বাংলা ভাষা বিকৃতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে by মো. ইসমাঈল হোসেন
আজ, এখন, এই ভাষার মাসে যখন শুনি ১৯০টি দেশে বাংলা ভাষা তার আপন মহিমায় পেঁৗছে গেছে এবং বাংলা ভাষার চর্চা চলছে ও একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হয়েছে বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে, যখন মনে হয় অন্য একটি দেশ (সিয়েরা লিওন) বাংলাকে তাদের অন্যতম প্রধান ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং যখন চিন্তা করি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর বাংলা ভাষার কবি, যখন তথ্য দেখি পৃথিবীর প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষা চতুর্থ অবস্থানে, যখন পত্রিকায় আসে জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলায়ই ভাষণ দিচ্ছেন, যখন আবার সংবাদ পাই বাংলাকে জাতিসংঘের অফিসিয়াল ভাষা করার দাবি তোলা হয়েছে, যখন পত্রিকায় ছবি দেওয়া হয় বিদেশের বইমেলায় বাংলাদেশি বইয়ের বিশাল দোকান। তখন সত্যিই অনেক আনন্দিত হই আমরা তরুণরা। বাংলা ভাষার এ বিস্তারে আমরা গর্ববোধ করি।
কিন্তু ভাষা আন্দোলনের ৬০ বছর পরে এসেও যখন দেখি সর্বস্তরে মাতৃভাষা বাংলার প্রচলন হয়নি, প্রমিত বাংলা বলতে দেখা যায় না দেশের বড় বড় আমলা অথবা রাজনীতিককে, যখন মায়েরাই টিভিতে হিন্দি সিরিয়াল দেখেন এবং সন্তানদের দেখান আর শিশু-কিশোরের মুখে হিন্দি ডায়লগ শুনে আনন্দিত হন, যখন দেখি মা-বাবার আদরের সন্তান ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে ইংরেজিতে পারদর্শী হয়ে উঠেছে কিন্তু বাংলায় ভালো করে কথাও বলতে পারে না, অর্থাৎ বাংলায় শূন্যের কোঠায়, তখন ঠিক মনে পড়ে বাংলা নাকি মায়ের ভাষা! আর তখনই ঠুকরে ঠুকরে কাঁদতে ইচ্ছে করে। এখনো মায়েদের অসচেতনতার কারণে ছোট থেকেই অনেক সন্তান অশুদ্ধ, এমনকি ভাঙা ভাঙা বাংলা শিখে বড় হয়। তারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেও আর শুদ্ধ বাংলা দিকে ফিরে যেতে ব্যর্থ হয়। কারণ বাংলা আমার মায়ের ভাষা। প্রথমত মায়ের কাছ থেকেই সন্তান বাংলা শিখবে। আমাদের বাংলা ভাষার একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে, আমাদের এই বাংলা ভাষার সাহিত্যমান কম সমৃদ্ধ নয়। কিন্তু আজও আমাদের সেই গৌরবের ইতিহাস যেমন করে মানুষ ভুলে যাচ্ছে, জাতীয়ভাবে তা সংরক্ষণের অভাবে তেমনিভাবে বিশ্ববাসী বাংলা ভাষার উৎকর্ষ, সাহিত্য কর্ম, গবেষণাকর্ম, দেখা-বোঝা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ভাষার বিকাশে উন্নত ও অবাধ প্রযুক্তি ব্যবহারে ব্যর্থতার কারণে। সমগ্র বিশ্বে বাংলা ভাষা তুলে ধরার ক্ষেত্রে এবং ভাষার ব্যাপক বিকাশের জন্য উন্নত বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই, কিন্তু তা আমাদের দেশে নিতান্তই অপ্রতুল। দেশে এখন অনেক এফএম রেডিও রয়েছে। এগুলোতে সব সময় বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই গণমাধ্যমটিতে বাংলাকে ব্যাপক বিকৃত রূপ দেওয়া হচ্ছে। আর এই এফএম তরুণ প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে প্রিয় জিনিস হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভাষার এই বিকৃত ব্যবহার তরুণ প্রজন্মকে কি প্রভাবিত করে না?
আমাদের অন্য গণমাধ্যম, অর্থাৎ টিভি ও সংবাদপত্র। দেখুন আমরা তরুণরা এখন টিভিও সংবাদপত্রে ওপর খুব আগ্রহী। কিন্তু এখন প্রযুক্তির উৎকর্ষে অসংখ্য বিদেশি চ্যানেল আমাদের দেখার সুযোগ হয়, পাশাপাশি বাংলা ভাষায় প্রচারিত চ্যানেলের সংখ্যাও কম নয়। বিটিভি সরকারি চ্যানেল। সরকার ইচ্ছা করলে এই বিটিভি এবং অন্য টিভি চ্যানেলগুলোতে ভাষার ওপর কিছু অনুষ্ঠান প্রচার করে বড় ধরনের অবদান রাখতে পারে। এ ছাড়া আমাদের দেশীয় পত্রিকাগুলোর মধ্যেও দেখা যায় অশুদ্ধ বাংলার উপস্থিতি_এটা নিতান্তই দুঃখজনক। এখানেও সরকার ভূমিকা রাখতে পারে বাংলার শুদ্ধ বিকাশের দ্বার উন্মোচন করতে। বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং তথ্য মন্ত্রণালয় বাংলা ভাষার বহুমুখী বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। আজ যদি গণমানুষের মাঝে ভাষার বিকাশের জন্য গণসচেতনতা সৃষ্টি করা যায়, উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলা ভাষার প্রাধান্য দেওয়া হয়, গণমাধ্যমগুলোকে ভাষার বিকাশের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সৃষ্টিশীলতা, মননশীলতা, বাঙালি জাতীয়তাবোধ ও সংস্কৃতি বিকাশের জন্য প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত হওয়া এই একুশে বইমেলাকে অব্যাহত রাখা যায় এবং বাংলাকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত তরুণ প্রজন্মের মাধ্যমে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে সর্বস্তরে প্রমিত বাংলা ব্যবহার কর্মসূচি গ্রহণ করা যায়
তাহলে আমরা আশাবাদী, আমাদের বাঙলা ভাষার আরো উন্নতি হবে। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার যথার্থ ব্যবহারে তরুণ প্রজন্মের বিকল্প নেই, তাই প্রয়োজন তরুণ প্রজন্মকে ভাষার প্রতি আরো আগ্রহী করে তোলা। বাংলা ভাষাবিষয়ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। আমরা তরুণরা আমাদের বাংলা ভাষার উৎকর্ষ দেখতে চাই।
আমরা জানি, পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র জাতি, যারা মাতৃভাষার জন্য জীবন দিতে পারি। আমরা তরুণ প্রজন্ম সেই বিশ্বাসেই বলীয়ান যে তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ভাষা, মায়ের ভাষা বাংলাকে আমরা বিশ্ব দরবারে অন্যতম করে তুলতে পারব আর তাই তরুণ প্রজন্মকে যথার্থ অবাধ সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার উদাত্ত আহ্বান করছি।
কিন্তু ভাষা আন্দোলনের ৬০ বছর পরে এসেও যখন দেখি সর্বস্তরে মাতৃভাষা বাংলার প্রচলন হয়নি, প্রমিত বাংলা বলতে দেখা যায় না দেশের বড় বড় আমলা অথবা রাজনীতিককে, যখন মায়েরাই টিভিতে হিন্দি সিরিয়াল দেখেন এবং সন্তানদের দেখান আর শিশু-কিশোরের মুখে হিন্দি ডায়লগ শুনে আনন্দিত হন, যখন দেখি মা-বাবার আদরের সন্তান ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে ইংরেজিতে পারদর্শী হয়ে উঠেছে কিন্তু বাংলায় ভালো করে কথাও বলতে পারে না, অর্থাৎ বাংলায় শূন্যের কোঠায়, তখন ঠিক মনে পড়ে বাংলা নাকি মায়ের ভাষা! আর তখনই ঠুকরে ঠুকরে কাঁদতে ইচ্ছে করে। এখনো মায়েদের অসচেতনতার কারণে ছোট থেকেই অনেক সন্তান অশুদ্ধ, এমনকি ভাঙা ভাঙা বাংলা শিখে বড় হয়। তারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেও আর শুদ্ধ বাংলা দিকে ফিরে যেতে ব্যর্থ হয়। কারণ বাংলা আমার মায়ের ভাষা। প্রথমত মায়ের কাছ থেকেই সন্তান বাংলা শিখবে। আমাদের বাংলা ভাষার একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে, আমাদের এই বাংলা ভাষার সাহিত্যমান কম সমৃদ্ধ নয়। কিন্তু আজও আমাদের সেই গৌরবের ইতিহাস যেমন করে মানুষ ভুলে যাচ্ছে, জাতীয়ভাবে তা সংরক্ষণের অভাবে তেমনিভাবে বিশ্ববাসী বাংলা ভাষার উৎকর্ষ, সাহিত্য কর্ম, গবেষণাকর্ম, দেখা-বোঝা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ভাষার বিকাশে উন্নত ও অবাধ প্রযুক্তি ব্যবহারে ব্যর্থতার কারণে। সমগ্র বিশ্বে বাংলা ভাষা তুলে ধরার ক্ষেত্রে এবং ভাষার ব্যাপক বিকাশের জন্য উন্নত বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই, কিন্তু তা আমাদের দেশে নিতান্তই অপ্রতুল। দেশে এখন অনেক এফএম রেডিও রয়েছে। এগুলোতে সব সময় বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই গণমাধ্যমটিতে বাংলাকে ব্যাপক বিকৃত রূপ দেওয়া হচ্ছে। আর এই এফএম তরুণ প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে প্রিয় জিনিস হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভাষার এই বিকৃত ব্যবহার তরুণ প্রজন্মকে কি প্রভাবিত করে না?
আমাদের অন্য গণমাধ্যম, অর্থাৎ টিভি ও সংবাদপত্র। দেখুন আমরা তরুণরা এখন টিভিও সংবাদপত্রে ওপর খুব আগ্রহী। কিন্তু এখন প্রযুক্তির উৎকর্ষে অসংখ্য বিদেশি চ্যানেল আমাদের দেখার সুযোগ হয়, পাশাপাশি বাংলা ভাষায় প্রচারিত চ্যানেলের সংখ্যাও কম নয়। বিটিভি সরকারি চ্যানেল। সরকার ইচ্ছা করলে এই বিটিভি এবং অন্য টিভি চ্যানেলগুলোতে ভাষার ওপর কিছু অনুষ্ঠান প্রচার করে বড় ধরনের অবদান রাখতে পারে। এ ছাড়া আমাদের দেশীয় পত্রিকাগুলোর মধ্যেও দেখা যায় অশুদ্ধ বাংলার উপস্থিতি_এটা নিতান্তই দুঃখজনক। এখানেও সরকার ভূমিকা রাখতে পারে বাংলার শুদ্ধ বিকাশের দ্বার উন্মোচন করতে। বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং তথ্য মন্ত্রণালয় বাংলা ভাষার বহুমুখী বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। আজ যদি গণমানুষের মাঝে ভাষার বিকাশের জন্য গণসচেতনতা সৃষ্টি করা যায়, উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলা ভাষার প্রাধান্য দেওয়া হয়, গণমাধ্যমগুলোকে ভাষার বিকাশের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সৃষ্টিশীলতা, মননশীলতা, বাঙালি জাতীয়তাবোধ ও সংস্কৃতি বিকাশের জন্য প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত হওয়া এই একুশে বইমেলাকে অব্যাহত রাখা যায় এবং বাংলাকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত তরুণ প্রজন্মের মাধ্যমে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে সর্বস্তরে প্রমিত বাংলা ব্যবহার কর্মসূচি গ্রহণ করা যায়
তাহলে আমরা আশাবাদী, আমাদের বাঙলা ভাষার আরো উন্নতি হবে। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার যথার্থ ব্যবহারে তরুণ প্রজন্মের বিকল্প নেই, তাই প্রয়োজন তরুণ প্রজন্মকে ভাষার প্রতি আরো আগ্রহী করে তোলা। বাংলা ভাষাবিষয়ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। আমরা তরুণরা আমাদের বাংলা ভাষার উৎকর্ষ দেখতে চাই।
আমরা জানি, পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র জাতি, যারা মাতৃভাষার জন্য জীবন দিতে পারি। আমরা তরুণ প্রজন্ম সেই বিশ্বাসেই বলীয়ান যে তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ভাষা, মায়ের ভাষা বাংলাকে আমরা বিশ্ব দরবারে অন্যতম করে তুলতে পারব আর তাই তরুণ প্রজন্মকে যথার্থ অবাধ সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার উদাত্ত আহ্বান করছি।
No comments