শায়েস্তাগঞ্জে দুই রেলসেতুর স্লিপার রক্ষায় বাঁশ!
আখাউড়া-সিলেট রেললাইনের হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ জংশনের আওতাধীন মকন্দপুর-সাটিয়াজুরী স্টেশন। এ রেল জংশনের পশ্চিমে দুই কিলোমিটার দূরত্বে সুতাং সেতু ও পূর্বে দুই কিলোমিটার দূরত্বে খোয়াই সেতুর কাঠের অর্ধেক স্লিপার নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট স্লিপারগুলো রক্ষায় এখন ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশ ও কাঠ। এ অবস্থায় যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী (পথ) রুহুল আক্তার খান যুগান্তরকে জানান, শায়েস্তাগঞ্জে ৯০ নম্বর সুতাং নদীর ওপর প্রায় ৭০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুতে ১৫০টি স্লিপার রয়েছে। এছাড়া ৯৮ নম্বর খোয়াই নদীর ওপর প্রায় ৮০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুতে ১৭৫টি স্লিপার রয়েছে। তিনি আরও জানান, রেলসেতুর পিলার ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে নির্মিত। কিন্তু পিলারগুলো কালক্রমে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় অনেক স্থানে ফাটল এবং দেবে যায়। আবার কোনো স্থানে বালু উত্তোলনের ফলে সেতু দেবে যায়। সেতুটি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার মধ্যে পড়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, রেলওয়ের ৯ কি-ম্যান (রক্ষণাবেক্ষণকর্মী) সেতুর ওপরে নাটবল্টু লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপারের সঙ্গে নিচের গার্ডারের সংযোগ দেয়ার কাজ করছেন। এর মধ্যে খোয়াই ও সুতাং সেতুতে দুই কর্মী রয়েছেন। বাকি সেতুগুলো ৭ জনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। সেতুর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত স্লিপারে পেরেক ঠুকে বাঁশের ফালি ও কাঠ লাগানো হচ্ছে। শায়েস্তাগঞ্জে দায়িত্বরত রক্ষণাবেক্ষণকর্মী নুরুজ্জামান ও আলমগীর বলেন, মকন্দপুর-সাটিয়াজুরী রেললাইনের সব সেতুর অধিকাংশ স্লিপার দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে। ট্রেন চলাচলের সময় ঝাঁকুনিতে নাটবল্টু খুলে স্লিপার জড়ো হয়ে যায় এবং সেতুর পিলার দুর্বল হয়ে যাওয়ায় সেগুলো নড়াচড়া করে। দিনে দুই-তিনবার এসে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে হয়। তারা আরও বলেন, স্লিপার যাতে স্থানচ্যুত না হতে পারে, সেজন্য বাঁশের ফালি ও কাঠ দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তবে এ অবস্থায় ট্রেন চলাচলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। ট্রেন চালক নাজমুল হক বলেন, ট্রেন চালানোর সময় রেললাইনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। যদি কোনো কারণে রেলসেতুর পুরনো পিলার দেবে যায় বা ভেঙে যায়, তবে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া কোনো কারণে স্লিপার স্থানচ্যুত হয়ে রেললাইন সরে গেলেও ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশনের মাস্টার জাহাঙ্গীর আলম যুগান্তরকে বলেন, রেললাইনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ তদারকি করা আমার কাজ নয়। আমি শুধু স্টেশনের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত। তাই সুতাং ও খোয়াই রেলসেতুসহ অন্যান্য সেতুর স্লিপার নষ্ট এবং তাতে বাঁশ ও কাঠ লাগানো হয়েছে কিনা, তা আমার জানা নেই।
No comments