বেহাল সড়ক-বর্ষার আগেই সংস্কার
'বর্ষাকালে সওজের কোনো সড়কই যান চলাচলের অনুপযোগী থাকবে না।' রোববার সিরাজগঞ্জের সার্কিট হাউসে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অত্যন্ত দৃঢ়তা ও আস্থার সঙ্গে উলি্লখিত উক্তি করেছেন বলে সোমবার সমকালের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় 'বর্ষাকালে কোনো সড়কই অনুপযোগী থাকবে না' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
কিন্তু প্রায় প্রতি বছরই আমরা এর বিপরীত চিত্র দেখতে পাই। সাধারণত, বেহাল সড়কের হাল ফেরানোর কাজটা এমনভাবে বিন্যস্ত করা হয় যাতে কাজ শেষ হতে বর্ষা শুরু হয়ে যায়। এতে স্বার্থান্বেষী মহল দু'ভাবে লাভবান হতে পারে। প্রথমত, বর্ষা এসে গেলে এর দোহাই দিয়ে কম কাজ করেও বেশি হিসাব দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যায়। দ্বিতীয়ত, সড়কটির কাজ নমুনা অনুযায়ী সমাপ্ত না করেও সম্পন্ন দেখিয়ে পুরো অর্থ তুলে নেওয়ার কারণে সড়কটি প্রায় ফি বছর সংস্কারের সম্ভাব্য তালিকায় থেকে যায়। এতে একই রাস্তার কাজ নতুন করে করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এভাবেই এক শ্রেণীর অসাধু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং সড়ক ও জনপথের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে ও অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় সড়ক সংস্কার এবং নির্মাণের নামে পুকুরচুরির বন্দোবস্ত করা হয়। বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী আমাদের আশার বাণী শুনিয়েছেন। তার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন সম্ভব হলে এটা হবে উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী ঘটনা। কিন্তু এ জন্য মন্ত্রীকে তার সহকর্মীদের সমর্থন যেমন দরকার পড়বে, তেমনি প্রয়োজন হবে খোদ প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদও। কারণ, সড়ক ও জনপথের কাজ ভাগাভাগির সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মী, কর্মকর্তাদের একটি শক্তিশালী চেইন ও প্রভাবশালী মহল জড়িত থাকে। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু ক্ষমতাসীন দলের প্রধান, তাই তার নির্দেশনা এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল দেবে। মন্ত্রীকে বর্ষা শুরুর আগে বেহাল সড়কের হাল ফেরাতে হলে স্বার্থান্বেষী মহলের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হবে। আমরা চাই, দেশের বেহাল সড়কগুলো বর্ষা আসার আগেই যোগাযোগমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী যান চলাচলের উপযোগী হয়ে উঠুক। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গে সুশীল সমাজ ও মিডিয়ার কাছ থেকেও সাহায্য চাইতে পারেন মন্ত্রী।
No comments