সেই সহিংসতা রোহিঙ্গাদের এখনো তাড়িয়ে বেড়ায়
সমুদ্রের বালুময় সৈকতে জরাজীর্ণ নৌকার বহর ভিড়িয়ে নিজেদের দুর্দশার কথা শোনান মিয়ানমারের কয়েকজন রোহিঙ্গা মুসলিম উদ্বাস্তু। মিয়ানমারের পশ্চিম উপকূলের একসময়ের শান্ত শহর কিয়াউকফুয়ু কীভাবে বিভীষিকাময় হয়ে উঠল, কীভাবে তাঁরা বিতাড়িত হলেন—সেসব কথা তাঁরা জানান।
রোহিঙ্গারা জানান, এক শান্ত সন্ধ্যায় তাঁদের ওপর হামলা শুরু হয়। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন দলে দলে এসে তাঁদের সবকিছু শেষ করে দেয়। হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল, তাঁদের কিয়াউকফুয়ু থেকে বিতাড়িত করা। সেদিন সেখানে চলে বিক্ষিপ্ত হামলা, সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ আর বিভীষিকাময় হত্যাযজ্ঞ। একসময় পুরো এলাকার ঘরবাড়ি আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তাঁরা কেবল পালিয়ে আসার পথটাই খুঁজে পান।
প্রতিটি নৌকায় ৭০-৮০ জন করে প্রায় চার হাজার মানুষ জীবন হাতে নিয়ে সমুদ্রপথে পালিয়েছেন। পালানোর সময় শুধু তাঁরা দেখতে পেয়েছেন, জন্মলগ্ন থেকে বেড়ে ওঠা শহরটির আকাশ আজ কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আর তীরে দাঁড়িয়ে আছে ক্রোধ-উন্মত্ত রাখাইনেরা, যারা সারা দিন তাঁদের নৌকা লক্ষ্য করে গুলতি মেরেছে।
গত ছয় মাসে পশ্চিম মিয়ানমারে যে দুই দফা সহিংসতা হয়েছিল, ২৪ অক্টোবরের ওই ঘটনা ছিল তারই একটা খণ্ডচিত্র। তবে রাখাইন বৌদ্ধরা সেদিন সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে সহিংসতা চালিয়েছিল, তা ছিল অনেক বেশি ভয়ানক।
মুসলিম রোহিঙ্গারা ওই এলাকায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বসবাস করলেও তাদের দেখা হয় বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে। তাদের বেশির ভাগকেই আজ পর্যন্ত দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
মিয়ানমারের বর্তমান সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন ও বিরোধীদলীয় নেত্রী শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি সহিংস এ ঘটনার নিন্দা জানান। তবে কেউই রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলেননি। সরকারি হিসেবে সহিংসতায় ২০০ জনের প্রাণহানি হয়েছে, যার দুই-তৃতীয়াংশই মুসলিম। আবার গৃহহীন হয়েছে এক লাখ ১৫ হাজার, যার ৯০ ভাগই মুসলিম।
কিয়াউকফুয়ু শহরের ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সেখানে যারা বিতাড়িত হয়েছে, তাদের মধ্যে সংখ্যালঘু কামান মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনও রয়েছে। এই কামান মুসলিমদের নাগরিক অধিকার মিয়ানমারে স্বীকৃত। তারাও বৌদ্ধদের হামলার শিকার হওয়ায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, মিয়ানমারের চার শতাংশ মুসলিম সংখ্যালঘু সহিংসতার শিকার হচ্ছে।
কিয়াউকফুয়ু থেকে পালিয়ে আসেন কামান সম্প্রদায়ের কিইয় থেইন (৪৮)। তিনি বর্তমানে সিন থেট মও গ্রামে উদ্বাস্তু হিসেবে আছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কখনোই ভাবিনি, আমাদের ওপরও এমন ঘটনা ঘটবে। আমরা এখন নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারি না। আমাদের ওপর আবার হামলা হবে না, তা কে বলবে?’
গত মে মাসে রাখাইন রাজ্যে একজন বৌদ্ধ নারী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর এই সহিংসতা শুরু হয়। তিন রোহিঙ্গা যুবক ওই নারীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। তবে এই সহিংসতার কারণ আরও গভীরে। মিয়ানমারের বৌদ্ধদের দাবি, মুসলিমরা বিদেশি; তারা জমি দখল ও ইসলামি ধর্মবিশ্বাস ছড়াতে সেখানে অবস্থান গেড়েছে। মানবাধিকার সংগঠনের মতে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা প্রকাশ্য বর্ণবাদের শিকার হচ্ছে।
বেসরকারি পত্রিকা প্রকাশ করা যাবে: মিয়ানমার আগামী ১ এপ্রিল থেকে দেশে বেসরকারি দৈনিক পত্রিকা ছাপানোর অনুমোদন দেবে। সরকার গত শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে। বিগত এক দশক ধরে বেসরকারি পত্রিকা প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। এপি ও এএফপি।
প্রতিটি নৌকায় ৭০-৮০ জন করে প্রায় চার হাজার মানুষ জীবন হাতে নিয়ে সমুদ্রপথে পালিয়েছেন। পালানোর সময় শুধু তাঁরা দেখতে পেয়েছেন, জন্মলগ্ন থেকে বেড়ে ওঠা শহরটির আকাশ আজ কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন আর তীরে দাঁড়িয়ে আছে ক্রোধ-উন্মত্ত রাখাইনেরা, যারা সারা দিন তাঁদের নৌকা লক্ষ্য করে গুলতি মেরেছে।
গত ছয় মাসে পশ্চিম মিয়ানমারে যে দুই দফা সহিংসতা হয়েছিল, ২৪ অক্টোবরের ওই ঘটনা ছিল তারই একটা খণ্ডচিত্র। তবে রাখাইন বৌদ্ধরা সেদিন সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে সহিংসতা চালিয়েছিল, তা ছিল অনেক বেশি ভয়ানক।
মুসলিম রোহিঙ্গারা ওই এলাকায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বসবাস করলেও তাদের দেখা হয় বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে। তাদের বেশির ভাগকেই আজ পর্যন্ত দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
মিয়ানমারের বর্তমান সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন ও বিরোধীদলীয় নেত্রী শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি সহিংস এ ঘটনার নিন্দা জানান। তবে কেউই রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলেননি। সরকারি হিসেবে সহিংসতায় ২০০ জনের প্রাণহানি হয়েছে, যার দুই-তৃতীয়াংশই মুসলিম। আবার গৃহহীন হয়েছে এক লাখ ১৫ হাজার, যার ৯০ ভাগই মুসলিম।
কিয়াউকফুয়ু শহরের ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সেখানে যারা বিতাড়িত হয়েছে, তাদের মধ্যে সংখ্যালঘু কামান মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনও রয়েছে। এই কামান মুসলিমদের নাগরিক অধিকার মিয়ানমারে স্বীকৃত। তারাও বৌদ্ধদের হামলার শিকার হওয়ায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, মিয়ানমারের চার শতাংশ মুসলিম সংখ্যালঘু সহিংসতার শিকার হচ্ছে।
কিয়াউকফুয়ু থেকে পালিয়ে আসেন কামান সম্প্রদায়ের কিইয় থেইন (৪৮)। তিনি বর্তমানে সিন থেট মও গ্রামে উদ্বাস্তু হিসেবে আছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কখনোই ভাবিনি, আমাদের ওপরও এমন ঘটনা ঘটবে। আমরা এখন নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারি না। আমাদের ওপর আবার হামলা হবে না, তা কে বলবে?’
গত মে মাসে রাখাইন রাজ্যে একজন বৌদ্ধ নারী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর এই সহিংসতা শুরু হয়। তিন রোহিঙ্গা যুবক ওই নারীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। তবে এই সহিংসতার কারণ আরও গভীরে। মিয়ানমারের বৌদ্ধদের দাবি, মুসলিমরা বিদেশি; তারা জমি দখল ও ইসলামি ধর্মবিশ্বাস ছড়াতে সেখানে অবস্থান গেড়েছে। মানবাধিকার সংগঠনের মতে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা প্রকাশ্য বর্ণবাদের শিকার হচ্ছে।
বেসরকারি পত্রিকা প্রকাশ করা যাবে: মিয়ানমার আগামী ১ এপ্রিল থেকে দেশে বেসরকারি দৈনিক পত্রিকা ছাপানোর অনুমোদন দেবে। সরকার গত শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে। বিগত এক দশক ধরে বেসরকারি পত্রিকা প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। এপি ও এএফপি।
No comments