ঢাকা-অটোয়া সম্পর্কে কাঁটা নূর চৌধুরী by মেহেদী হাসান
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরী ইস্যুতে স্থবির হয়ে আছে বাংলাদেশ-কানাডা সম্পর্ক। দেশটিতে অবস্থানরত এই খুনিকে ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার বেশ কয়েকবার অনুরোধ জানালেও অটোয়া সরকার এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। এর প্রভাব পড়েছে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর।
সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে তেমন কোনো সফর বিনিময় হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, কানাডা সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমানে যে সম্পর্ক, তাকে উষ্ণ বলা যাবে না। আর এর পেছনে এককভাবে যে ইস্যুটি দায়ী, তা হলো নূর চৌধুরী।'
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের যে যোগাযোগ রয়েছে তা স্বাভাবিক, বিশেষ নয়। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানানো হলেও কানাডা তাতে কান দেয়নি। নিজস্ব নীতিগত কারণে দেশটি হয়তো তাঁকে ফেরত পাঠাতে পারবেও না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার নূর চৌধুরীকে ফেরত আনার উদ্যোগ নিলে হয়তো কাজ হতো। কারণ ওই ঘাতকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের নোটিশ (এ-১৮৩৬/১-২০০৬) রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর কানাডার হাইকমিশনার হিদার ক্রুডেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মৃত্যুদণ্ডাদেশ থাকায় বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর (অব.) এস এইচ এম বি নূর চৌধুরীকে ফেরত দেবে না তাঁর দেশ। বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে তিনি জানিয়েছেন। এর পরও ঢাকা তার আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছে। এটি তিনি কানাডা সরকারকে জানাবেন। মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারে কানাডা সরকারের নীতি খুব স্পষ্ট। কেউ যদি মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন বলে শঙ্কা থাকে, সে ক্ষেত্রে কানাডা সরকার তাকে ফেরত পাঠায় না।
অটোয়ার এ অবস্থানের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার আগে থেকেই অবগত। খুনি নূর চৌধুরী তাঁকে কানাডা থেকে বহিষ্কার না করতে আবেদন করেছেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, তাঁকে ফেরত পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার বেশ আগেই কানাডায় 'লবিস্ট' নিয়োগ করেছে। এ ছাড়া তিনি দেশে ফিরে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন বলেও কানাডা সরকারকে বাংলাদেশ একাধিকবার আশ্বস্ত করেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিভিন্ন সময়ে দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নূর চৌধুরীর গুলিতেই বঙ্গবন্ধু মারা যান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অন্য খুনিদের মতো নূর চৌধুরীও দেশে অবস্থান করেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরের দিন তিনিসহ অন্য খুনিরা বিশেষ বিমানে ঢাকা থেকে রেঙ্গুন হয়ে ব্যাংকক চলে যান। এরপর পাকিস্তান সরকারের দেওয়া বিশেষ বিমানে তাঁরা লিবিয়া যান।
প্রায় এক বছর পর ১৯৭৬ সালের ৮ জুন নূর চৌধুরীসহ ১২ হত্যাকারীকে বিদেশে বাংলাদেশি বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেয় তৎকালীন সরকার। ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব হিসেবে নিয়োগ পান খুনি নূর চৌধুরী। এরপর তিনি ব্রাজিলে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
আশির দশকের প্রথম দিকে নূর চৌধুরী আলজেরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর বেশ কয়েক বছর তিনি জার্মানিতে অবস্থান করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে নূর চৌধুরী ভ্রমণ ভিসায় কানাডা চলে যান। সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় চান। ১৯৯৬ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত খুনি নূর চৌধুরীর অন্তত পাঁচ দফা আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। সে হিসাবে তাঁকে দেশ থেকে বহিষ্কার করতে পারে কানাডা সরকার। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে তিনি তাঁর আবেদনগুলো পর্যালোচনার জন্য 'প্রি-রিমুভাল অ্যাসেসমেন্ট'-এর আবেদন জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, কানাডা সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমানে যে সম্পর্ক, তাকে উষ্ণ বলা যাবে না। আর এর পেছনে এককভাবে যে ইস্যুটি দায়ী, তা হলো নূর চৌধুরী।'
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের যে যোগাযোগ রয়েছে তা স্বাভাবিক, বিশেষ নয়। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানানো হলেও কানাডা তাতে কান দেয়নি। নিজস্ব নীতিগত কারণে দেশটি হয়তো তাঁকে ফেরত পাঠাতে পারবেও না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার নূর চৌধুরীকে ফেরত আনার উদ্যোগ নিলে হয়তো কাজ হতো। কারণ ওই ঘাতকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের নোটিশ (এ-১৮৩৬/১-২০০৬) রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর কানাডার হাইকমিশনার হিদার ক্রুডেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মৃত্যুদণ্ডাদেশ থাকায় বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর (অব.) এস এইচ এম বি নূর চৌধুরীকে ফেরত দেবে না তাঁর দেশ। বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে তিনি জানিয়েছেন। এর পরও ঢাকা তার আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছে। এটি তিনি কানাডা সরকারকে জানাবেন। মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারে কানাডা সরকারের নীতি খুব স্পষ্ট। কেউ যদি মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন বলে শঙ্কা থাকে, সে ক্ষেত্রে কানাডা সরকার তাকে ফেরত পাঠায় না।
অটোয়ার এ অবস্থানের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার আগে থেকেই অবগত। খুনি নূর চৌধুরী তাঁকে কানাডা থেকে বহিষ্কার না করতে আবেদন করেছেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, তাঁকে ফেরত পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার বেশ আগেই কানাডায় 'লবিস্ট' নিয়োগ করেছে। এ ছাড়া তিনি দেশে ফিরে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন বলেও কানাডা সরকারকে বাংলাদেশ একাধিকবার আশ্বস্ত করেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিভিন্ন সময়ে দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নূর চৌধুরীর গুলিতেই বঙ্গবন্ধু মারা যান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অন্য খুনিদের মতো নূর চৌধুরীও দেশে অবস্থান করেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরের দিন তিনিসহ অন্য খুনিরা বিশেষ বিমানে ঢাকা থেকে রেঙ্গুন হয়ে ব্যাংকক চলে যান। এরপর পাকিস্তান সরকারের দেওয়া বিশেষ বিমানে তাঁরা লিবিয়া যান।
প্রায় এক বছর পর ১৯৭৬ সালের ৮ জুন নূর চৌধুরীসহ ১২ হত্যাকারীকে বিদেশে বাংলাদেশি বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেয় তৎকালীন সরকার। ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব হিসেবে নিয়োগ পান খুনি নূর চৌধুরী। এরপর তিনি ব্রাজিলে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
আশির দশকের প্রথম দিকে নূর চৌধুরী আলজেরিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর বেশ কয়েক বছর তিনি জার্মানিতে অবস্থান করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে নূর চৌধুরী ভ্রমণ ভিসায় কানাডা চলে যান। সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় চান। ১৯৯৬ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত খুনি নূর চৌধুরীর অন্তত পাঁচ দফা আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। সে হিসাবে তাঁকে দেশ থেকে বহিষ্কার করতে পারে কানাডা সরকার। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে তিনি তাঁর আবেদনগুলো পর্যালোচনার জন্য 'প্রি-রিমুভাল অ্যাসেসমেন্ট'-এর আবেদন জানান।
No comments