একুশ বাঙালি চেতনার বাহক by শিশির রাজন
'একুশ' বাংলা ভাষার একটি সংখ্যাবাচক শব্দ। অথচ ১৯৫২ সালের পর থেকে 'একুশ' শব্দটি বাঙালি জাতিসত্তার কাছে অনেক উচ্চতর ও বৃহত্তর ভাবনা এবং আদর্শের বাহক হয়ে উঠেছে। একুশে আমাদের জাতীয় জীবনে সব অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার মন্ত্র শিখিয়েছে।
পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি_সর্বোপরি বাঙালি জাতিকে চিরতরে ধ্বংস করার যে হীন চক্রান্তে লিপ্ত ছিল, সে চক্রান্তগুলো আমরা ধূলিসাৎ করেছি একমাত্র একুশের দীপ্ত চেতনাকে ধারণ করেই। এমনকি একুশের চেতনার জোরেই 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই' স্লোগানকে 'বাংলাভাষীদের জন্য রাষ্ট্র চাই'তে পরিণত করে রচিত হয়েছিল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এবং আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। মূলত একুশই ছিল বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে আত্মপ্রকাশের মাইলফলক।
একুশের উত্তরাধিকার বহন করে আমরা যে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, যেখানে আমাদের সংবিধানে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল 'এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ' এবং 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা'। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আমাদের এই স্বাধীন রাষ্ট্রে বাংলা ভাষার সংরক্ষণ, সমৃদ্ধিসাধন ও সর্বস্তরে প্রচলনের প্রচেষ্টা রাষ্ট্রের দ্বারা গৃহীত হয়নি। বিশেষ করে ১৯৭৫ সালের পর কোনো সরকারই উদ্যোগটি যথাযথভাবে পালন করেনি। এমনকি রাষ্ট্র তো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে সর্বজনীন করার উদ্যোগও গ্রহণ করেনি। বরং লুটপাটতন্ত্রী নব্য অভিজাত শ্রেণীর প্রবর্তিত ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাকে উৎসাহিত করেছে। একুশের সংগ্রাম ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষার বিরুদ্ধে ছিল না। এ দেশে ইংরেজি ভাষাই দীর্ঘকাল ধরে আন্তর্জাতিক সংযোগের বাহন হয়ে এসেছে। সেই বাহনটি পরিত্যাগ করার তো কথাই উঠতে পারে না। তাই বলে শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষার বদলে বিজাতীয় ভাষাকে গ্রহণের উন্মার্গগামিতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে কেন?
বাংলা ভাষার সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের উচিত বাংলাদেশে বসবাসরত সব আদিবাসী তথা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষার সংরক্ষণ ও বিকাশে সহায়তা করা।
বাংলা ভাষার শুদ্ধ ব্যবহার এবং সকল পর্যায়ে এর ব্যাপক প্রচলনের ব্যাপারে সরকারকে যেমন দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে, তেমনি এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের ভূমিকা মোটেই খাটো করে দেখা যাবে না। তবে ইতিমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যম যে দায়িত্বসচেতনতার পরিচয় দিচ্ছে, সে জন্য এরা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমগুলো আরো অধিক উদ্যোগী হয়ে উঠবে বলেই আমরা আশা করি।
একুশের উত্তরাধিকার বহন করে আমরা যে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, যেখানে আমাদের সংবিধানে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল 'এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ' এবং 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা'। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আমাদের এই স্বাধীন রাষ্ট্রে বাংলা ভাষার সংরক্ষণ, সমৃদ্ধিসাধন ও সর্বস্তরে প্রচলনের প্রচেষ্টা রাষ্ট্রের দ্বারা গৃহীত হয়নি। বিশেষ করে ১৯৭৫ সালের পর কোনো সরকারই উদ্যোগটি যথাযথভাবে পালন করেনি। এমনকি রাষ্ট্র তো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে সর্বজনীন করার উদ্যোগও গ্রহণ করেনি। বরং লুটপাটতন্ত্রী নব্য অভিজাত শ্রেণীর প্রবর্তিত ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাকে উৎসাহিত করেছে। একুশের সংগ্রাম ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষার বিরুদ্ধে ছিল না। এ দেশে ইংরেজি ভাষাই দীর্ঘকাল ধরে আন্তর্জাতিক সংযোগের বাহন হয়ে এসেছে। সেই বাহনটি পরিত্যাগ করার তো কথাই উঠতে পারে না। তাই বলে শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষার বদলে বিজাতীয় ভাষাকে গ্রহণের উন্মার্গগামিতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে কেন?
বাংলা ভাষার সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের উচিত বাংলাদেশে বসবাসরত সব আদিবাসী তথা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষার সংরক্ষণ ও বিকাশে সহায়তা করা।
বাংলা ভাষার শুদ্ধ ব্যবহার এবং সকল পর্যায়ে এর ব্যাপক প্রচলনের ব্যাপারে সরকারকে যেমন দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে, তেমনি এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের ভূমিকা মোটেই খাটো করে দেখা যাবে না। তবে ইতিমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যম যে দায়িত্বসচেতনতার পরিচয় দিচ্ছে, সে জন্য এরা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমগুলো আরো অধিক উদ্যোগী হয়ে উঠবে বলেই আমরা আশা করি।
No comments