শীতে জবুথবু উত্তরের মানুষ, আরও ৮ জনের মৃতু্য- দিনাজপুরে জুমার নামাজে বিশেষ মোনাজাত
তাপমাত্রা বাড়লেও কমছে না শীতের তীব্রতা। কনকনে শীতের দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাচ্ছে না দেশবাসী। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে দিনাজপুরে বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ শেষে বিশেষ দোয়া আদায় করা হয়।
কমছে না শীতজনিত রোগে আক্রানত্ম ও মৃতু্যর সংখ্যা। শুক্রবারও ৮ জনের মৃতু্য ঘটেছে। এ নিয়ে গত ২৬ দিনে শীতে মৃতু্যর সংখ্যা দাঁড়াল ১১১। ঘন কুয়াশায় সড়কপথে ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। বৃহস্পতিবার রাতে দিনাজপুর_রংপুর ও দিনাজপুর_গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে ৮টি ছোট-বড় দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থাকছে নৌ চলাচল। সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে আজ শনিবারও।আবহাওয়া অফিস জানায়, শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়লেও কমেছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বৃহস্পতিবারের তুলনায় ২ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পায়। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমে যায় ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার দেশের ৪ বিভাগে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বৃহস্পতিবারের তুলনায় ঢাকা বিভাগে ৫, রাজশাহীতে ২ দশমিক ২, খুলনায় শূন্য দশমিক ১ এবং বরিশালে শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস কমে যায়। চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকলেও সিলেটে কমে যায় ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সূত্রটি আরও জানায়, রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুর ও শ্রীমঙ্গল অঞ্চলসমূহে বিরাজমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে গত দু'দিন ধরে সূর্যের দেখা পাচ্ছে রাজধানীবাসী। শুক্রবারও সকাল আটটার মধ্যেই সূর্যের দেখা মেলে। মাত্রা কমে এলেও সকাল দশটা পর্যনত্ম শীত অনুভূত হয়েছে। বিকেল তিনটার পর কমে আসতে থাকে সূর্যের প্রখরতা। কুয়াশার দখলে চলে যায় নগরীর আকাশ। বইতে থাকে হিমেল বাতাস। বেড়ে যায় শীতের তীব্রতা।
নিজস্ব সংবাদদাতা নীলফামারী থেকে জানান, মাঘের শীতে জবুথবু জনজীবন। শীতের তীব্রতার কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে মানুষ। বেড়ে গেছে শীতজনিত রোগবালাই। শীতজনিত রোগে আক্রানত্ম হয়ে জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ি গ্রামের আব্দুর রহমান (৬০) ও জেলা সদরের বাজিতপাড়ার খোদেজা বেগম (৭০) মারা যান। এ নিয়ে গত কয়েকদিনে শীতে ১৫ জনের মৃতু্য হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার দিনাজপুর থেকে জানান, শুক্রবার ভোর থেকে দিনাজপুরে ফের শুরম্ন হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। জেলার ২৫ লাখ মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। শীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ জনের মৃতু্য হয়েছে। এরা হলেন খানসামা উপজেলার পাকেরহাট এলাকার ধীরেন (৬৪), হাকিমপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আশুনা বেওয়া (৭৩), ঘোড়াঘাট উপজেলার কুন্দরনপুর গ্রামের মজিবর রহমান (৭০), চোরগাছা গ্রামের অনি বেওয়া (৬৫), শ্যামপুর গ্রামের শানত্মনা (১) ও ওসমানপুর বাজারে শহীদ মিনারে অজ্ঞাতনামা এক পাগল। এ নিয়ে জেলায় শীতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ শেষে বিশেষ দোয়া আদায় করা হয়। ঘন কুয়াশার কারণে বৃহস্পতিবার রাতে দিনাজপুর_রংপুর ও দিনাজপুর_গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে ৮টি ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। এ সব দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার জেলার বিভিন্ন স্থানে শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বিডিআর জওয়ানরা।
নিজস্ব সংবাদদাতা মোহনগঞ্জ থেকে জানান, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের ধনু নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে ৮ ঘণ্টা নৌ চলাচল বন্ধ ছিল। বিআইডবিস্নউটিসি কর্মকর্তা আব্দুল জলিল জানান, মোহনগঞ্জের ধনু নদী দিয়ে সিলেটের সুরমা নদী হয়ে নারায়ণগঞ্জে যাচ্ছিল আটকেপড়া ওই সব মালবাহী কার্গো, যাত্রীবাহী লঞ্চ, ছোট ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা। এ সময় আটকেপড়া শত শত যাত্রী তীব্র শীতে চরম দুর্ভোগের শিকার হন। শুক্রবার সকাল ১১টার পর এ রম্নটে নৌ চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানা গেছে।
No comments