নয়াদিল্লিতে গণধর্ষণ- অভিযুক্ত হলেন পাঁচজন, রুদ্ধদ্বার বিচার হবে



নয়াদিল্লিতে গণধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেডিকেলের ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় সন্দেহভাজন পাঁচজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দিল্লির একটি আদালতে এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে অপহরণ, গণধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
এদিকে এই মামলার কার্যক্রম রুদ্ধদ্বারে (ক্যামেরা ট্রায়াল) পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মামলাটির শুনানিকালে সাংবাদিক, আইনজীবী, নিরাপত্তাকর্মী ও দর্শকদের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে আদালত এই নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ ছাড়া এই মামলাসংক্রান্ত কোনো খবর না ছাপাতেও গণমাধ্যমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রুদ্ধদ্বার বিচারে বিচারক, দুই পক্ষের নির্দিষ্টসংখ্যক আইনজীবী ও আসামি ছাড়া অন্য কেউ আদালতকক্ষে উপস্থিত থাকতে পারেন না।
আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে দিল্লি পুলিশ বাসচালক রাম সিং, তাঁর ভাই মুকেশ, ফল বিক্রেতা পবন গুপ্ত, শরীরচর্চার প্রশিক্ষক বিনয় শর্মা ও বাসের পরিচ্ছন্নতাকর্মী অক্ষয় ঠাকুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হামলার আলামত নষ্ট করা এবং অপরাধের ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনা হয়েছে। পবন গুপ্ত ও বিনয় শর্মা লঘু শাস্তির আশায় গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার রাজসাক্ষী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে, রাম সিং ও মুকেশ মামলায় লড়াই করার জন্য আইনি সহায়তা চেয়েছেন।
শুনানিতে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে মামলার ছয় অভিযুক্ত আসামির মধ্যে পাঁচজনকে দিল্লির সাকেত জেলা আদালত প্রাঙ্গণে হাজির করা হয়। কিন্তু আদালতকক্ষে প্রচণ্ড ভিড় থাকায় তাঁদের মহানগর হাকিমের সামনে উপস্থিত করা যায়নি। আইনজীবী, সাংবাদিক, দর্শক ছাড়াও আদালতকক্ষে প্রায় ৪০ জন্য নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া দুজন আইনজীবী অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পক্ষে লড়াই করার কথা জানালে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরে বিচারক বাধ্য হয়ে আদালতের কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করেন এবং ক্যামেরা ট্রায়ালের নির্দেশ দেন।
আদালত বলেন, আসামিদের হাজির করার মতো কোনো জায়গা আদালতকক্ষে নেই; তাই ভিড় না কমলে তিনি শুনানি করবেন না।
ধারণা করা হচ্ছে, মামলাটি বিশেষ আদালতে স্থানান্তর করা হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৯ থেকে ৩৫ বছর বয়সী অভিযুক্ত পাঁচজনের ডিএনএ টেস্ট ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। নয়াদিল্লির তিহার কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে তাঁরা আটক রয়েছেন। ষষ্ঠ অভিযুক্ত ব্যক্তির বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় কিশোর আদালতে তার মামলা চলবে।
গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে নয়াদিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হন মেডিকেলের ওই ছাত্রী (২৩)। পরে তাঁকে ও তাঁর বন্ধুকে বেদম মারধর করে বাস থেকে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে গত ২৯ ডিসেম্বর মারা যান ওই ছাত্রী। এএফপি, বিবিসি, দ্য হিন্দু ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

No comments

Powered by Blogger.