ক্ষোভে ফুঁসছেন লাখ লাখ শিক্ষক
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সিদ্ধান্তে ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে তাদের এমপিও’র অর্থ থেকে আগে ৬ শতাংশ হারে কেটে রাখা হতো। কিন্তু নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১০ শতাংশ অর্থ কেটে রাখা হবে। অথচ বাড়তি টাকা দেয়ার বিনিময়ে চাকরি শেষে তারা অতিরিক্ত কোনো আর্থিক সুবিধা পাবেন না। এ নিয়েই ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষকরা। মন্ত্রণালয়সহ শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন দফতরে কয়েকদিন ধরে অনেক শিক্ষককে ক্ষোভের কথা জানাতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকেও এ নিয়ে কেউ কেউ শিক্ষামন্ত্রীর বিবেকবুদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ আবার তার পদত্যাগ দাবি করতেও পিছপা হননি। এ রকম মন্তব্য শিক্ষামন্ত্রীর জন্য বিব্রতকর হলেও ভুক্তভোগীরা বলছেন, জোরপূর্বক পকেট কাটার এ অন্যায় সিদ্ধান্ত বাতিল করা না হলে তারা আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ে নামতে বাধ্য হবেন। এছাড়া বিক্ষুব্ধ শিক্ষকরা জানিয়েছেন, যারা এমন অন্যায় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা শুধু শিক্ষকদের নয়, সরকারেরও ব্যাপক ক্ষতি করেছেন। তারা মনে করেন, নির্ঘাত আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভুক্তভোগী লাখ লাখ শিক্ষক আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে চলে যাবে। ভোট তো দূরের কথা যেসব শিক্ষক প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বে থাকবেন তারা নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেন।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, বেসরকারি শিক্ষকদের কাছ থেকে অবসর ও কল্যাণ খাতে চাঁদা হিসেবে প্রতি তিন মাসে যে অর্থ পাওয়া যায়, তা অবসরপ্রাপ্তদের দাবি মেটাতে এক মাসেই খরচ হয়ে যায়। সেই হিসাবে ১২ মাসের চাঁদার অর্থ ৪ মাসে ব্যয় হয়। ফলে বাকি ৮ মাস শিক্ষকদের অবসর সুবিধার আবেদন নিষ্পত্তি করা কঠিন হয়ে পড়ছে। এ কারণে আবেদনের দীর্ঘ জট লেগে আছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেই চাঁদা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষকরা বাড়তি যে অর্থ দেবেন, তা তাদের পেছনেই ব্যয় হবে। প্রসঙ্গত, কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে চাঁদা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ হারে কেটে নেয়ার ব্যাপারে ১৫ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। অবসর বোর্ডের খাতে বর্তমানে ৪ শতাংশ হারে কেটে নেয়া হচ্ছে। এটা ৬ শতাংশ হারে কেটে নেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত আছে। দু’একদিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপনও জারি হবে। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা যুগান্তরকে এমনটি জানিয়েছেন। এদিকে সূত্র বলছে, নতুন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে বছরে এভাবে প্রায় ৪২০ কোটি টাকা বেশি আদায় হবে। ২ শতাংশ হারে কল্যাণ তহবিলে মাসে ১৭ কোটির বেশি টাকা চাঁদা আদায় হয়। ৪ শতাংশ হারে এই অঙ্ক দাঁড়াবে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। অপরদিকে অবসর খাতেও প্রতি মাসে বর্তমানে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা চাঁদা কেটে রাখা হয়। ৬ শতাংশ হার বাস্তবায়ন হলে এটা দাঁড়াবে প্রায় ৫২ কোটি। তবে বর্ধিত চাঁদা কাটার সিদ্ধান্ত কার্যকরের কোনো উদ্যোগ রোববার পর্যন্ত নেয়া হয়নি বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান। শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান এবং অবসর বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, গরিব শিক্ষকদের মাসিক বেতন থেকে বাড়তি টাকা কেটে নেয়ার এই সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক, অমানবিক এবং লুটপাটের শামিল। তিনি বলেন, যাদের ক্লাসরুমের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, সে ধরনের শিক্ষক নেতার সঙ্গে আলোচনা করে চাঁদা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের মধ্যে সাধারণ শিক্ষকদের মতামতের প্রতিফলন নেই। চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, সংকট নিরসনে বাড়তি কোনো টাকা কর্তনের প্রয়োজন নেই। বাড়তি টাকা ছাড়াই এ সমস্যা আমরাই সমাধান করতে পারি। সেলিম ভূঁইয়া ক্ষোভে সঙ্গে বলেন, ৪২০ কোটি টাকা কেটে নেয়ার সিদ্ধান্ত না পাল্টালে আগামী নির্বাচনে সরকার এর সমুচিত জবাব পাবে।
তবে অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী যুগান্তরকে বলেন, বর্তমানে প্রায় ৬৭ হাজার শিক্ষক অবসরে গিয়ে আর্থিক সুবিধার জন্য অপেক্ষা করছেন। গত বছর জুন নাগাদ এটা ছিল ৭৫ হাজার। আবেদনের পাহাড় নিষ্পত্তির জন্য সব শিক্ষক নেতাকে নিয়ে সরকার বসেছিল। সেখানেই সরকারের পাশাপাশি শিক্ষকদের পক্ষ থেকে কন্ট্রিবিউশনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই মোতাবেক সরকার গত বছরের বাজেটে জট দূর করতে অবসর বোর্ডে ১শ’ কোটি ও কল্যাণ ট্রাস্টে ৫০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দেয়। এছাড়া অবসর বোর্ডে ৫শ’ কোটি টাকা সিডমানি (যা খরচ করা যাবে না) দিয়েছে। থোক বরাদ্দ, সিডমানির সুদ এবং চাঁদাসহ অন্যান্য অর্থ মিলিয়ে এক বছরে ৮ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে। এবারের বাজেটেও অবসর খাতে দেড়শ’ এবং কল্যাণ খাতে ৫০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ এসেছে। যেহেতু সরকার এগিয়ে এসেছে, তাই এক বছর পর শিক্ষকদের চাঁদা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু বাড়তি হারে টাকা দেয়ার পরও শিক্ষকদের অবসরে গিয়ে আগের হারেই অর্থ তুলতে হবে। এ নিয়েই শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক ফোরাম নামে ফেসবুকের একটি পেজে এ নিয়ে শিক্ষকদের ব্যাপক অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায়। আনোয়ারুল আজীম নামে একজন ২৮ জুন লিখেছেন, ‘শুভঙ্করের ফাঁকি। একজন শিক্ষক যদি ২২ হাজার টাকা স্কেলে চাকরি শুরু করেন এবং ৩০ বছর চাকরি করেন তাহলে তার কাছ থেকে ১০% হারে অবসর সুবিধা ও কল?্যাণ ট্রাস্ট বাবদ কর্তন হবে ৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা। অথচ ওই শিক্ষক যদি চাকরির শুরুতে ২২শ’ টাকার একটি ১০ বছর মেয়াদি ডিপিএস হিসাব খুলতেন তাহলে তিনি জমা দিতেন ২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। মেয়াদ শেষে যা বেড়ে হতো ৫ লাখ টাকা। এই ৫ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করলে পরবর্তী ৭ বছরে ১০ লাখ, ১৪ বছরে ২০ লাখ, ২১ বছরে ৪০ লাখ টাকা হতো। অপরদিকে একজন শিক্ষক ২৫ বছর চাকরি করলে সর্বশেষ স্কেলের ১০০ মাসের বেতনের সমপরিমাণ হিসাব করে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ তহবিল থেকে পাবেন ২২ লাখ টাকা। তাহলে বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টে চাঁদা দিয়ে লাভ কী? তার চেয়ে বরং কাটাকুটি বন্ধ করে দিক, আমরা নিজেরাই সঞ্চয় করে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হব।’ এ প্রসঙ্গে অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ সাদী যুগান্তরকে জানান, ‘আমাদের সিদ্ধান্তকে দায়ী করতে এই শিক্ষক একটি কল্পচিত্র তুলে ধরেছেন। যে শিক্ষক এমন হিসাব তুলে ধরেছেন তার সারাজীবনে চাঁদা বাবদ এক-দেড় লাখ টাকা জমা হবে। অথচ তিনি নেবেন ২৪ থেকে ৪০ লাখ টাকা। তিনি বলেন, বাড়তি হারে এই টাকা নেয়া হচ্ছে, অনিষ্পন্ন ৬৭ হাজার আবেদনকারীর দায় পরিশোধের জন্য। জট না থাকলে চাঁদা হয়তো একদিন আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। একই আভাস দিয়েছেন কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু।
শিক্ষক ফোরামের ফেসবুক পেজে শুধু উল্লিখিত শিক্ষকই নন, আরও অনেকেই এ নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন। তাতে অবসর-কল্যাণ ট্রাস্টের দুই সদস্য সচিবের ব্যাপারেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। খোদ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পদত্যাগ দাবি এবং আন্দোলনের ডাক দেয়াসহ মামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। ওয়ায়েশ আলী নামে একজন শিক্ষক লিখেছেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বসে যারা জুন মাস থেকে ৪% অতিরিক্ত কর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে পরাজিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কারণ ৪% অতিরিক্ত কর্তনের ফলে শুধু ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীই সরকারের বিপক্ষে যাবে না। এর সঙ্গে তাদের পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, শুভানুধ্যায়ী এবং সমাজের একটি বড় অংশ সরকারের বিপক্ষে চলে যাবে। তাছাড়া জাতীয় নির্বাচনে এই শিক্ষকরাই ভোট কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা বুঝতে পারছি না শিক্ষামন্ত্রীর বিবেকবুদ্ধি লোপ পেয়েছে কিনা!!’ আবদুস সালাম লেখেন, ‘৫% (বার্ষিক বর্ধিত বেতন) না দিয়ে অতিরিক্ত ৪% কাটার সিদ্ধান্ত বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া কিছুই না।’ মাহমুদুল হাসান মাহমুদ নামে একজন লিখেছেন, ‘শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব শাহজাহান সাজু যদি সত্যিকার শিক্ষকবান্ধব নেতা হতেন, তাহলে এমপিও শিক্ষকদের ৬% কর্তনের স্থলে ১০% শোনার পরই পদত্যাগ করতেন।’ ফরিদ আহমেদ লেখেন, শিক্ষক নেতাদের মুখে তালা কেন? জিএম শাওন নামে একজন লেখেন, ‘আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে আন্দোলনের লক্ষ্যে আমরা সিরাজগঞ্জ সদর ও কাজিপুর উপজেলার প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় করতে যাচ্ছি। আপনারাও শুরু করুন।’ আরেক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘৩৮০০০ নয়, ৩৮০০ হলেই সারা বাংলাদেশ কেঁপে উঠবে। কিন্তু জাগতে হবে আমাকে, আপনাকে, সবাইকে। সময় হয়েছে রুখে দাঁড়ানোর।’ কামাল আহমেদ লিখেছেন, ‘আমরা আন্দোলনে নামব। মরলে মরব।’ আহসান টিটু লেখেন, ‘কোনো বাড়তি সুবিধা না দিয়ে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা বেসরকারি শিক্ষকদের প্রতি অন্যায়। ভাবছি, রিট করব- যদি আপনারা সঙ্গে থাকেন। একজন খ্যাতনামা ব্যারিস্টারের সঙ্গে প্রাথমিক কথাও বলেছি।’ মো. রাশেকুর রহমান রাসেল নামে একজন শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে লেখেন, ‘শিক্ষকদের এই মুহূর্তে উচিত হবে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ন্যায্য অধিকার আদায় করে নেয়া, নয়তো শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করা।’ তবে আজাদ নজরুল নামে একজন লেখেন, ‘আমি আশাবাদী, বেসরকারি শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকারগুলো সরকার কোনো আন্দোলন ছাড়াই মেনে নেবে।’
দুই খাতে আয়-ব্যয় : অবসর-কল্যাণ সুবিধার দাবি পরিশোধ করা হয় দুই উৎস থেকে আসা অর্থের মাধ্যমে। একটি চাঁদা, অপরটি ব্যাংকে গচ্ছিত ডিপোজিট ও সিডমানি থেকে সুদ বাবদ আয়। অবসর সুবিধা বোর্ডে বর্তমানে ৫শ’ কোটি টাকা সিডমানি এবং ১৪৭ কোটি টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ আছে। এর মধ্যে আবার ৯০ কোটি টাকা থেকে আসা সুদের অর্থে অফিস খরচ চালানো হয়। এ নিয়ে অবশ্য বোর্ড সদস্যদের আপত্তি আছে। অবসর বোর্ডের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ সাদী বলেন, ব্যাংক থেকে সুদ বাবদ বছরে ৩৫ কোটি টাকা আসে। ৪ শতাংশ হারে বছরে চাঁদা আসে ২১৬ কোটি টাকা। এরপরও বছরে যে চাহিদা তাতে ২১৬ কোটি টাকা ঘাটতি থাকে। তবে চাঁদার বর্ধিত হার বাস্তবায়িত হলে বছরে আসবে আরও ২০৪ কোটি টাকা। এই প্রক্রিয়ায়ও অবশ্য কিছু আবেদন নিষ্পত্তিহীন থাকবে। তবে আবেদনের জট খুলতে সরকারের কাছে আগামী অর্থবছরে আরও বেশি থোক বরাদ্দ চাওয়া হবে। আবেদনের জট নিরসনে মোট ১৮শ’ কোটি টাকা দরকার। এর মধ্যে দুই অর্থবছরে আড়াইশ’ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। অপরদিকে কল্যাণ তহবিলের আবেদনের জট খুলতে অতিরিক্ত ৬শ’ কোটি টাকা দরকার বলে জানান এর সদস্য সচিব অধ্যক্ষ সাজু। তিনি বলেন, এর মধ্যে দুই অর্থবছরে ১শ’ কোটি টাকা মিলেছে। বাকিটা আগামীতে পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছি। কল্যাণ তহবিলে বর্তমানে মাসে শিক্ষকদের দাবি পূরণে ব্যয় হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ কোটি টাকা। শিক্ষকদের কাছ থেকে কল্যাণ ট্রাস্টে ২ শতাংশ চাঁদা বাড়ালে এটা ৩৫ কোটি টাকা হবে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে প্রায় সোয়া ২শ’ কোটি টাকার এফডিআরের আয় থেকে ৩ কোটি টাকা। তারপরও কিছু আবেদন নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন অধ্যক্ষ সাজু। এজন্য আগামীতে বাজেটে থোক বরাদ্দ দরকার হবে। তবে জট খুলে গেলে বাড়তি চাঁদার অর্থ দরকার হবে না বলে জানান তিনি।
দুই খাতে আয়-ব্যয় : অবসর-কল্যাণ সুবিধার দাবি পরিশোধ করা হয় দুই উৎস থেকে আসা অর্থের মাধ্যমে। একটি চাঁদা, অপরটি ব্যাংকে গচ্ছিত ডিপোজিট ও সিডমানি থেকে সুদ বাবদ আয়। অবসর সুবিধা বোর্ডে বর্তমানে ৫শ’ কোটি টাকা সিডমানি এবং ১৪৭ কোটি টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ আছে। এর মধ্যে আবার ৯০ কোটি টাকা থেকে আসা সুদের অর্থে অফিস খরচ চালানো হয়। এ নিয়ে অবশ্য বোর্ড সদস্যদের আপত্তি আছে। অবসর বোর্ডের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ সাদী বলেন, ব্যাংক থেকে সুদ বাবদ বছরে ৩৫ কোটি টাকা আসে। ৪ শতাংশ হারে বছরে চাঁদা আসে ২১৬ কোটি টাকা। এরপরও বছরে যে চাহিদা তাতে ২১৬ কোটি টাকা ঘাটতি থাকে। তবে চাঁদার বর্ধিত হার বাস্তবায়িত হলে বছরে আসবে আরও ২০৪ কোটি টাকা। এই প্রক্রিয়ায়ও অবশ্য কিছু আবেদন নিষ্পত্তিহীন থাকবে। তবে আবেদনের জট খুলতে সরকারের কাছে আগামী অর্থবছরে আরও বেশি থোক বরাদ্দ চাওয়া হবে। আবেদনের জট নিরসনে মোট ১৮শ’ কোটি টাকা দরকার। এর মধ্যে দুই অর্থবছরে আড়াইশ’ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। অপরদিকে কল্যাণ তহবিলের আবেদনের জট খুলতে অতিরিক্ত ৬শ’ কোটি টাকা দরকার বলে জানান এর সদস্য সচিব অধ্যক্ষ সাজু। তিনি বলেন, এর মধ্যে দুই অর্থবছরে ১শ’ কোটি টাকা মিলেছে। বাকিটা আগামীতে পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছি। কল্যাণ তহবিলে বর্তমানে মাসে শিক্ষকদের দাবি পূরণে ব্যয় হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ কোটি টাকা। শিক্ষকদের কাছ থেকে কল্যাণ ট্রাস্টে ২ শতাংশ চাঁদা বাড়ালে এটা ৩৫ কোটি টাকা হবে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে প্রায় সোয়া ২শ’ কোটি টাকার এফডিআরের আয় থেকে ৩ কোটি টাকা। তারপরও কিছু আবেদন নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন অধ্যক্ষ সাজু। এজন্য আগামীতে বাজেটে থোক বরাদ্দ দরকার হবে। তবে জট খুলে গেলে বাড়তি চাঁদার অর্থ দরকার হবে না বলে জানান তিনি।
No comments