মেহেরপুর দিনাজপুর খুলনায় ছাত্রলীগ শিবির সংঘর্ষ- আহত ৫৫, জিহাদী বই ও অস্ত্রসহ আটক ২৬
খুলনার বিএল কলেজে শুক্রবার ছাত্রলীগ ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ কমপৰে ৪০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপৰ জরম্নরী সভা ডেকে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছে।
দিনাজপুর সরকারী কলেজে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষে কমপৰে ১৫ জন আহত হয়েছে। এছাড়া এ সময় কলেজের দুইটি হোস্টেলের ৩০টি কৰ ভাংচুর করা হয় এবং আসবাবপত্র জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এদিকে, মেহেরপুর সরকারী কলেজে ছাত্রলীগ ছাত্রশিবির সংঘর্ষে ২৬ শিবির নেতাকমর্ীকে জিহাদী বই ও অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের।খুলনা মহানগরীর দৌলতপুরের সরকারী ব্রজ লাল কলেজ (বিএল কলেজ) এ শুক্রবার দুপুরে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের নেতা কমর্ীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে তিন পুলিশ ও সাংবাদিকসহ কমপ ে৪০ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিপে করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কলেজের অধ্যৰের সভাপতিত্বে শিৰক পরিষদের জরম্নরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কলেজ কতর্ৃপ ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কলেজে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার সরকারী বিএল কলেজে বিভিন্ন বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীা হয়। পরীাথর্ীদের স্বাগত জানাতে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন বেলা ১২টায় পরীা শেষে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে। নানা সেস্নাগানের মাধ্যমে ভর্তিচ্ছু শিাথর্ীদের অভিনন্দন জানায়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্রশিবিরের কমর্ীরা বিএল কলেজ মাঠের মাঝে অবস্থান নিয়ে উলস্নাস করতে থাকে। এ সময় ছাত্রলীগের কমর্ীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের দিকে মিছিলসহকারে এগিয়ে যেতে থাকে। তখন মাঝ মাঠে অবস্থান নেয়া শিবিরের নেতাকমর্ীরা তাদের বাধা প্রদান করে। এ অবস্থায় দুই সংগঠনের নেতাকমর্ীদের মধ্যে তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতি হয়। এ সময় তিতুমির ও মহসীন হল থেকে ছাত্রশিবিরের কমর্ীরা লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ক্যাম্পাসে এসে ছাত্রলীগের কমর্ীদের ধাওয়া করে। ছাত্রলীগ তাৎণিক পিছু হটে এবং পরে সংগঠিত হয়ে শিবির কমর্ীদের ধাওয়া করে। শুরম্ন হয় দুই পরে মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় উভয়প একে অপরের প্রতি ব্যাপক ইট-পাটকেল নিপে করে এবং লাঠিসোটা, রামদাসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়। ছাত্রলীগের কমর্ীরা শিবিরের ঘাঁটি বলে পরিচিত তিতুমির ও মহসীন হলে চড়াও হয়ে ভাংচুর করে। এ অবস্থায় পুলিশ ক্যাম্পাসে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য লাঠি চার্জ ও ২০ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস নিপে করে। তখন বিবদমান ছাত্র সংগঠনের নেতাকমর্ীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। বেলা আড়াইটা পর্যনত্ম সংঘর্ষ চলে। পুলিশ এ ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে ৮ জনকে আটক করে। শেখ সোহেল উদ্দীন (১৭), মোঃ আসলাম (১৮), আবু হাসান (১৭), শরিফুল ইসলাম (১৭), মাসুম বিলস্নাহ্ (১৮), জিয়ারম্নল ইসলাম (১৭), রিয়াজ মাহমুদ (২০) ও কামাল হোসেন (৩০)। সংঘর্ষের পর তলস্নাশিকালে কলেজের মহসিন হলের সব ক তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
দিনাজপুর সরকারী কলেজে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষে কমপ ে১৫ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাজু ও সাকিবকে গুরম্নতর আহত অবস্থায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাস ও আশেপাশে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সংঘর্ষ এড়াতে কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যদর্শীরা জানায়, শুক্রবার দিনাজপুর সরকারী কলেজে অনার্স ভর্তি পরীা শেষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে শুভেচ্ছা মিছিল বের করলে মিছিলটি অধ্যরে কার্যালয়ের সম্মুখ দিয়ে যাওয়ার পর পরই ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা অতর্কিতভাবে ছাত্রলীগের মিছিলে হামলা চালায়। এতে ছাত্রলীগের রতন, সাজু, অজিত পাল, মিথুন, প্রদীপ রায়, সাকিব, পাপাই, হামিদুরসহ প্রায় ১০ ছাত্রলীগ নেতা আহত হয়। এ খবর ক্যাম্পাসসহ আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগের নেতা ও সমর্থকরা ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর চড়াও হয়। নেতাকর্মীরা জীবন বাঁচাতে মুসলিম হোষ্টেলের ছাদে আশ্রয় নেয়। তাদের ইট পাটকেল ছোড়ার ফলে কেউই হোস্টেলের ধারেকাছে ভিড়তে পারেনি। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান শামীম ইকবাল ও সদর সার্কেলের এএসপি সঞ্জিত রায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় উভয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা মুসলিম হোস্টেল-১ এবং মুসলিম হোস্টেল-২ এর ৩০টি ক ভাংচুর ও আগুন দিয়ে আসবাবপত্র জ্বালিয়ে দেয়। এই দুটি হোস্টেলের মধ্যে একটি ছাত্রলীগের এবং অপরটি ছাত্রশিবিরের দখলে ছিল বলে জানা গেছে।
মেহেরপুর সরকারী কলেজে অনার্স ভর্তি পরীা শেষে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে ২৬ শিবির নেতাকর্মী আটক ও জিহাদী বইসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাংবাদিকরা আটককৃতদের ছবি তুলতে গেলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এই নিয়ে ােভের সৃষ্টি হয়েছে। আটককৃতরা হলো জেলা শিবিরের সভাপতি ইকবাল হুসাইন, সেক্রেটারি সোহেল রানা ডলারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা মোসত্মাফিজুর রহমান, মোখলেচুর রহমান, বেনজির আহম্মেদ, নবী উল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, আসিফ ইকবাল শুকচাঁদ, শাকিল হোসেন, সাগর, মাসুদ-উজ জামান, রাজিব, আনোয়ার হোসেন, আবু সাঈদ, মফিজুর রহমান, ইমরান হোসেন, রহিদুল, পারভেজ, শাহিন, ফেরদৌস, বনি-ইসরাঈল, খালেদ, সোহেল রানা, আব্দুল হালিম, রাফিউল ইসলাম, হামিদুর রহমান।
সদর থানার ওসি রবিউল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এদিকে সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মেহেরপুর জেলা শাখা ছাত্রলীগের ওপর ছাত্রশিবিরের হামলার প্রতিবাদে এবং দৃষ্টানত্মমূলক শাসত্মির দাবিতে শহরে বিােভ মিছিল করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
No comments