বলতে চাই- কাজের স্বীকৃতি
একটা মেয়ে সে যতই কাজ করম্নক না কেন তার ঘরের কাজের কিন্তু কোন মূল্য আমরা দেই না, দিতে জানি না। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় যে গৃহিণীরা ঘরের কাজ করে সময় কাটায় আর যারা চাকরি করছে, অর্থ-উপার্জন করছে তাদের কাজের মূল্য অনেক বেশি।
মোট কথা, আমরা যারা বাইরে কাজ করি, মাস শেষে বেতন/ মজুির বা সম্মানী যে যাই পাই না কেন অর্থনীতিবিদরা এগুলোকে অর্থনৈতিক কাজ বলে স্বীকৃতি প্রদান করেন। কিন্তু মায়ের ভালবাসাই বলি আর স্ত্রীর প্রেম বা ভক্তি ভরে স্বামীর সেবা, রান্না করা, ঘর গোছানো, সংসার এবং বাচ্চার যত্ন এগুলো কিছুই কিন্তু অর্থনৈতিক কাজ বলে স্বীকৃত নয়। কিন্তু তাদের সাপোর্ট ছাড়া আমরা যারা বাইরে সারাদিন কাজ করছি তাদের সংসার টিকত কি করে? শুধু অর্থই উপার্জন হতো, খাত অনুযায়ী টাকা বন্টন করে দেয়া হতো কিন্তু সংসারের স্ত্রী বৃদ্ধ কিংবা ছোট, বৃদ্ধ এবং অসুস্থদের দেখাশোনা করত কারা ?স্বীকার করছি যে সংসারে স্বামী-স্ত্রী দু'জনই চাকরি করেন কিংবা অর্থ উপার্জন করেন। তাঁদের সংসার অনেক বেশি সচ্ছল একক উপার্জনের চেয়ে। কিন্তু দেখা যাবে যে সংসারে একজন অভিভাবক রয়েছেন তিনি সংসারটি গাইড করছেন। মনে হতে পারে বৃদ্ধাটি একটি বোঝা। পুরনো আসবাবপত্রের মতোই অপ্রয়োজনীয়, উপার্জনহীন একজন মানুষ।
সংসারে যারা কেবল সংসারই করছে তাদের ঘরদোরের কাজ করার মূল্য আমরা বিবেচনা করি না। সে যদি ঐ একই সময় বাইরে বের হয়ে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করে তবে কি সে পারবে না ? এর জন্য দরকার চেষ্টা। অনেকে বলবে তাদের মধ্যে অনেকে শিতি না। যারা পোশাক শিল্পে (গারমেন্টস) কাজ করছে প্রোডাকশনে এ তারা বড়জোর কাস এইট পাস, যারা মাসে গড়ে তিন হাজার থেকে আট হাজার টাকা আয় করছে কম করে হলেও।
সব শেষে আমি এই বলব যে, জীবনের শেষ লগ্নে এসে অর্থনৈতিক টানাপোড়নের শিকার না হয়ে নিজের আত্মমর্যাদা বজায় রাখার জন্য কিছু আয় করা দরকার। টিউশনি হোক, হাতের কাজ, পোল্ট্রি, নাসার্রি। তবুও কিছু না কিছু করে অর্থনৈতিক কাজে অংশ নিন। এতে নিজের হাত খরচও চলবে, নিজের সনত্মানদের ভরণপোষণ নিজেই করা যাবে। পরনির্ভরশীল না থেকে, পরগাছা না হয়ে থেকে আমাদের এই হাতটাই হোক না কমর্ীর হাত। কেবল স্নেহময়ী মা প্রেমময়ী স্ত্রী নয়, সংসারের আয়ের একটি হাত, অর্থনৈতিক একটু স্বাধীনতা।
মেয়েরা বিয়ের পরে নিজের মায়ের কোন দেখাশোনা করতে পারে না। যদি মেয়েটির বাবা না থাকে সেেেত্র মাকে দেখা অত্যনত্ম জরম্নরী। আর সে মেয়েটি যদি নিজে উপার্জন না করে তাহলে স্বামীর প থেকে নিয়ে হেলপ করা যায় না, নিজেকে ছোট মনে হয়। কাজেই সংসার ঠিক রেখে সময় বের করে নিয়ে পরিবারের হেলপিং হ্যান্ড হওয়া উচিত। এেেত্র নিজের ওয়েট বজায় থাকে। নিজের শাশুড়ি, মা কিংবা বাচ্চাদেরও নিজের পছন্দমতো উপহার দেয়া যায়।
আর শুধু ঘরে বসে থাকা নয়, ঘরে বসেও আমরা কমর্ী, প্রেমী এবং ঘরণী, সমাজের অবহেলিত নয়_ মুক্তকণ্ঠ, সাহসী একটি হাত হতে পারি। আলস্নাহ আমাদের সহায় হোন।
অনামিকা সিংহ রায়
নরসিংদি
No comments