তিস্তায় উজানের ঢল, আনন্দে আত্মহারা বোরোচাষী- ৭ বছরে এমন চিত্র দেখা যায়নি, জেলেদের মুখেও হাসি
উজানের ঢলে নীলফামারীতে তিস্তা নদী এখন
টইটুম্বুর। পানি ধেয়ে আসছে । গত ৭ বছরে এমন চিত্র আর দেখা যায়নি। তিসত্মার
পানি দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে বোরো আবাদে
চাহিদামতো সেচ পেয়ে কৃষক আনন্দে আত্মহারা।
এদিকে চুক্তির
আগেই পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজ ও তিস্তা নদী যেন যৌবন
ফিরে পেয়েছে। হাসি ফুটেছে বোরো চাষীদের মুখে। হাসি ফুটেছে তিস্তা তীরবর্তী
মৎস্যজীবীদের মুখেও।
গত সপ্তাহ ধরে তিসত্মা ব্যারাজ দিয়ে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুরে পানি প্রাপ্তি সাড়ে তিন হাজার থেকে পৌনে চার হাজার কিউসেকে উন্নীত হয়েছে। সাতদিন আগেও তিসত্মায় পানিপ্রবাহ ছিল দেড় থেকে ২ হাজার কিউসেক। পানি সঙ্কটের কারণে বোরো চাষ নিয়ে তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকরা যে দুশ্চিন্তা আর হতাশায় ভুগছিলেন, চাহিদা মতো পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের মনে আশার আলো জেগেছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে পানি সঙ্কটের আশঙ্কা না থাকায় বোরো চাষীদের মুখেও হাসি ফুটেছে। খবর নিজস্ব সংবাদদাতাদের।
নীলফামারীর রামনগর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বললেন_ 'বাহে, এই বার হামাক সেচের জন্য বিৰোভ বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস ঘেরাও করিবার লাগেনি। পানি আপনাআপনি চলি আসছে। প্রধান খাল সেকেন্ডারি খাল ও টারশিয়ারি খাল দিয়া হু হু করি সেচের পানি জমিত চলি আইসেছে। নদীর পানির সেচ পায়া বোরো ধানের চারাগুলা তরতর করি বাড়ি উঠছে বাহে।' শুধু কৃষক আফজাল নয়, সকল কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের ঝিলিক। জোড়কদমে বোরা আবাদে তারা আত্নহারা। তাদের হৃদয় ছুঁয়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। অথচ গত ৭ বছরে পানি সঙ্কটের কারণে তারা বোরো ৰেত নিয়ে যে কি দুশ্চিনত্মা আর হতাশায় ছিল! সেচের জন্য তারা আন্দোলন করেছে। কিন্তু বিগত চারদলীয় জোট সরকার কৃষকদের কথা একবারও না ভেবে তিসত্মার পানির হিস্যা নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলেনি। এবার সেচ পেয়ে কৃষককুল বলে ওঠে, বাহে হামার কৃষকদের তেনে ( জন্য) শেখ হাসিনা সরকারই ভালা ( ভাল)।
তিসত্মা নদীতে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকরা সেচের জন্য আর কষ্ট করছে না। সংশিস্নষ্ট কর্তৃপৰ বলছেন, তিসত্মা ব্যারাজ নির্মাণের পর এই প্রথম চাহিদামতো পানি পাচ্ছে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক। চলতি শুষ্ক মৌসুমে তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতায় চাহিদা অনুযায়ী বুধবার পর্যনত্ম পানি প্রবাহিত হচ্ছিল চার হাজার কিউসেকের উপরে। পাউবো সূত্র জানায়, গত ৬ বছর পর তিসত্মার পানি প্রাপ্যতা নিয়ে বর্তমান সরকার বড় ধরনের ভূমিকা নিয়েছে বলেই তিসত্মা প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। সূত্র মতে, খরিফ মৌসুমে তিসত্মা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের আওতায় নীলফামারী, রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলার ৩৫টি উপজেলায় ১ লাখ ৩৫ হাজার হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় আনা হলেও তিসত্মা নদীতে পানি সঙ্কটের কারণে এবার ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লৰ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বোরো মৌসুমে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও পানি সঙ্কটের কারণে বোরো আবাদ মার খায়। তিসত্মা ব্যারাজের ১শ' ২০ কিলোমিটার উজানে ভারতের গজলডোবা বাঁধে একতরফা পানি প্রত্যাহার করার কারণে তিসত্মায় পানিপ্রবাহ মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়। বর্তমান সরকার এবার তিসত্মা পানির হিস্যা চূূড়ানত্ম করতে যাচ্ছে; চূড়ানত্ম হিস্যার আগেই তিসত্মা প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম জানান, শুষ্ক মৌসুমে আমাদের প্রকৃত চাহিদা আট হাজার কিউসেক পানি। তবে চার হাজার কিউসেক পানি পেলেও বোরো চাষের জন্য পানির সঙ্কট থাকে না। কিন্তু সেটাও আমরা পাই না। তিনি জানান, গত বছর শুষ্ক মৌসুমে পানিরপ্রবাহ ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ কিউসেক। জরিপ রিপোর্ট অনুযায়ী ৯৯ সালের জানুয়ারিতে ব্যারাজ এলাকায় পানিপ্রবাহ ছিল ১০৩৩ কিউসেক। ২০০০ সালে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের একাধিক বৈঠকের পর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫৩০ কিউসেকে। ২০০১ সালের জানুয়ারিতে তা নেমে আসে ১৪০৬ কিউসেক, ২০০২ সালের জানুয়ারি ১০০০ কিউসেক, ২০০৩ সালের জানুয়ারি ১১০০ কিউসেক, ২০০৬ সালের নবেম্বরে ৯শ' ৫০ কিউসেক, ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে ৫শ' ২৫ কিউসেক এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে তিসত্মায় পানিপ্রবাহ দেড় হাজার কিউসেকে এসে দাঁড়ায়।
তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের অপর একটি সূত্র জানায়, প্রতিবছর ৫ কোটি মেট্রিক টন পলি উজান থেকে ব্যারাজে এসে নদীতে চলে যায়। আবার ব্যারাজ এলাকায় ৪৫ হেক্টর জমিতে সিলট্র্যাক করা হয়েছে। এই সিলট্রাক থেকে বছরে প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন পলি ৩৪ কিমিঃ দীর্ঘ প্রধান ক্যানেল হয়ে নদীতে যায়। ফলে প্রধান ক্যানেলের পানি দূষিত হচ্ছে ও ক্যানেলের উপর ২ ফুট পলি জমে পানির সত্মর কমেছে এবং ডালিয়া পয়েন্ট থেকে কাউনিয়া পয়েন্ট পর্যনত্ম ৬৫ কিমিঃ নদীতে পানিই থাকে না; এখানে তিসত্মা নদীকে মনে হয় মরম্নভূমি। সূত্র জানায়, তিসত্মায় পানিপ্রবাহ বাড়াতে গেলে শুধু ভারতের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। নদী ড্রেজিং করতে হবে এবং প্রতিবছর সিলট্র্যাক ড্রেজিং করতে হবে।
আগামী ২০ মার্চ তিসত্মার পানি বণ্টন চুক্তি স্বারের যে সম্ভাবনা রয়েছে তার আগেই তিসত্মার পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনাকে ইতিবাচক দিক বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। গত ১৭ ফেব্রম্নয়ারি যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) কর্মকর্তারা লালমনিরহাটে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্প ও তিসত্মার পানিপ্রবাহ পর্যবেণ শেষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর পরই তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের উজানে ভারত গজলডোবা বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় তিসত্মা নদীতে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পায় বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে চাহিদামতো পানিপ্রবাহের ফলে চলতি বোরো মৌসুমে তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির সেচ কাজে পানির যে সঙঙ্কট দেখা দিয়েছিল, তা কেটে যাবে। পানিপ্রবাহের বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে সেচ কাজে পানির কোন সমস্যাই হবে না বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড উত্তরাঞ্চল রংপুরের প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল হক ও পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাট দোয়ানীর পরিচালন ও রণাবেণ উপ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মঈন উদ্দিন ম-ল জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড উত্তরাঞ্চল রংপুরের প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল হক জানান, তিসত্মা নদীতে শুষ্ক মৌসুমে কমপ ে৪ হাজার কিউসেক পানিপ্রবাহ থাকা জরম্নরী; তা না হলে তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতাধীন সেচ ক্যানেলগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। আর এ কারণে বোরো আবাদ হুমকির মুখে পড়বে। পানির এ সঙ্কট নিরসনের ল্যে গত জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় উভয় দেশ মার্চের মধ্যে তিসত্মার পানি বণ্টন চুক্তির ল্যে বৈঠকে সিদ্ধানত্ম নেয়।
গত সপ্তাহ ধরে তিসত্মা ব্যারাজ দিয়ে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুরে পানি প্রাপ্তি সাড়ে তিন হাজার থেকে পৌনে চার হাজার কিউসেকে উন্নীত হয়েছে। সাতদিন আগেও তিসত্মায় পানিপ্রবাহ ছিল দেড় থেকে ২ হাজার কিউসেক। পানি সঙ্কটের কারণে বোরো চাষ নিয়ে তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকরা যে দুশ্চিন্তা আর হতাশায় ভুগছিলেন, চাহিদা মতো পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের মনে আশার আলো জেগেছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে পানি সঙ্কটের আশঙ্কা না থাকায় বোরো চাষীদের মুখেও হাসি ফুটেছে। খবর নিজস্ব সংবাদদাতাদের।
নীলফামারীর রামনগর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বললেন_ 'বাহে, এই বার হামাক সেচের জন্য বিৰোভ বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস ঘেরাও করিবার লাগেনি। পানি আপনাআপনি চলি আসছে। প্রধান খাল সেকেন্ডারি খাল ও টারশিয়ারি খাল দিয়া হু হু করি সেচের পানি জমিত চলি আইসেছে। নদীর পানির সেচ পায়া বোরো ধানের চারাগুলা তরতর করি বাড়ি উঠছে বাহে।' শুধু কৃষক আফজাল নয়, সকল কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের ঝিলিক। জোড়কদমে বোরা আবাদে তারা আত্নহারা। তাদের হৃদয় ছুঁয়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। অথচ গত ৭ বছরে পানি সঙ্কটের কারণে তারা বোরো ৰেত নিয়ে যে কি দুশ্চিনত্মা আর হতাশায় ছিল! সেচের জন্য তারা আন্দোলন করেছে। কিন্তু বিগত চারদলীয় জোট সরকার কৃষকদের কথা একবারও না ভেবে তিসত্মার পানির হিস্যা নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলেনি। এবার সেচ পেয়ে কৃষককুল বলে ওঠে, বাহে হামার কৃষকদের তেনে ( জন্য) শেখ হাসিনা সরকারই ভালা ( ভাল)।
তিসত্মা নদীতে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকরা সেচের জন্য আর কষ্ট করছে না। সংশিস্নষ্ট কর্তৃপৰ বলছেন, তিসত্মা ব্যারাজ নির্মাণের পর এই প্রথম চাহিদামতো পানি পাচ্ছে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক। চলতি শুষ্ক মৌসুমে তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতায় চাহিদা অনুযায়ী বুধবার পর্যনত্ম পানি প্রবাহিত হচ্ছিল চার হাজার কিউসেকের উপরে। পাউবো সূত্র জানায়, গত ৬ বছর পর তিসত্মার পানি প্রাপ্যতা নিয়ে বর্তমান সরকার বড় ধরনের ভূমিকা নিয়েছে বলেই তিসত্মা প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। সূত্র মতে, খরিফ মৌসুমে তিসত্মা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের আওতায় নীলফামারী, রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলার ৩৫টি উপজেলায় ১ লাখ ৩৫ হাজার হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় আনা হলেও তিসত্মা নদীতে পানি সঙ্কটের কারণে এবার ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লৰ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বোরো মৌসুমে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও পানি সঙ্কটের কারণে বোরো আবাদ মার খায়। তিসত্মা ব্যারাজের ১শ' ২০ কিলোমিটার উজানে ভারতের গজলডোবা বাঁধে একতরফা পানি প্রত্যাহার করার কারণে তিসত্মায় পানিপ্রবাহ মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়। বর্তমান সরকার এবার তিসত্মা পানির হিস্যা চূূড়ানত্ম করতে যাচ্ছে; চূড়ানত্ম হিস্যার আগেই তিসত্মা প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম জানান, শুষ্ক মৌসুমে আমাদের প্রকৃত চাহিদা আট হাজার কিউসেক পানি। তবে চার হাজার কিউসেক পানি পেলেও বোরো চাষের জন্য পানির সঙ্কট থাকে না। কিন্তু সেটাও আমরা পাই না। তিনি জানান, গত বছর শুষ্ক মৌসুমে পানিরপ্রবাহ ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ কিউসেক। জরিপ রিপোর্ট অনুযায়ী ৯৯ সালের জানুয়ারিতে ব্যারাজ এলাকায় পানিপ্রবাহ ছিল ১০৩৩ কিউসেক। ২০০০ সালে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের একাধিক বৈঠকের পর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫৩০ কিউসেকে। ২০০১ সালের জানুয়ারিতে তা নেমে আসে ১৪০৬ কিউসেক, ২০০২ সালের জানুয়ারি ১০০০ কিউসেক, ২০০৩ সালের জানুয়ারি ১১০০ কিউসেক, ২০০৬ সালের নবেম্বরে ৯শ' ৫০ কিউসেক, ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে ৫শ' ২৫ কিউসেক এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে তিসত্মায় পানিপ্রবাহ দেড় হাজার কিউসেকে এসে দাঁড়ায়।
তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের অপর একটি সূত্র জানায়, প্রতিবছর ৫ কোটি মেট্রিক টন পলি উজান থেকে ব্যারাজে এসে নদীতে চলে যায়। আবার ব্যারাজ এলাকায় ৪৫ হেক্টর জমিতে সিলট্র্যাক করা হয়েছে। এই সিলট্রাক থেকে বছরে প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন পলি ৩৪ কিমিঃ দীর্ঘ প্রধান ক্যানেল হয়ে নদীতে যায়। ফলে প্রধান ক্যানেলের পানি দূষিত হচ্ছে ও ক্যানেলের উপর ২ ফুট পলি জমে পানির সত্মর কমেছে এবং ডালিয়া পয়েন্ট থেকে কাউনিয়া পয়েন্ট পর্যনত্ম ৬৫ কিমিঃ নদীতে পানিই থাকে না; এখানে তিসত্মা নদীকে মনে হয় মরম্নভূমি। সূত্র জানায়, তিসত্মায় পানিপ্রবাহ বাড়াতে গেলে শুধু ভারতের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। নদী ড্রেজিং করতে হবে এবং প্রতিবছর সিলট্র্যাক ড্রেজিং করতে হবে।
আগামী ২০ মার্চ তিসত্মার পানি বণ্টন চুক্তি স্বারের যে সম্ভাবনা রয়েছে তার আগেই তিসত্মার পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনাকে ইতিবাচক দিক বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। গত ১৭ ফেব্রম্নয়ারি যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) কর্মকর্তারা লালমনিরহাটে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্প ও তিসত্মার পানিপ্রবাহ পর্যবেণ শেষে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর পরই তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের উজানে ভারত গজলডোবা বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় তিসত্মা নদীতে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পায় বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে চাহিদামতো পানিপ্রবাহের ফলে চলতি বোরো মৌসুমে তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির সেচ কাজে পানির যে সঙঙ্কট দেখা দিয়েছিল, তা কেটে যাবে। পানিপ্রবাহের বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে সেচ কাজে পানির কোন সমস্যাই হবে না বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড উত্তরাঞ্চল রংপুরের প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল হক ও পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাট দোয়ানীর পরিচালন ও রণাবেণ উপ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মঈন উদ্দিন ম-ল জানিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড উত্তরাঞ্চল রংপুরের প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল হক জানান, তিসত্মা নদীতে শুষ্ক মৌসুমে কমপ ে৪ হাজার কিউসেক পানিপ্রবাহ থাকা জরম্নরী; তা না হলে তিসত্মা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতাধীন সেচ ক্যানেলগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। আর এ কারণে বোরো আবাদ হুমকির মুখে পড়বে। পানির এ সঙ্কট নিরসনের ল্যে গত জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় উভয় দেশ মার্চের মধ্যে তিসত্মার পানি বণ্টন চুক্তির ল্যে বৈঠকে সিদ্ধানত্ম নেয়।
No comments