদের বাংলাকে বাংলাই বলছি নাকি বাংলিশ বলছি সেদিকে খেয়াল নেই।
বাংলা ভাষার ওপর বিদেশি ভাষার আগ্রাসন থেমে নেই। আগ্রাসন প্রতিরোধে সর্বস্তরে মাতৃভাষার ব্যবহার জরুরি।
অথচ আজ আমরা বিভিন্ন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, ইংলিশে কথা বলাসহ [নিজের ভাষাকে অবজ্ঞা করে] বিভিন্ন ভাষায় পারদর্শিতা অর্জনে ব্যস্ত।
আমাদের দেশে বিভিন্ন বিদেশি চ্যানেল প্রচলিত রয়েছে, অথচ অন্য দেশে কিন্তু এভাবে বাংলা চ্যানেল অনুমোদিত নয়, আজ পর্যন্তও চীন, জাপানসহ অনেক উন্নত দেশেও নিজেদের ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য শুধু খবর ছাড়া ভিনদেশি কোনো চ্যানেল অনুমোদিত নয়। আর এটা বাস্তব যে, বাংলার ঐতিহ্য ভোলা, বাংলা উচ্চারণ বিকৃতি, আমাদের সুস্থ সংস্কৃতির স্থানে অসংস্কৃতির প্রচলন এসবের জন্য বিদেশি চ্যানেলের অবদান অনস্বীকার্য।
পরিশেষে এই ভাষার মাসে আমরা বলতে পারি যে, এই আলোচনা থেকে হয়তোবা আমরা মনে করতে পারি, ইংরেজি বা অন্যান্য ভাষা শিক্ষা উচিত নয়। কিন্তু এ ধারণা ঠিক নয়। কেননা, আমাদের মাতৃভাষা বাংলা, এটা আমাদের বহু ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। তাই এই ভাষা সম্পূর্ণরূপে ঠিক রেখে অন্য ভাষার চর্চা আমরা করতে পারি। কেননা বর্তমান অবস্থায় বাংলা ভাষা চললে বা চলতে দিলে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাংলার সঠিক ইতিহাস- ঐতিহ্য ভুলে যাবে।
No comments