বলতে চাই- বাল্য বিবাহ ও যৌতুকের বলি
বাল্য বিবাহেয় ঘটনার সবচেয়ে বেশি তি ও হুমকির শিকার মেয়েরা। কারণ তারা অপরিণত বয়সে মাতৃত্বেরও শিকার হচ্ছে। মাতৃত্ব যে কোন মেয়ের জন্য সবচেয়ে সম্মান ও সুখবর।
তবে ১৫-১৬ বছরের একজন কিশোরীর মা হওয়াটা রীতিমতো বিভীষিকা ছাড়া আর কি বা হতে পারে। কেউ কি জানতে চেয়েছে প্রতিবছর মা হওয়াটা তার কাছে কেমন? কতটা যন্ত্রণা ও হতাশার। তার তো সনত্মান গ্রহণ ও ধারণের স্বাধীনতাটিও নেই। সনত্মান উৎপাদন যন্ত্রে তাকে পরিণত করছে। মেয়েটির কোলে কাধে সনত্মানের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। শৈশবেহ মৃতু্য ঘটছে সম্ভাবনা, সৃজনশীলতার। তার মতটিও জানতে চাওয়া হয় না, হচ্ছে না। শৈশবেরও মৃতু্য ঘটেছে তার। তার কোন নিজস্ব জগত থাকছে না। জীবন পার করছে এভাবেই।যৌতুকের কোন ঘটনা বা উদাহরণ উলেস্নখের প্রয়োজন নেই। সমাজের কোন মৌলিক পরিবর্তন ঘটেনি, মানসিকতারও না। যৌতুক তো এক ধরনের অত্যাচার মানুষকে অসম্মানিত করা। যৌতুকের ঘটনাগুলো অসাম্য নির্দেশ করে। নারী-পুরম্নষের বৈষম্য এতে আরও স্পষ্ট, গভীর ভাবে চিহ্নিত হয়। কখনও কখনও অসম্মানে নিজের মূল্যহীনতায় মেয়েটি আত্মহত্যা পর্যনত্ম করে। মূলত মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত না হওয়াতে টিকে আছে যৌতুক।
বিয়ে ভালবাসার সম্পর্ক। বোঝাপড়ার সম্পর্ক। ভালবাসা, বোঝাপড়া থাকলে যে কোন সম্পর্ক টিকবে নয়, তো না। কিন্তু যৌতুকের কারণে বিয়ে ক্রমাগত একটি বৈষমূ্যমূলক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। বিয়ের মাধ্যমে নারী ও পুরম্নষের সাম্যই নির্দিষ্ট হওয়া উচিত। ভালবাসা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে অন্য কিছু না। গ্রামের যে ছেলেটি যৌতুক নিয়ে বিয়ে করছে তার সঙ্গে শহরের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কপের্ারেট অফিসে বসে থাকা তথাকথিত শিতি এমবিএ করা ছেলেটির খুব বেশি পার্থক্য নেই। নগদ অর্থের শহুরে ছেলেটি নিচ্ছে গাড়ি, এ্যাপার্টমেন্ট বুকিং কিংবা নিদেনপ েফ্যাট সাজিয়ে দেয়ার কথা বলা হচ্ছে। মানুষ হিসেবে এবং মানসিকতার সত্মরবিন্যাসে দুই জনের অবস্থান খুব নিচুতে, অমানবিকতার খাদে। বিয়ে তাদের কাছে উপল সম্পর্কের বেচাকেনা। লেনদেন বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়াই ল্যন বিয়ে তাদের কাছে শেষ পর্যনত্ম বাণিজ্য। মানসিকতার মানচিত্র দু'জনেরই এক ও অভিন্ন।
মানুষের মূল্য আসলে কিসে ? অর্থে, অত্যাচারে, অমানসিকতায়, সাম্প্রদায়িকতায়? নাকি নৈতিকতা ও আর্দশে মানবিকতা ও মহত্বে ?
আমাদের সমাজের দেশের উন্নতি সাধনের জন্য নারীকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে।
_আসকার ইবনে সাইদ অর্নব
ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ
No comments